Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

‘এত দিনে বুঝলাম জাভেদ ভাইয়ের চাপটা কী ছিল’

জাভেদ মিয়াঁদাদের মারা সেই ঐতিহাসিক ছক্কা যখন পাকিস্তানকে ম্যাচ জেতাচ্ছে, তখন তাঁর বয়স ছিল ছয়। ঘটনার কথা শুনে এসেছেন এত দিন। আর প্রায় সে রকমই একটা কাণ্ড কোনও দিন তিনি করতে পারবেন, তা কখনও ভাবেননি শাহিদ আফ্রিদি। কিন্তু রবিবারে মিরপুর-কাণ্ডের পর থেকে সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং সাইটে আফ্রিদিকে বলা হচ্ছে ‘ডাবল মিয়াঁদাদ’।

নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ০৩ মার্চ ২০১৪ ০৯:১১
Share: Save:

জাভেদ মিয়াঁদাদের মারা সেই ঐতিহাসিক ছক্কা যখন পাকিস্তানকে ম্যাচ জেতাচ্ছে, তখন তাঁর বয়স ছিল ছয়। ঘটনার কথা শুনে এসেছেন এত দিন। আর প্রায় সে রকমই একটা কাণ্ড কোনও দিন তিনি করতে পারবেন, তা কখনও ভাবেননি শাহিদ আফ্রিদি।

কিন্তু রবিবারে মিরপুর-কাণ্ডের পর থেকে সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং সাইটে আফ্রিদিকে বলা হচ্ছে ‘ডাবল মিয়াঁদাদ’। কারণ শেষ ওভারে একটা নয়, দু’টো ছক্কা মেরে যে ভারতের এশিয়া জয়ের স্বপ্নের ছুটি করে দিলেন তিনি।

মিয়াঁদাদের শেষ বলে ছয় মারার সঙ্গে তাঁর এই কীর্তির তুলনা করা হচ্ছে শুনে আফ্রিদির বক্তব্য, “জাভেদ মিয়াঁদাদের মতো ব্যাটসম্যানের সঙ্গে আমার তুলনা হলে তা আমার পক্ষেই সম্মানজনক। সেই ছয়ের কথা আমি বরাবর শুনে এসেছি। আজ তেমন অবস্থায় পড়ে বুঝলাম, সে দিন কী চাপ সহ্য করে ম্যাচ জেতাতে হয়েছিল জাভেদ ভাইকে।”

ইদানীং ফর্মে না থাকা আফ্রিদি এমন অভাবনীয় কাণ্ড ঘটানোর পর টিভি ক্যামেরার সামনে এসে বলেন, “ভীষণ চাপে ছিলাম। ভাল খেলছিলাম না। কয়েকটা খারাপ শটও মেরেছি। প্রত্যাশা তুঙ্গে পৌঁছেছিল। আমাদের কাছে এই ম্যাচটা যে কী, তা সারা দুনিয়া জানে। খুব খুশি যে শেষ পর্যন্ত দলকে জেতাতে পেরেছি। ক্যাপ্টেন আমাকে বলেই দিয়েছিল, ‘তুমি সময় নিয়ে খেলো’। সেটাই করেছি। আর উমর গুলের সাহায্য ভোলা যাবে না। ও-ও দারুণ ব্যাট করেছে।”

গুলের সঙ্গে তাঁর পার্টনারশিপ নিয়ে বলতে গিয়ে আফ্রিদি বলেন, “ও প্রচুর কথা বলছিল। যেমন সিঙ্গলস দরকার ছিল, তেমন বড় হিটও দরকার ছিল আমাদের।” চ্যাম্পিয়ন হওয়ার উদ্দেশ্য নিয়েই যে বাংলাদেশে এসেছেন, তা স্পষ্ট করে দিয়ে আফ্রিদির হুঙ্কার, “এখানে টুর্নামেন্ট জিততেই এসেছি আমরা। আমাদের দেশের ক্রিকেট ও দলের জন্য এই সাফল্য খুব দরকার। বাংলাদেশের মানুষকে ধন্যবাদ, আমাদের হয়ে গলা ফাটানোর জন্য।”

পরে স্টার স্পোর্টস-এর এক অনুষ্ঠানে এসে ওয়াসিম আক্রমকে ম্যাচের নায়ক বলেন, “ভাল ক্রিকেট খেলতে চাই আমরা। হার-জিতটা আমাদের কাছে বড় কথা নয়। লড়াই করাটাই বেশি জরুরি। তুমুল লড়াই করে জেতাটা সবচেয়ে বড় ব্যাপার।” স্টুডিওয় তখন ছিলেন রাহুল দ্রাবিড়। তাঁর এক প্রশ্নের জবাবে আফ্রিদি বলেন, “আমার টিমের কাছে আমার ব্যাটিং সব সময়ই খুব গুরুত্বপূর্ণ। আর সেই আমিই এত দিন বাজে শট খেলতে গিয়ে আউট হচ্ছিলাম। ব্যাপারটা নিয়ে আমি অনেক ভেবেছি। আমাকে যে আরও ধারাবাহিক হতে হবে, সেটাই মনের মধ্যে ছিল সব সময়। মাথা ঠান্ডা রেখে, হিসেব করে ব্যাট করার দরকার ছিল। ফর্মে ফিরতে পেরেছি যখন, এ বার থেকে এ রকমই ব্যাট করতে হবে।”

বিরাট কোহলি অশ্বিন ডেথে বল করার ব্যাপারে আত্মবিশ্বাসী ছিল বলেই ওকে শেষ ওভারে বল দিই। এতে ভালও হতে পারত। তবে আমাদের আরও ২০-৩০ রান বেশি হাতে থাকলে ভাল হত। আমরা গত দুটো ম্যাচে যথেষ্ট লড়াই করেছি। তরুণ বোলাররাও ভাল বল করেছে।

ইমরান খান ওয়েল ডান টিম পাকিস্তান। কী উত্তেজনাপূর্ণ একটা ম্যাচ দেখলাম। আর আফ্রিদি যা করল, তা একমাত্র ওর পক্ষেই সম্ভব।

মিসবা উল হক চাপের মুখে আমরা খুব ভাল খেলেছি। চেজার হিসেবে খুব একটা সুনাম নেই, জানতাম। কিন্তু হাফিজ, মাকসুদ, আফ্রিদিরা দারুণ ব্যাট করে সেই বদনাম ঘুচিয়ে দিল। আমি আউট হলে যদি দল জেতে তা হলে বারবার আউট হতে রাজি। এখনই ফাইনাল নিয়ে ভাবছি না। ম্যাচ ধরে ধরে এগোতে চাই।

মহম্মদ হাফিজ আমাকে তিন নম্বরে নেমে যে কাজ দেওয়া হয়েছিল, তা করতে পারায় খুশি। আস্কিং রেট এমন কিছু বেশি ছিল না বলে চাপমুক্ত হয়ে ব্যাট করি। শাহিদভাই দারুণ শেষ করেছে। এই জয় পাকিস্তানের মানুষের জন্য।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

asia cup 2014
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE