আইপিটিএলের ব্যাপারটা প্রথম জেনেছিলাম ২০১২-র শেষের দিকে। মহেশ ভূপতি ব্যক্তিগত কাজে কলকাতায় এসেছিল। তখন এক সন্ধেয় আমার সল্টলেকের অ্যাকাডেমিতে দু’জনের আড্ডায় শুনেছিলাম ওর এই অভিনব আন্তর্জাতিক প্রিমিয়ার টেনিস লিগের ভাবনাটা। সেই দিনই ওকে বলেছিলাম, অন্তত দু’বছর লেগে যেতে পারে ভাবনাকে পুরোপুরি বাস্তব করতে। আমার মতে তাই ঠিক সময়েই আইপিটিএল দিনের প্রথম আলো দেখল। যখন চারটে ফ্র্যাঞ্চাইজি দল সত্তর জন প্লেয়ারের নিলাম থেকে নিজেদের ঘর গুছিয়ে নিল রবিবার।
মহেশ সেই আড্ডাতেই বলেছিল, বিলি জিন কিংয়ের ওয়ার্ল্ড টিম টেনিস থেকে ওর এই আইপিটিএলের ভাবনাটা এসেছে। আমেরিকার বিভিন্ন শহরের মধ্যে হোম-অ্যাওয়ে ভিত্তিতে হওয়া মাসখানেকের টেনিস লিগের মতোই এশিয়াতেও একটা পেশাদার লিগ করতে চায়। বিশেষ করে দক্ষিণ পূর্ব এশিয়া আর মধ্যপ্রাচ্যের শহরগুলোর মধ্যে। যাতে এশিয়ার এই অঞ্চল দুটোয় টেনিসের আগ্রহ আরও বাড়ে। আর কোনও খেলা নিয়ে আগ্রহ হু-হু করে বাড়লে সেই খেলার স্ট্যান্ডার্ডও বাড়ে।
কথাটার সঙ্গে আমিও একমত। মুম্বইয়ের হয়ে যেমন নাদাল, সাম্প্রাসরা খেলায় স্বাভাবিক ভাবেই আমাদের দেশের দর্শকদের মধ্যে আইপিটিএল নিয়ে প্রচণ্ড আগ্রহ তৈরি হবে। আবার নাদাল বনাম দুবাইয়ের জকোভিচ, সাম্প্রাস বনাম সিঙ্গাপুরের আগাসি কিংবা আনা ইভানোভিচ বনাম ব্যাঙ্ককের আজারেঙ্কার খেলা হলে সেই ম্যাচগুলো নিজের দেশে বসে দেখে আমাদের উঠতি টেনিস প্লেয়াররা অনেক কিছু শিখতে পারবে। রামকুমার রামনাথন, বিষ্ণু বর্ধন, অঙ্কিতা রায়নারা না হয় এই টুর্নামেন্টে খেলতে পারছে না (বাস্তবে সেটা সম্ভবও নয়), কিন্তু ঘরের স্টেডিয়ামে বসে টেনিস কিংবদন্তিদের খেলা দেখে নিজেদের র্যাকেটে কিছু নতুন শট তোলার চেষ্টা তো করতেই পারে। তা ছাড়া সংগঠকদের কাছে শুনেছি, মুম্বইয়ে থাকার সময় নাদাল-সাম্প্রাস, ইভানোভিচরা একটা-দুটো টেনিস ক্লিনিক করতে পারে। সেটা হলে আমাদের ভবিষ্যৎ টেনিস প্রজন্মের সামনে দারুণ সুযোগ শেখার।