আবেগ ঢাকতে পারলেন না নতুন বোর্ড প্রেসিডেন্ট। ছবি: উৎপল সরকার
ন’বছর আগের জগমোহন ডালমিয়া আর সোমবার রাতের তিনি। সে দিন এমনই এক বোর্ড মিটিং সেরে শহরে ফিরেছিলেন একরাশ গ্লানি ও অসম্মান নিয়ে, সেই ভদ্রলোকই ন’বছর বাদে সেই বিমানবন্দরে ফিরলেন একরাশ জয়ধ্বনি ও উৎসবের মাঝে।
বিমানবন্দরের এই উৎসবমুখর ছবি দেখে বোধহয় সে দিনের কথাই মনে পড়ে গেল তাঁর। সে কথা বলতে বলতে চোখের জলও ধরে রাখতে পারলেন না। যখন বলছিলেন, “সে দিনের আর এ দিনের তফাৎটা শুধুই একটা মুহূর্তের। এদের (সিএবি কর্তাদের) এত ভালবাসা, এত আবেগ আমাকে নিয়ে, কী বলব। এদের জন্যই তো আমি এই লড়াইটা করতে পারলাম,” তখন তাঁর গলায় কান্না ভেজা আবেগ। নিজেকে কিছুটা সামলে নিয়ে বলেই ফেললেন, “এদের ভালবাসা দেখে আর চোখের জল ধরে রাখতে পারছি না।”
দমদম বিমানবন্দর থেকে তিনি বেরোতেই সিএবি-র আধা, মেজো, ছোট কর্তারা মালা ও ফুল নিয়ে ‘লং লিভ ডালমিয়া, জগুদা জিন্দাবাদ’ স্লোগান দিতে দিতে যখন প্রায় ঝাঁপিয়ে পড়লেন ফের বোর্ড প্রেসিডেন্ট হয়ে আসা পঁচাত্তরের বোর্ডপ্রধানের উপর, তাতে ‘কে আগে প্রাণ, করিবেক দান’-এর ছবিটাই স্পষ্ট। হইচই আর একটু বাড়তে দিলেই হয়তো পদপিষ্ঠ হয়ে পড়তেন। হাজির ছিল ফুল-মালা নিয়ে আসা এক অনাথ আশ্রমের শিশুরা।
গত তিন দিনের প্রচণ্ড মানসিক চাপে দৃশ্যতই বিধ্বস্ত ডালমিয়া এই হইচইয়ের মধ্যেই বললেন, “আমাকে কেউ শ্রীনিবাসনের লোক, কেউ পওয়ারের লোক বলছেন! আমি ক্রিকেটের লোক। ক্রিকেটকে ভালবেসে ক্রিকেটের জন্যই কাজ করতে এসেছি। খেলাটার ভাল করতে পারলেই আমি খুশি।” এমন প্রশ্নও উঠেছে যে, নবনিযুক্ত বোর্ড সচিব অনুরাগ ঠাকুরের সঙ্গে তাঁর কাজ করতে অসুবিধা হতে পারে। কারণ, তিনি শরদ পওয়ার শিবিরের লোক। নিজের শহরে ফিরে এই অভিযোগও নস্যাৎ করে দিয়ে ডালমিয়া বলেন, “আমার তা মনে হয় না। দেখা যাক, কাজ শুরু করলে মনে হয় সব ঠিক হয়ে যাবে। সবাই তো ক্রিকেটের জন্যই কাজ করব আমরা।”
এমন একটা সময় ভারতীয় ক্রিকেট প্রশাসনের সর্বোচ্চ আসনে বসলেন তিনি, যখন দেশের ক্রিকেটের স্বচ্ছতা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। ভাবমূর্তি পরিচ্ছন্ন করার ভাবনা চিন্তা শুরু করে দিলেও, তা নিয়ে এখনই মুখ খুলতে চান না নতুন বোর্ড প্রেসিডেন্ট। বললেন, “দেখা যাক কী করতে পারি। সবে তো দায়িত্ব নিলাম। আপনারা বড্ড তাড়াতাড়ি সব কিছু ভেবে নেন। আমাকে একটু সময় দিন, প্লিজ।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy