অধিনায়ক ব্যর্থ। দলও।
শত্রুকে খাটো করে দেখাটা যে কত বড় ভুল, তা মহেন্দ্র সিংহ ধোনিদের চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিল ডোয়েন ব্র্যাভোরা। ওয়ান ডে সিরিজের প্রথম ম্যাচেই ১২৪ রানে হেরে ভারত বুঝে নিল ক্যারিবিয়ানদের এই সিরিজে আর কোনও ভাবে কম গুরুত্ব দেওয়া যাবে না। ভারত অধিনায়ক যে আগের দিন বলেছিল, বিশ্বকাপ নিয়ে নানা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করবে এই সিরিজে, পরের ম্যাচ থেকে সেই পরিকল্পনা বোধহয় শিকেয় তুলতে হবে। এখন লক্ষ্য জয়ে ফেরা।
ইংল্যান্ডের মাঠে ওয়ান ডে সিরিজে অত ভাল পারফরম্যান্সের পর ঘরের মাঠে এসে এ ভাবে মুখ থুবড়ে পড়াটা অভাবনীয়। খেলা দেখে মনে হল, বিশ্বকাপের আগে ভারতের এখনও অনেকটা রাস্তা পেরোনো বাকি। ওয়েস্ট ইন্ডিজের সামনেই যদি এই হাল হয়, তা হলে অস্ট্রেলিয়ায় গিয়ে কী হবে!
কোচির পাটা উইকেটে, যেখানে ব্যাটসম্যানদের জন্য ঝুরি ঝুরি রান, সেখানেও আমাদের ব্যাটসম্যানরা কিছু করতে পারল না। এটা যেমন অবাক করার মতো ঘটনা, তেমন ক্যারিবিয়ানদের অত রান তুলতে দেওয়াটাও কম বিস্ময়কর নয়। শেষ ১০ ওভারে ক্যারিবিয়ান ব্যাটসম্যানরা প্রায় ৮-৯-এর গড়ে রান তুলেছে। একদিকে স্পিনারদের অতান্ত হতাশাজনক পারফরম্যান্স। অন্যদিকে ব্যাটিংয়ের শুরু থেকেই নিয়মিত হোঁচট খেতে শুরু করা ভরাডুবির কারণ।
আসলে লড়াইটা যতটা সহজ হবে বলে ভেবেছিল ভারতীয়রা, মোটেই ততটা সহজ নয় বুঝতে পেরে খেই হারিয়ে ফেলল। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বোলাররা যে দারুন বোলিং করেছে, তা বলতে পারছি না। কিন্তু ব্যাটিংটা যে সত্যিই ভাল করেছে, এটা অস্বীকার করার উপায়ই নেই। বিশেষ করে স্যামুয়েলস ও রামদিনের ১৬৫-র পার্টনারশিপটা। ওই একটা পার্টনারশিপই তফাত্ গড়ে দিল। ভারতীয় ব্যাটিংয়ে ও রকম একটা পার্টনারশিপ হলে এ রকম আত্মসমর্পণ করতে হত না।
ওয়েস্ট ইন্ডিজের একটা বড় প্লাস পয়েন্ট, বেশ কয়েক জন অলরাউন্ডার টিমে আছে। যেমন, ডোয়েন ব্র্যাভো, কায়রন পোলার্ড, ডারেন স্যামি, মার্লন স্যামুয়েলস। অলরাউন্ডার থাকা মানেই আপনার দলের ভারসাম্যটা অনেক ভাল হয়ে গেল। ভারতের এই সুবিধাটা নেই।
টার্গেট যখন ৩২২, তখন লড়াইটা কঠিন বইকী। সে জন্য কোহলি, রায়না, রাহানেদের উইকেটে দাঁড়াতে হত। দেখলাম কোহলির ইংল্যান্ড সফরের রোগটা এখনও সারেনি। অফ স্টাম্পের বাইরে সেই একই ভুল করে যখন ও আউট হয়ে ফিরে গেল, তখন বুঝলাম আজ ভারতের দিন নয়। পরের ম্যাচে দলে বদল? মনে হয় না। আমি ধোনি বা শাস্ত্রীর জায়গায় থাকলে অন্তত তা করতাম না। বদল যেখানে দরকার, তা হল স্পিনারদের পারফর্ম্যান্সে ও ব্যাটসম্যানদের মানসিকতায়। আর ওয়েস্ট ইন্ডিজকে প্রাপ্য গুরুত্ব দেওয়ায়। ক্যারিবিয়ন শিবির আবার অবাঞ্ছিত অক্রিকেটিয় সমস্যার প্রভাবে আগের দিন প্র্যাকটিসেই নামেনি। তাতে ওদের আরওই বিধ্বস্ত মনে হওয়াই স্বাভাবিক ছিল। কিন্তু দেখা গেল ঠিক উল্টোটাই হয়েছে। এই ‘ওয়েক আপ কল’ পেয়ে পরের ম্যাচ থেকে সম্ভবত ধোনিদের এই ভুল ভাঙবে। স্পিনারদের আরও ধারালো হওয়া দরকার। বিশেষ করে পাওয়ার প্লে-তে। জাডেজা-মিশ্ররা সারাক্ষণ নির্বিষ বোলিং করে গেল। তার উপর ৩০টা অতিরিক্ত রান দিল ভারতীয় বোলাররা। যার মধ্যে ১৭টা ওয়াইড। এ বোলিং নিজেদের মাঠে! মানা যাচ্ছে না।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
ওয়েস্ট ইন্ডিজ ৩২১-৬ (স্যামুয়েলস ১২৬ ন.আ, রামদিন ৬১, শামি ৪-৬৬)
ভারত ১৯৭ (ধবন ৬৮, স্যামুয়েলস ২-১০, ডোয়েন ব্রাভো ২-২৮)।
ছবি: পিটিআই
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy