Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪

সুয়ারেজকে নিয়ে শুরু ইংল্যান্ড-উরুগুয়ে যুদ্ধ

যাঁর গোল ছিটকে দিয়েছিল ইংল্যান্ডকে, তাঁকে নিয়েই দু’দেশের লড়াই এ বার এক অন্য মাত্রা নিল। মঙ্গলবার ইতালির বিশ্বকাপ বিদায়ের থেকেও ম্যাচের স্মরণীয় মুহূর্ত হয়ে থাকল চিয়েলিনির ঘাড়ে সুয়ারেজের দাঁতের ছাপ। যার পরেই তোলপাড় ফুটবল থেকে সংবাদমাধ্যম। দিন কয়েক আগেই ইংল্যান্ডকে মাঠের লড়াইয়ে হারিয়েছিল উরুগুয়ে। চব্বিশ ঘণ্টার মধ্যে আবার মাঠের বাইরেও দুই দেশের মধ্যে লেগে গেল বিশ্বযুদ্ধ। তর্কের বিষয়-লুই সুয়ারেজের ভবিষ্যত্‌।

নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ২৬ জুন ২০১৪ ০৩:১৭
Share: Save:

যাঁর গোল ছিটকে দিয়েছিল ইংল্যান্ডকে, তাঁকে নিয়েই দু’দেশের লড়াই এ বার এক অন্য মাত্রা নিল।

মঙ্গলবার ইতালির বিশ্বকাপ বিদায়ের থেকেও ম্যাচের স্মরণীয় মুহূর্ত হয়ে থাকল চিয়েলিনির ঘাড়ে সুয়ারেজের দাঁতের ছাপ। যার পরেই তোলপাড় ফুটবল থেকে সংবাদমাধ্যম। দিন কয়েক আগেই ইংল্যান্ডকে মাঠের লড়াইয়ে হারিয়েছিল উরুগুয়ে। চব্বিশ ঘণ্টার মধ্যে আবার মাঠের বাইরেও দুই দেশের মধ্যে লেগে গেল বিশ্বযুদ্ধ। তর্কের বিষয়-লুই সুয়ারেজের ভবিষ্যত্‌। এক দিকে ইংরেজদের মতে ‘এল পিস্তলেরোকে’ অনেক দিনের জন্য নির্বাসিত করা উচিত। পাশাপাশি আবার ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের অভিযোগ আনল উরুগুয়ে। যাঁদের মতে ফুটবলারের বিরুদ্ধে বদলা নেওয়ার খেলায় নেমেছে ইংলিশ প্রচারমাধ্যম।

রুনিদের বিরুদ্ধে ২ গোল করে সুয়ারেজ বলেছিলেন, “আমাকেই বাজে কথা বলেও সেরা ফুটবলার নির্বাচিত করল। আজ দেখিয়ে দিলাম কী করতে পারি।” ভাগ্যের পাল্টা খেলায় এ বার শিকার সুয়ারেজ ও শিকারি ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম।

সাংবাদিক সম্মেলন থেকেই ‘এল পিস্তলেরোর’ বিরুদ্ধে সরব ইংরেজরা। প্রায় চার-পাঁচ বার উরুগুয়ে কোচ অস্কার তাবারেজের দিকে ধেয়ে আসে একটাই প্রশ্ন- “সুয়ারেজের কামড়ের জন্য কি আর কোনওদিন জাতীয় জার্সি পরতে পারবেন মহাতারকা?” প্রায় প্রতিটা দৈনিক জুড়েই কোথাও উরুগুয়ের স্ট্রাইকার নরখাদক। কোথাও আবার লেখা হয়েছে, ২০১০-এ বাক্কাল ও ২০১৩-এ চেলসির ব্র্যানিস্লাভ ইভানোভিচের পরে কামড়ানোর হ্যাটট্রিক করলেন সুয়ারেজ। এমনকী ব্রিটিশদের অভিযোগের ভিত্তিতে এক বছর আগে কনফেডারেশনস কাপেই চিয়েলিনিকে কামড়াতে গিয়েছিলেন সুয়ারেজ। সেই অসফল কাজটাই শেষ করলেন এক বছর পরে।

পাল্টা আবার ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে জোচ্চুরির অভিযোগ আনল উরুগুয়ের এক টিভি চ্যানেল। যাঁদের মতে, রিপ্লে থেকে বোঝা যাচ্ছে না আদৌ সুয়ারেজ কামড়েছেন কি না চিয়েলিনিকে। যেখানে ইতালির এত মাথাব্যথা নেই, ইংল্যান্ড এত খেপে আছে কেন? চ্যানেলের এক কর্তা বলেন, “এটা ব্রিটিশ মিডিয়ার ষড়যন্ত্র। ওদের ছিটকে দিয়েছিল সুয়ারেজ। এই কারণে ওরা এ বার চায় আমাদের লুইসিতো বিশ্বকাপে না খেলতে পারে।” সঙ্গে তিনি যোগ করেন, “ইংরেজরা নিজেরাই জোচ্চুরি করতে ওস্তাদ। সবার মনে আছে ১৯৬৬ সালে বিশ্বকাপ কী করে জিতেছিল ইংল্যান্ড। ওরা সাহস পায় কী করে ইংল্যান্ডের দিকে আঙুল তুলতে।”

ঘটনার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই নিজেকে নির্দোষ দাবি করেছিলেন সুয়ারেজ। বলেন, “পেনাল্টি বক্সে এ রকম ঘটনা হতেই থাকে। চিয়েলিনি ঘাড় দিয়ে আমার বুকে মারে। আমার চোখেও চোট লাগে।” কিন্তু ঘটনাটা যদি তাই হয় তবে ধাক্কা লাগার পর সুয়ারেজ দাঁত ধরে বসেছিলেন কেন? এই প্রশ্ন তুলে ইংল্যান্ডের প্রাক্তন ফুটবলার গ্যারি লিনেকার টুইট করেন, “চোখেই যদি লেগে থাকে, তা হলে সুয়ারেজ দাঁত ধরে বসেছিল কেন?” ম্যাঞ্চেস্টার ইউনাইটেডের প্রাক্তন ফুটবলার পল স্কোলস আবার বলেন, “সুয়ারেজ এত ভাল ফুটবলার। কিন্তু ওকে সবাই ফুটবলের থেকেও বেশি মনে রাখবে কামড়ানোর জন্য। জানি না সারা জীবন ওকে নির্বাসিত করলেও উপযুক্ত শাস্তি হবে কি না।” প্রাক্তন ম্যান ইউ ডিফেন্ডার রিও ফের্দিনান্দ আবার বলছেন, “কয়েক দিন আগেই ও হিরো ছিল আর এখন......।”

সারা বিশ্ব যখন তাঁর বিরুদ্ধে, এল পিস্তলেরো পাশে পেলেন দলের কোচ অস্কার তাবারেজকে। উরুগুয়ে কোচ বলেন, তাঁর দলের তারকার ভাবমূর্তি আরও খারাপ করছে সংবাদমাধ্যম। “যা হয়েছে তার থেকে বেশি বড় করে দেখানো হচ্ছে। যদি ঘটনাটা সত্যিই ঘটত, কা হলে রেফারির চোখে পড়তই। সবাই যখন ওকে এ ভাবে আক্রমণ করছে, তখন আমার দায়িত্ব ওর পাশে থাকা। সুয়ারেজ দলের এক অপরিহার্য অঙ্গ।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE