আধুনিক ফুটবলের সেরার রাজমুকুট নিয়ে যে দু’জনের মধ্যে লড়াই চলছে, সেই ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডো আর লিওনেল মেসির মুখে এমনিতে একে অন্যের সমালোচনা থাকে না। ব্যালন ডি’অর ঘোষণার ঘণ্টাখানেক আগেও মেসি বলে দিয়েছিলেন, ২০১৪-এ রোনাল্ডো যা করেছেন, দুর্দান্ত। তবে পারস্পরিক ‘সম্মান’ যে অনেকটাই বাহ্যিক, তার হাতেগরম প্রমাণ আবার পাওয়া গেল। পাওয়া গেল ব্যালন ডি’অরের রাতেই, ফিফা বর্ষসেরার ভোটাভুটির খুঁটিনাটি প্রকাশ্যে আসার সঙ্গে সঙ্গে। যেখানে দেখা গেল, মেসি বা রোনাল্ডো কেউই একে অপরকে বর্ষসেরা মনে করেন না।
রোনাল্ডোর বিচারে সোনার বলের তিন প্রধান দাবিদার রিয়াল মাদ্রিদেরই তিন সতীর্থ সের্জিও র্যামোস, গ্যারেথ বেল এবং করিম বেঞ্জিমা। মেসির পছন্দের তিন: তাঁর জাতীয় সতীর্থ অ্যাঞ্জেল দি’মারিয়া, বার্সা টিমমেট আন্দ্রে ইনিয়েস্তা এবং ক্লাব-দেশের সতীর্থ জাভিয়ের মাসচেরানো। তবে মেসি যাঁকেই ভোট দিন না কেন, তাতে রোনাল্ডোর খুব একটা অসুবিধে হত না। ৩৭.৬৬ শতাংশ ভোট যিনি পেয়েছেন, তাঁর একটা-দুটো ভোটে কীই বা আসে-যায়! আর মাঠের যুদ্ধে মেসি বনাম রোনাল্ডো যতই গায়ে-গায়ে হোক না কেন, ব্যালন ডি’অরের যুদ্ধক্ষেত্রে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বীকে দ্বিগুণেরও বেশি ‘গোলে’ টপকে গেলেন সিআর সেভেন। মেসি মাত্র ১৫.৭৬ শতাংশ ভোট পেয়ে অন্য দাবিদার ম্যানুয়েল নয়্যারের (১৫.৭২) চেয়ে ভগ্নাংশে এগিয়ে দ্বিতীয় হয়েছেন। পুসকাস পুরস্কারের ভোটেও ছিল চমক। রবিন ফান পার্সির উড়ন্ত গোলকে টপকে দু’নম্বরে ছিলেন আইরিশ মেয়ে ফুটবলার স্টেফানি রোচ। তবে সব ছাপিয়ে উঠে এসেছে রোনাল্ডোর জয়।
আর ব্যালন ডি’অর জয়ের পরের কয়েকটা দিন রোনাল্ডোর ক্যারিশমার কাছে মেসি-ম্যাজিক যদি কিছুটা ম্লান দেখায়, অবাক হওয়ার কিছু থাকবে না। ‘ব্রাত্য’ নয়্যারের ক্ষোভে জার্মান পত্রপত্রিকায় রোনাল্ডো নিয়ে কার্টুন, পুরস্কারমঞ্চে তাঁর চিত্কারকে ‘মদ্যপ ভালুকের’ সঙ্গে তুলনা করা নিছকই খ্যাতির বিড়ম্বনা!