সেই লাজং! ফালোপা জমানায় প্রথম একাদশের পাঁচ ফুটবলারকে বাদ দিয়ে যাদের চার গোল দিয়ে এসেছিল লাল-হলুদ। তার পর আর্মান্দো জমানায় আর জয় নেই শিলংয়ের দলের বিরুদ্ধে। কলকাতার বর্তমান আবহাওয়ায় নমনীয় শরীরের দুর্গা বোড়ো, লেন, আইবরদের তারুণ্য, জোশ সব সময়ই বিপক্ষের চিন্তার কারণ। এ বার তার সঙ্গে জুড়েছেন পেন ওরজি। মাঝমাঠে ডাউন দ্য মিডল অপারেট করা কিংবা ঠিকানা লেখা পাস বাড়ানো যাঁর অভ্যাস। ইউএসপি দশ গজের চোরা স্প্রিন্ট। এ দিন ইস্টবেঙ্গল মাঠে অনুশীলন সেরে বেরনোর মুখে পেন যা বলে গেলেন, তা আর্মান্দোর রক্তচাপ বাড়ানোর পক্ষে যথেষ্ট। “এই ইস্টবেঙ্গলের সবাইকেই চিনি, জানি। কার কোথায় সুবিধা আর অসুবিধা, সব নিয়েই টিমমেটদের সঙ্গে আলোচনা করেছি।”
যা শুনে ইস্টবেঙ্গল অধিনায়ক হরমনজ্যোত্ সিংহ খাবরার গলায় সমীহ। “ওদের যে দুই বিদেশি খেলবে (গ্লেন ও পেন) তাঁরা বেশ ভাল। গোটা টিমটা দ্রুত প্রতি-আক্রমণে আসে। আগের ম্যাচে পাঁচ গোল খেয়েছে বলে ওদের মোটেও উপেক্ষা করা যাবে না।”
সিংহের গুহায় ঢুকে পেনদের সিংহ শিকার আটকাতে আর্মান্দোর ছক দুই উইং থেকে র্যা-ডু জুটিকে বল বাড়াও। আই লিগ কাঁপানো এই জোড়া ফলার সামনে কেঁপে যেতে পারে লাজংয়ের ভারতীয় রক্ষণ। আর অনভিজ্ঞ পাহাড়ি ছেলেদের জোশ নষ্ট করার দাওয়াই, শুরুতেই গোল তুলে নেওয়া। গোয়ান কোচের স্ট্র্যাটেজি লাজংয়ের দুই উইং-হাফ যখন প্রতি-আক্রমণে আসে তখন নামতে সময় নেয়। সেটা কাজে লাগাও।
কিন্তু ইদানীং আর্মান্দোর দলেও তো দুই সেন্ট্রাল মিডফিল্ডার খাবরা ও মেহতাব উইংয়ে বল বাড়িয়ে আক্রমণ গড়ার চেয়ে র্যান্টিকে লম্বা বল বাড়াতেই বেশি তত্পর। সুনীল ছেত্রীদের বেঙ্গালুরুকে হারিয়ে তিন পয়েন্ট আনলেও সুসাক-অর্ণবের বোঝাপড়ার অভাব রক্তচক্ষু দেখাচ্ছে প্রতিনিয়ত। চোট সারাতে মুম্বইয়ে ডাক্তার দেখাতে যাওয়ায় দশ দিন মাঠের বাইরে কেভিন লোবো। বড় ম্যাচে না-ও পাওয়া যেতে পারে তাঁকে। এ সব ত্রুটি শুধরে নিতেই এ দিন অনুশীলন শুরুর পনেরো মিনিটের মধ্যেই যুবভারতীতে সাংবাদিকদের বের করে দিয়ে ঝাড়া-মোছার কাজও চলল পুরোদমে। বলজিতের জায়গায় ডুডু ছাড়া প্রথম দলে বদল নেই বললেই চলে।
কিন্তু বিকেলে এরই মধ্যে আবার হাওয়াবদল। রক্তে শর্করার পরিমাণ কমে যাওয়ায় সাংবাদিক সম্মেলনে গরহাজির আর্মান্দো। সহকারী কোচ সুজিত চক্রবর্তী র্যান্টিকে পাশে বসিয়ে বলে গেলেন, “ডুডু আসায় সুবিধা হবে। কিন্তু দলের সংহতি বাড়াতে হবে। লিওর (বার্তোস) ফর্মও চিন্তার বিষয়।” র্যান্টিও বলে গেলেন, “কার্লোস হার্নান্দেজ, বেটোরা যে রকম বল বাড়াত, সেটা হচ্ছে না।”
পেনরা কি আজ এরই ফায়দা তুলবেন? না কি অর্ণব-মেহতাবদের কথা মতো আক্রমণে জোড়া ফলা খেলতে পারলে জয় আসবেই, আর জিতলেই পাল্টে যাবে ছবিটা?
আর্মান্দোর র্যা-ডু প্রতিষেধক কলকাতা লিগের মতো ঝলমলে ছবি মে মাসে ক্লাব তাঁবুতে ফের আনতে পারবেন কি না, আজ তারই পরীক্ষা শুরু। যার প্রথম পত্রের নাম পেন-আইবরদের লাজং এফসি।
রবিবার আই লিগ
• ইস্টবেঙ্গল-লাজং এফসি (যুবভারতী, ৪-৩০)
• স্পোর্টিং ক্লুব-সালগাওকর (ফতোরদা, ৪-৩০)
• পুণে এফসি-মুম্বই এফসি (বালেওয়াড়ি, ৭-০০)