বিশ্বকাপের ধোনিবাহিনীর পরিচিত দৃশ্য। ছবি: এএফপি।
টিম ধোনির আর একটা দুর্দান্ত পারফরম্যান্স নিশ্চয়ই ভারতীয় ক্রিকেট সমর্থকদের আরও একটা উইকএন্ড রঙিন করে দিয়েছে। ত্রিদেশীয় সিরিজের পরে বিশ্রাম নিয়ে যে টিম ইন্ডিয়া মাঠে ফিরেছে, তাদের একদম অন্য রকম লাগছে। অনেক বেশি ধারালো, তরতাজা আর খিদেয় ভরা। যার ফল দুটো দারুণ শক্তিশালী টিমের বিরুদ্ধে পরপর দুটো অসাধারণ পারফরম্যান্স।
ভারতের বিরুদ্ধে হারের ব্যবধান দক্ষিণ আফ্রিকার জন্য চিন্তার কারণ। ভারতীয়রা শুধু ওদের চেয়ে ভাল ব্যাট আর বলই করেনি, অনেক ভাল ফিল্ডিংও করেছে। ক্রিকেটবিশ্বের অন্যতম সেরা ফিল্ডিং টিমের বিরুদ্ধে যে পারফরম্যান্স যথেষ্ট তাত্পর্যের। ম্যাচের বেশির ভাগ সময়ই দক্ষিণ আফ্রিকানদের ম্যাড়ম্যাড়ে দেখিয়েছে। হয়তো ভারতীয় ব্যাটিং-বোলিংই এই অবস্থার জন্য দায়ী!
ভারতীয়দের জন্য একমাত্র চিন্তা হতে পারে খুব তাড়াতাড়ি ‘পিক’ করে ফেলার সেই বহুচর্চিত সমস্যা। একটা টিমের ভাল শুরু করে পুরো টুর্নামেন্টে ভাল না খেলার কোনও কারণ নেই। অস্ট্রেলিয়াই তো অতীতে সেটা করে দেখিয়েছে। আর জয়ের ছন্দটা ধরে রাখার ক্ষমতা ভারতের আছে।
ওদের যখন খারাপ ফর্ম চলছিল, তখনও শিখর ধবন আর রবিচন্দ্রন অশ্বিনের পাশে ছিলেন ভারতীয় নির্বাচকেরা। আশা করছি তাঁরা তাঁদের প্রাপ্য স্বীকৃতিটা পাচ্ছেন। তা ছাড়া সীমিত ওভারের ক্রিকেটে অধিনায়কত্ব করার যে স্বস্তি আর আত্মবিশ্বাস ধোনি অনুভব করে, সেটা ওর টিমকেও খুব স্পষ্ট ভাবে চাঙ্গা করে রাখে। জানি, টুর্নামেন্টটা সবে শুরু হয়েছে। কিন্তু বড় টিমের বিরুদ্ধে এই দুটো জয়ের বিরাট ব্যবধান ভারতীয়দের আনন্দ দিতে বাধ্য।
ধোনি আর ওর টিমকে যতটা শান্ত আর আত্মবিশ্বাসী দেখিয়েছে, এবি ডে’ভিলিয়ার্সদের ঠিক ততটাই নড়বড়ে। দক্ষিণ আফ্রিকান ইনিংসের রান আউটগুলোর কথা ধরুন। ওরা যে পরিষ্কার একটা চিন্তা আর যথেষ্ট আত্মবিশ্বাস নিয়ে খেলতে নামেনি, ওই রান আউটগুলোই তার প্রমাণ। এখন তো আগের সব বিশ্বকাপের জুজুর কথা বলা শুরু করবেন ভক্ত থেকে বিশেষজ্ঞরা। আর সে জন্যই আমি বলব, এই হারটা পিছনে ফেলে পরের ম্যাচ নিয়ে প্ল্যান করা শুরু করে দিক দক্ষিণ আফ্রিকা। টিম আর সাপোর্ট স্টাফ একটা একটা করে ম্যাচ ধরে এগোক। তার বেশি চিন্তা করার কোনও দরকার নেই।
এবির উপর কিন্তু খুব বেশি চাপ নেই। কারণ ওর ব্যাটিং লাইন আপটা দুর্দান্ত। হাসিম আমলা, ডেভিড মিলার, জেপি দুমিনি, ফাফ দু’প্লেসি সবাই যথেষ্ট অভিজ্ঞ। হ্যাঁ, বিরাট কোহলি আর স্টিভ স্মিথের পাশাপাশি এবি টুর্নামেন্টের অন্যতম মহাতারকা। কিন্তু সেই চাপে ও মূহ্যমান হয়ে পড়ছে বলে মনে হয় না। এবি এতটাই ভাল ক্রিকেটার যে টুর্নামেন্টের কোনও না কোনও সময় ও জ্বলে উঠবেই।
অনেকে আবার মনে করেন যে, মেন্টর আর কোচের বিশাল একটা জটলা দক্ষিণ আফ্রিকানদের জন্য বোঝা হয়ে দাঁড়িয়েছে। এই ব্যাপারটা আমি একেবারেই মানতে পারি না। কিন্তু আধুনিক ক্রিকেটের অনেক টিমই এই নীতি মেনে চলে। বেশির ভাগ দলেরই সাপোর্ট টিম বেশ বড়সড়। যদি দক্ষিণ আফ্রিকা জিতত, তা হলে দেখতেন ওদের বহু-কোচ নীতিরই কী প্রশংসা হত। ওরা হেরেছে বলে এত প্রশ্ন উঠছে। মাইক হাসি আর গ্যারি কার্স্টেনকে সাপোর্ট স্টাফ রাখা মানে দক্ষিণ আফ্রিকা কোনও কিছুই ভাগ্যের উপর ছেড়ে রাখতে চায় না। তাতে তো আমি ভুল কিছু দেখছি না।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy