Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪
সংবাদমাধ্যমকে এড়াতে মাঠ বদল আর্মান্দোর

মরণবাঁচন ম্যাচে অনেক এগিয়ে ইস্টবেঙ্গল

ইস্টবেঙ্গল আর স্পোর্টিং ক্লুব দ্য গোয়ায় কী পার্থক্য? বাংলার টিমে চার বিদেশি, গোয়ার টিমে এক কম! লড়াইটা ডুডু-র‌্যান্টি-বার্তোস-সুসাক বনাম অ্যান্টনি উলফ-কালু ওগবা-কোপে। মেহতাব, খাবরা, অর্ণব, লোবো, জোয়াকিম, শুভাশিসদেশের সেরা ফুটবলারের ছড়াছড়ি ইস্টবেঙ্গলে। স্পোটির্ংয়ের ভারতীয়রাযোশেফ পেরিরা, বিভান ডি’মেলো, জেভিয়ার ডায়াস, বিশ্বজিত্‌ সাহা কেউই তারকা নন। হয় জুনিয়র, নয় অন্য দলের বাতিল। ইস্টবেঙ্গলে কোচ আছেন, স্পোর্টিংয়ে নেই। ম্যানেজার চুকুয়ামা স্টপ-গ্যাপে কাজ চালাচ্ছেন। কলকাতা লিগ জয়ী এবং আইএসএল চ্যাম্পিয়ন আটলেটিকো দে কলকাতায় খেলা ফুটবলারে ভর্তি লাল-হলুদ। আর গোয়ার বেগুনি জার্সিদের অনুশীলন শুরু হয়েছে ফেড কাপ শুরু হওয়ার দিন চারেক আগে।

সেমিফাইনালের প্রার্থনা র‌্যান্টিদের।

সেমিফাইনালের প্রার্থনা র‌্যান্টিদের।

রতন চক্রবর্তী
মারগাও শেষ আপডেট: ০৬ জানুয়ারি ২০১৫ ০১:২৮
Share: Save:

ইস্টবেঙ্গল আর স্পোর্টিং ক্লুব দ্য গোয়ায় কী পার্থক্য?

বাংলার টিমে চার বিদেশি, গোয়ার টিমে এক কম!

লড়াইটা ডুডু-র‌্যান্টি-বার্তোস-সুসাক বনাম অ্যান্টনি উলফ-কালু ওগবা-কোপে।

মেহতাব, খাবরা, অর্ণব, লোবো, জোয়াকিম, শুভাশিসদেশের সেরা ফুটবলারের ছড়াছড়ি ইস্টবেঙ্গলে।

স্পোটির্ংয়ের ভারতীয়রাযোশেফ পেরিরা, বিভান ডি’মেলো, জেভিয়ার ডায়াস, বিশ্বজিত্‌ সাহা কেউই তারকা নন। হয় জুনিয়র, নয় অন্য দলের বাতিল।

ইস্টবেঙ্গলে কোচ আছেন, স্পোর্টিংয়ে নেই। ম্যানেজার চুকুয়ামা স্টপ-গ্যাপে কাজ চালাচ্ছেন।

কলকাতা লিগ জয়ী এবং আইএসএল চ্যাম্পিয়ন আটলেটিকো দে কলকাতায় খেলা ফুটবলারে ভর্তি লাল-হলুদ। আর গোয়ার বেগুনি জার্সিদের অনুশীলন শুরু হয়েছে ফেড কাপ শুরু হওয়ার দিন চারেক আগে।

টিমের শক্তি দাঁড়িপাল্লায় তুললে দু’দলের পার্থক্য হয়তো শতাংশের হিসাবে ৯০-১০!

এ রকম প্রতিপক্ষকে হারালেই সেমিফাইনালের টিকিট পেয়ে যাবে ইস্টবেঙ্গল। গ্রুপের তিন নম্বর ম্যাচটা আর্মান্দো কোলাসোর দল ড্র করার পর মনে হচ্ছিল, আর হল না। কিন্তু তার পর গ্রুপের অন্য দুই ম্যাচের রেজাল্ট সব ওলটপালট করে দিয়েছে। হারতে থাকা স্পোটির্ং ক্লুব হঠাত্‌-ই হারিয়ে দিয়েছে রয়্যাল ওয়াহিংডোকে। আর ডেম্পো হারাল মুম্বই এফসিকে আজই। নিটফল, কাল দুর্বল স্পোর্টিংকে হারালেই ইস্টবেঙ্গলের কেল্লাফতে।

আসলে হারার আগেই যে হেরে বসে আছে স্পোর্টিং। সেটা কেমন? সতেরো বছর টানা দেশের নামী ক্লাবে খেলছেন সন্দীপ নন্দী। গতবার চার্চিলকে ফেড কাপ জিতিয়েছিলেন বর্ধমানের ছেলেটি। কেরল ব্লাস্টার্সের হয়ে আইএসএল খেলে সদ্য সই করেছেন স্পোর্টিংয়ে। “ধুর, ইস্টবেঙ্গলের সঙ্গে পারা যায় না কি? আমাদের টিমের এখনও কম্বিনশেনই তৈরি হয়নি। সব বাচ্চা, অনভিজ্ঞ ছেলে। চার-পাঁচ দিন মাত্র প্র্যাকটিস করেই খেলতে নেমেছে টিম,” বলে দিলেন দেশের অন্যতম অভিজ্ঞ গোলকিপার।

চোটের জন্য সন্দীপ আজ নেই ইস্টবেঙ্গলের বিরুদ্ধে। তবে যাঁর চল্লিশ গজ শটের গোলে চব্বিশ ঘণ্টা আগেই প্রথম জয়ের মুখ দেখেছে স্পোর্টিং, সেই বিশ্বজিত্‌ সাহা বলছিলেন, “আরে আমি লেফট ব্যাক, আমার বাকি ডিফেন্ডারদের নামই সবার জানি না! ইস্টবেঙ্গলের সঙ্গে কোনও তুলনাই করবেন না আমাদের।”


এখনও মুখে হাসি নেই আর্মান্দোর।

প্রতিপক্ষের যখন এ রকম করুণ অবস্থা, তখন হঠাত্‌ এ দিন অনুশীলনের মাঠ কেন পাল্টালেন ইস্টবেঙ্গল কোচ? কেন রবিবার বেশি রাতে ম্যানেজার আ্যলভিটো ডি’কুনহাকে নির্দেশ দিলেন, কোথায় প্র্যাকটিস করতে যাবেন, সংবাদমাধ্যম যেন না জানে? কোনও নতুন স্ট্র্যাটেজি তৈরি করবেন বলেই কি লাল হলুদের গোয়ান কোচের গোপন অনুশীলন?

রবিবার রাতে সাংবাদিকদের বলে দেওয়া হয়েছিল, রায়া মাঠে অন্য দিনের মতোই ইস্টবেঙ্গলের অনুশীলন হবে সকাল ন’টা থেকে। কিন্তু সাড়ে আটটায় সেখানে গিয়ে দেখা যায় গোয়ার সন্তোষ ট্রফি দলের অনুশীলন চলছে। মাঠকর্মীরা অপেক্ষায় ইস্টবেঙ্গলের জন্য। ফোন করা হয় অ্যালভিটোকে। তিনি বললেন, “কোথায় আমরা অনুশীলন করব সেটা বলা যাবে না। কোচ চান না তাঁর প্র্যাকটিসে মিডিয়া আসুক। উনি বলেছেন, মিডিয়া যখন আমার এত সমালোচনা করছে, আমিও ওদের আমার প্র্যাকটিস দেখাতে চাই না।। নতুন প্র্যাকটিস মাঠটা জানি শুধু আমি আর কোচ। প্লিজ, মাঠের নামটা জানতে চাইবেন না।”

পরে খোঁজ নিয়ে জানা গেল, রায়া মাঠের একেবারে উল্টো দিকে চার কিলোমিটার দূরের নাভেলিমের রোজারিও স্কুল মাঠে অনুশীলন করতে নামছেন ডুডু-মেহতাবরা। সাংবাদিকরা সেখানে পৌঁছনোর পর আর্মান্দো অবশ্য গতকালের মতো অভব্যতা করেননি। উল্টে ঘণ্টাদেড়েক অনুশীলনের পরেও টিম নিয়ে কথা বলেন সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে। “আমাদের ডু আর ডাই ম্যাচ। জিততেই হবে। আমরা ভাল খেলতে পারছি না। তবে কাল ছেলেদের উপর আস্থা রাখছি। আমার ধারণা ওরা জিতে ফিরবে,” বলার সময় ইস্টবেঙ্গল কোচের মুখে আগের মতো হাসি নেই। বরং মুখাবয়ব দেখে মনে হচ্ছিল যথেষ্ট চাপে।

স্পের্টিং শক্তিশালী নয়? তা হলে কীসের চাপ? “ওরা আনপ্রেডিক্টেবল দল। তবে ওদের ডিফেন্সে ফাঁকফোকর আছে। সেটা কাজে লাগাতে আমার দুই স্ট্রাইকারকে শুরুতেই চাপ দিতে বলেছি ওদের ডিফেন্সে। শুরুতেই গোল তুলে নিতে হবে। গোড়ায় গোল না করাতেই যত সমস্যা হচ্ছে আমাদের,” বলছেন আর্মান্দো। ক্লাব কর্তাদের মনোভাব বা নিজের বোধদয়যে কোনও কারণেই হোক না কেন, আগের মতো উত্তেজিত হননি কোনও প্রশ্নেই। ফুটবলারদের কথা বলার উপরও নিষেধাজ্ঞা জারি করেননি।

র‌্যান্টি কেন গোল পাচ্ছে না জানতে চাইলে কোচ বললেন, “আইএসএল থেকেই এটা চলছে। ওকে খেলিয়ে খেলিয়ে গোলে ফিরিয়ে আনতে হবে।” র‌্যাান্টি নিজে অবশ্য বলছেন, “স্ট্রাইকারদের এ রকম মাঝেমধ্যে হয়ই। কালই হয়তো গোল করব।”

এক কট্টর ইস্টবেঙ্গল সমর্থক ইতিমধ্যেই বলে রেখেছেন, আর্মান্দোর দল শেষ চারে গেলে পঞ্চাশ হাজার টাকা দেবেন। টাকাটা মারগাওয়ের টিম হোটেলেও পাঠিয়ে দিতে পারেন তিনি। কারণ, আর্মান্দো ব্রিগেড যদি শেষ চারে না যায় তবে সেটা অঘটনই হবে!

ছবি: উত্‌পল সরকার

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE