মে মাসের দিকে আমি বরাবরই তাকিয়ে থাকি। স্কুলে মে মাস মানে ছিল গরমের ছুটি। তখন ওই ছুটিটাকে মনে হত ক্লাস টাইম টেবিলের একটা লম্বা গেমস পিরিয়ড। খেলাধুলো ছাড়া গরমের ছুটির মেন্যুতে থাকত প্রচুর ম্যাঙ্গো শেক, লেবুর শরবত, আরও ম্যাঙ্গো শেক আর লেবুর শরবত। যারা একটু বুদ্ধি ধরত, তাদের কাছে কারেন্ট চলে যাওয়াটা দুঃস্বপ্নের মতো ছিল। আমাদের কাছে অবশ্য পাওয়ার-কাট মানে লুকোচুরির খেলা আর বন্ধুদের সঙ্গে প্রতিজ্ঞা করা যে, আমরা সারা জীবন একে অন্যের পাশে থাকব। সত্যি, জীবন তখন কী সুখের ছিল!
বছরকয়েক পরে মে মাসের মানে দাঁড়াল দিল্লিতে গরমকালের ক্রিকেট টুর্নামেন্ট। যেগুলো খেলার সৌজন্যে আমি দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয় এবং আরও সব নামী কলেজে গিয়েছি। হিন্দু কলেজে ভর্তি হওয়ার আগেই তাই জেনে গিয়েছিলাম যে, ওখানকার ক্যান্টিনে কী কী খাবার পাওয়া যায়। মে মাসের সন্ধে মানে অস্থায়ী কোর্টে দুটো একশো ওয়াটের বাল্বের আলোয় ব্যাডমিন্টন খেলা। তখন খেলা বলতে শুধু জেতাই বুঝতাম। ক্লান্তি ব্যাপারটা যে কী, জেনেছিলাম আরও কয়েক বছর পরে।
এখন মে মাস মানে কেকেআর আর আইপিএল। ক্রিকেট এমন একটা খেলা, যার জন্য আমি মরতেও রাজি। একশো ওয়াটের ওই দুটো বাল্বের জায়গায় এখন ক্রিকেট মাঠের চারটে বিশাল ফ্লাডলাইটের স্তম্ভ। এখন ম্যাঙ্গো শেক খাওয়াটা নিয়ন্ত্রণে রাখতে হয়। কিন্তু লেবুর শরবত আমার কাছে সব সময় স্বাগত। বন্ধুদের সঙ্গে করা কয়েকটা প্রতিজ্ঞা রাখতে পেরেছি। কয়েকটা এখনও রাখা বাকি। এখনও ব্যাডমিন্টন খেলা উপভোগ করি। এখনও সমান লড়াই করতে পারি। আর এখনও ক্লান্ত হয়ে পড়ি না।