Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

মাত্র চার ম্যাচ পরেই স্লোগান ‘আর্মান্দো হটাও, মর্গ্যান ফেরাও’

ডার্বির আগে প্রিয় দলকে উদ্দীপ্ত করতে পেল্লায় সাইজ লাল-হলুদ পোস্টার নিয়ে যুবভারতীতে এসেছিলেন ওঁরা। তাতে লেখা ‘দ্য ড্রিম অব ওয়ান টিম, দ্য হার্ট বিট অব মিলিয়নস’। কিন্তু কালীঘাট মিলন সঙ্ঘের বিরুদ্ধে আর্মান্দোর ইস্টবেঙ্গল ১-১ করার পর সেই সমর্থকরাই নতুন মরসুমের মাত্র চার নম্বর ম্যাচের পরেই স্লোগান তুললেন ‘গো ব্যাক আর্মান্দো, ব্রিং ব্যাক মর্গ্যান।’ যা শুনে পুলিশ প্রহরায় যুবভারতী ছাড়ার সময় ইস্টবেঙ্গল কোচের স্বগতোক্তি, “ওদের মুখ তো আর বন্ধ করা যাবে না। ডার্বিতে তাই ভাল খেলতে হবে আমাদেরই।”

এ ভাবেই আটকে গেলেন র‌্যান্টিরা। ছবি: শঙ্কর নাগ দাস

এ ভাবেই আটকে গেলেন র‌্যান্টিরা। ছবি: শঙ্কর নাগ দাস

দেবাঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায়
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৭ অগস্ট ২০১৪ ০২:৫৪
Share: Save:

ইস্টবেঙ্গল-১ (খাবরা)
কালীঘাট মিলন সঙ্ঘ-১ (সৌরভ)

ডার্বির আগে প্রিয় দলকে উদ্দীপ্ত করতে পেল্লায় সাইজ লাল-হলুদ পোস্টার নিয়ে যুবভারতীতে এসেছিলেন ওঁরা। তাতে লেখা ‘দ্য ড্রিম অব ওয়ান টিম, দ্য হার্ট বিট অব মিলিয়নস’। কিন্তু কালীঘাট মিলন সঙ্ঘের বিরুদ্ধে আর্মান্দোর ইস্টবেঙ্গল ১-১ করার পর সেই সমর্থকরাই নতুন মরসুমের মাত্র চার নম্বর ম্যাচের পরেই স্লোগান তুললেন ‘গো ব্যাক আর্মান্দো, ব্রিং ব্যাক মর্গ্যান।’ যা শুনে পুলিশ প্রহরায় যুবভারতী ছাড়ার সময় ইস্টবেঙ্গল কোচের স্বগতোক্তি, “ওদের মুখ তো আর বন্ধ করা যাবে না। ডার্বিতে তাই ভাল খেলতে হবে আমাদেরই।”

মোদ্দা কথা, ডার্বির পাঁচ দিন আগেও মাঠ ও মাঠের বাইরে চূড়ান্ত অগোছালো ইস্টবেঙ্গল। মাঠের বাইরে যদি ক্লাবের অন্যতম শীর্ষকর্তার জামিন নিয়ে ব্যস্ত থাকেন বাকি কর্তারা, তা হলে মাঠের ভিতর রক্তচক্ষু দেখাচ্ছে রাজু, র‌্যান্টিদের হতশ্রী পারফরম্যান্স। গোদের ওপর বিষফোঁড়ার মতো এ দিনই আবার গোড়ালিতে চোট পেয়ে মাঠ থেকে স্ট্রেচারে শুয়ে বাড়ি ফিরলেন নির্ভরযোগ্য স্টপার অর্ণব মণ্ডল। লাল-হলুদ কোচ মুখে যদিও বলছেন, “এখনও অর্ণবের সেরে ওঠার সময় আছে। ডার্বিতে অন্য লড়াই,” কিন্তু পরক্ষণেই যোগ করছেন, “কলকাতা লিগ পরীক্ষা-নিরীক্ষার টুর্নামেন্ট। সকলকেই ঘুরিয়ে-ফিরিয়ে নামিয়ে টিমের কম্বিনেশন দেখে নিচ্ছি। জেতা-হারার চেয়েও এটা গুরুত্বপূর্ণ।”

ঠিক এখানেই ডার্বির আগে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বীর চেয়ে দু’পয়েন্টে পিছিয়ে থাকা (৪ ম্যাচে মোহনবাগান ৯, ইস্টবেঙ্গল ৭) লক্ষ লক্ষ লাল-হলুদ হৃদস্পন্দনের ‘লাব-ডাব’ শুনতে ব্যর্থ ইস্টবেঙ্গল কোচ। পরীক্ষা-নিরীক্ষা নিশ্চয়ই থাকবে। কিন্তু এ দিনের ম্যাচ তুলে দিল বেশ কয়েকটা প্রশ্নও।

এক) ডার্বিতে লাল-হলুদের গোলকিপার কে? এ দিন লুইস ব্যারেটো কালীঘাটের সৌরভের গোল হজম করলেন হাতে বল লাগিয়েও। সৌরভের শট আটকাতে গোল-মুখ ছোট করতেও দেখা গেল না। টিম সূত্রে খবর, অভিজিৎ সুস্থ ছিলেন। অভ্রও। তবু চার ম্যাচে তিন কিপার কেন? বড় ম্যাচে যদি অভিজিৎ বা অভ্রকে নামাতে হয় তা হলে তার আগের ম্যাচেই ব্যারেটো কেন?

দুই) আর্মান্দোর প্রিয় ছক ৪-৪-২-এ উইং প্লে প্রবল গুরুত্বপূর্ণ। তা হলে এ দিন দুই উইং হাফে খাবরা এবং জোয়াকিম কেন? দু’জনের কেউই পজিটিভ উইং হাফ নন। বিপক্ষ বক্সে ঠিকঠাক ক্রস যাচ্ছে না।

তিন) চুলে বাহারি রং করলেও রাজুর খেলায় ইদানীং রংবাজি নেই। মরসুমের প্রথম ম্যাচ থেকেই ম্লান। তা হলে শুরুতে গুরবিন্দর নয় কেন?

চার) মেহতাব বক্স-টু-বক্স খেলতে পারছেন না। তা হলে তাঁর সঙ্গে ডাবল পিভট খাবরা কেন নয়?

পাঁচ) লাল-হলুদের মার্কি প্লেয়ার বিশ্বকাপার বার্তোস মন্থর। এখন পর্যন্ত যে ১১০ মিনিট (প্রথম ম্যাচে ২০ মিনিট আর এই ম্যাচে ৯০ মিনিট) খেলেছেন, মনে রাখার মতো কোনও ফ্রি-কিক, শট, ট্যাকল, সোলো রান, শূন্যে বা মাটিতে বাড়ানো পনেরো-বিশ গজের ফরোয়ার্ড পাস দেখা যায়নি। কেবল আছে রক্ষণ থেকে উইং, উইং থেকে মাঝমাঠে গুচ্ছের স্কোয়ার পাস। ডার্বিতে এই বিশ্বকাপার মাঠে থাকলে সঙ্গে ‘প্ল্যান বি’-ও রাখা দরকার আর্মান্দোর।

লাল-হলুদ ফুটবল সচিব স্বীকার করছেন, “আরও পনেরো দিন আগে প্র্যাকটিস শুরু করলে বোধহয় ভাল হত।” বহু যুদ্ধের নায়ক মনোরঞ্জন ভট্টাচার্যও আশঙ্কিত গলায় বললেন, “টিমটাকে এখনও ঝলমল করতে দেখলাম না।” ভাস্কর গঙ্গোপাধ্যায়ের অনুযোগ, “দ্বিতীয়ার্ধে একটা শটও গোলে নিল না আমাদের ছেলেরা।”

হয়তো ড্যামেজ কন্ট্রোলেই ম্যাচের পর তড়িঘড়ি প্লেয়ার-কাম-টেকনিক্যাল ম্যানেজার হিসেবে নিয়োগ করা হল টিম-অ্যাম্বাস্যাডর অ্যালভিটো ডি’কুনহাকে। পরক্ষণেই ছেলেদের নিয়ে এক ঘণ্টা বন্ধ ড্রেসিংরুমে কাটিয়ে যিনি বললেন, “কলকাতা লিগটিগ পরে হবে। সামনে ডার্বি। সমর্থকদের মুখে হাসি ফেরাতে ওটা জিততেই হবে।”

ইস্টবেঙ্গলে গোয়ান-মস্তিষ্ক মানেই কি কলকাতা লিগের দাম নেই!

ইস্টবেঙ্গল: লুইস, অভিষেক, অর্ণব (গুরবিন্দর), রাজু, সৌমিক, জোয়াকিম (বলজিৎ), মেহতাব (তুলুঙ্গা), লোবো, খাবরা, বার্তোস, র‌্যান্টি।

বুধবারে
কলকাতা লিগমহমেডান: এরিয়ান (বারাসত ৪-০০)
পুলিশ এসি: সাই (ইস্টবেঙ্গল)।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE