Advertisement
১৮ এপ্রিল ২০২৪
ভেসে উঠল ডালমিয়ার নাম

মোদীকে বোঝালেন পওয়ার, কোনও ভাবেই সমর্থন নয় শ্রীনিবাসনকে

ভারতীয় বোর্ড প্রেসিডেন্টের সিংহাসনকে ঘিরে প্রতিদ্বন্দ্বিতা এত দিন দুই মহারথীর মধ্যে ছিল। নারায়ণস্বামী শ্রীনিবাসন এবং শরদ পওয়ার। বুধবারের পর দু’জনের কেউ আর যুদ্ধে নেই। বরং মহনাটকীয় ভাবে বোর্ড প্রেসিডেন্ট পদে আচমকা ভেসে উঠল তৃতীয় মহারথীর নাম।

পওয়ার-শ্রীনিবাসন। বোর্ড প্রেসিডেন্টের দৌড়ে নেই কেউই।

পওয়ার-শ্রীনিবাসন। বোর্ড প্রেসিডেন্টের দৌড়ে নেই কেউই।

জয়ন্ত ঘোষাল
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ ০৩:৩৩
Share: Save:

ভারতীয় বোর্ড প্রেসিডেন্টের সিংহাসনকে ঘিরে প্রতিদ্বন্দ্বিতা এত দিন দুই মহারথীর মধ্যে ছিল। নারায়ণস্বামী শ্রীনিবাসন এবং শরদ পওয়ার। বুধবারের পর দু’জনের কেউ আর যুদ্ধে নেই। বরং মহনাটকীয় ভাবে বোর্ড প্রেসিডেন্ট পদে আচমকা ভেসে উঠল তৃতীয় মহারথীর নাম।

সিএবি প্রেসিডেন্ট জগমোহন ডালমিয়ার নাম।

কী ভাবে?

এ দিন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে দেখা করেন এনসিপি সুপ্রিমো শরদ পওয়ার। যিনি আবার ব্যক্তিগত পর্যায়ে প্রধানমন্ত্রীর বন্ধু। সূত্রের খবর, বৈঠকে প্রধানমন্ত্রীকে পওয়ার বলে দেন যে, তিনি বোর্ড প্রেসিডেন্ট পদে লড়তে আগ্রহী নন। কিন্তু সুপ্রিম কোর্টের রায়ের পরেও শ্রীনি যুদ্ধের ময়দান ছেড়ে বেরনোর কোনও ইঙ্গিত দিচ্ছেন না। শ্রীনির নিজের দাঁড়ানোর উপায় না থাকলেও চাইছেন, নিজের লবি থেকে কাউকে ‘শিখণ্ডি’ দাঁড় করাতে। যে নামটা বোর্ড সচিব সঞ্জয় পটেলের। যাতে আদালত থেকে ভবিষ্যতে ‘ক্লিনচিট’ পেয়ে গেলে বোর্ড মসনদে শ্রীনির ফের প্রত্যাবর্তন ঘটাতে কোনও অসুবিধে না হয়। প্রধানমন্ত্রীর কাছে পওয়ার আবেদন করেন, ব্যাপারটা আটকাতে। আরও বলা হয়, শ্রীনির সঙ্গে কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলির সম্পর্ক নিয়ে নানা রকম গুজব ছড়াচ্ছে। শ্রীনি নাকি ধরেই নিচ্ছেন এত দিন যখন জেটলি তাঁর দিকে ছিলেন, এ বার তাঁর ‘শিখণ্ডির’ প্রস্তাবেও জেটলির সমর্থন পাওয়া যাবে। মঙ্গলবার রাতে খবর ছড়িয়েছিল যে, জেটলির থেকে প্যানেল অনুমোদন করাতে নয়াদিল্লি যাচ্ছেন শ্রীনি। বুধবার বৈঠক। কিন্তু এ দিন কারও সঙ্গেই দেখা করেননি জেটলি। জানা গেল, তাঁকে উচ্চ প্রশাসনিক মহল থেকে বলে দেওয়া হয়েছে পরশু বাজেট। তাই এখন ক্রিকেট রাজনীতির মধ্যে আর না ঢুকতে।

তবে কারও সঙ্গে দেখা না করলেও জেটলি যে শ্রীনির ‘শিখণ্ডি’ তত্ত্বে সমর্থন দেবেন না, সেই ইঙ্গিত পাওয়া গেল। ঘনিষ্ঠমহলে জেটলি এ দিন সঞ্জয় পটেল নিয়ে মোটেও সায় দেননি। বরং প্রবল ভাবে উঠে এসেছেন জগমোহন ডালমিয়া।

এমনিতেই বোর্ড নির্বাচনে এ বার পূর্বাঞ্চলের টার্ম। আর জেটলি-ডালমিয়া সম্পর্কও যথেষ্ট ভাল। ঘনিষ্ঠমহলে জেটলি নাকি বুধবার বলে দেন যে, ডালমিয়ার প্রতি তাঁর সমর্থন সব সময় থাকবে। কারণ সিএবি প্রেসিডেন্ট ২৪ X ৭ ক্রিকেটটা করেন। ক্রিকেটটা বোঝেন। এবং ক্রিকেট রাজনীতির খুব স্বচ্ছ এক চরিত্র। খুব স্বাভাবিক ভাবেই নামটা তাই ডালমিয়া হওয়া উচিত। কিন্তু তার পরেও ডালমিয়াই চূড়ান্ত প্রেসিডেন্ট প্রার্থী কি না, নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না। কারণ ঘনিষ্ঠমহলে জেটলি যেমন ডালমিয়ার প্রশংসা করেছেন, তেমনই আবার দুশ্চিন্তা দেখিয়েছেন সিএবি প্রেসিডেন্টের বর্তমান স্বাস্থ্য নিয়ে। বরং তাঁর একটা ফর্মুলা হল ডালমিয়াকে বোর্ডে মেন্টর হিসেবে রাখা। আর রাজীব শুক্লকে প্রেসিডেন্ট করে দেওয়া। কিন্তু বোর্ডের বাকি সদস্যরা কতটা সায় দেবেন এই ফর্মুলায়, তা নিয়ে একটা প্রশ্ন থেকে যাচ্ছে। রাজীব গোটা দিন রাজনৈতিক কাজকর্মে না ঢুকে জেটলির সঙ্গে কাটালেন। যদিও তিনি ঘনিষ্ঠমহলে শুনিয়ে রেখেছেন, এত নিশ্চিত করে এখনই কী ভাবে সব ধরে নেওয়া হচ্ছে। তাঁর ও ডালমিয়ার বাইরে যে আচমকা তৃতীয় কেউ উঠে আসবে না, তার গ্যারান্টি কোথায়? এমনও নাকি কাউকে দেখা যেতে পারে, যে কি না এত দিন আলোচনাতেই ছিল না।

কে হতে পারেন এই তৃতীয় প্রার্থী? কেউ কেউ মনে করছেন, নিজে না দাঁড়ালেও ডালমিয়া-রাজীব জুটিকে ঠেকাতে পওয়ার না নিজের পছন্দের কাউকে দাঁড় করিয়ে দেন! তিনি, শশাঙ্ক মনোহর নন তো?

চব্বিশ ঘণ্টা নাকি আর সময় দরকার। বোর্ড মসনদের ভাগ্য যা পরিষ্কার হওয়ার, তার মধ্যে হয়ে যাবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE