কোহলির এই আত্মবিশ্বাসটাই ভারতকে টি টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ফাইনালে তুলে দিল। লোকে বলে টি-টোয়েন্টি আসলে ক্রিকেটের ব্যাকরণকে বুড়ো আঙুল দেখানোর খেলা। যাঁরা এই কথা বলেন, কোহলির এই ব্যাটিং দেখার পর তাঁরা আর তা বলবেন না বোধহয়। একটাও অক্রিকেটীয় বা ভুল শট নেই গোটা ইনিংসে। যে বলটা ঠিক যে ভাবে মারা দরকার, সে ভাবেই খেলে গেল। আর বেসিকটা ঠিক রেখে ব্যাট করা মানে ভুল হওয়ার সম্ভাবনাও কম। সে জন্যই ওকে শেষ পর্যন্ত টলাতে পারল না দক্ষিণ আফ্রিকার বোলাররা। সে স্টেইন হোক বা ইমরান তাহির।
ফাইনালে ভারত। সবিস্তার...
আর কোহলি যদি মহানায়ক হয়, তা হলে এই ম্যাচের আর এক নায়ক অবশ্যই রবিচন্দ্রন অশ্বিন। দক্ষিণ আফ্রিকার দু’শো তোলাটা কিন্তু আটকে দিল অশ্বিনই। আর যে বলটায় হাসিম আমলার স্টাম্প ছিটকে গেল, সেটা অসাধারণ বললেও কম বলা হবে। কোনও বিশেষজ্ঞ লেগস্পিনারও এমন বল করতে পারবে কি না, সন্দেহ আছে। বলটা লেগস্টাম্পের বাইরে পড়ে যে ভাবে টার্ন করে ঢুকল, তা অবিশ্বাস্য। ক্রিকেটের ব্যাকরণ দিয়ে এমন বলের রহস্যভেদ করা যাবে না বোধহয়। সারা টুর্নামেন্টেই ভাল বল করে চলেছে অশ্বিন। যখনই ধোনি ওর হাতে বল তুলে দিয়েছে কোনও বিশেষ দায়িত্ব পালনের জন্য, তখনই ও সেটা করে দেখিয়েছে। শুক্রবারও সেটাই হল। সমানে নিখুঁত লাইন রেখে গেল। তাও আবার কোন পরিস্থিতিতে? মোহিত শর্মা যখন আগের ওভারটায় ও রকম মার খেল, ঠিক তার পরই। ওই সময় অশ্বিন ও রকম একটা স্পেল না করলে ভারতের কাজটা কিন্তু আরও কঠিন হয়ে যেত।
শুক্রবার ধোনির আসল তাসটা কাজে আসেনি। অমিত মিশ্রকে পিটিয়ে দেয় দক্ষিণ আফ্রিকার ব্যাটসম্যানরা। ওদের দলে বেশ কয়েক জন বাঁ হাতি ব্যাটসম্যান আছে। যার জন্য জাডেজাকেও পরের দিকে আর আক্রমণে আনতে পারেনি ধোনি। তাই অশ্বিনের রোলটা এ দিন আরও বেশি গুরুত্বপূর্ণ ছিল।
টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের আগে অশ্বিনের পারফরম্যান্স নিয়ে কথা হচ্ছিল। ও সে ভাবে উইকেট পাচ্ছিল না। অশ্বিনের একটা গুণ ওকে কিন্তু বাকিদের থেকে অনেকটা এগিয়ে রাখে। সেটা হল, চাপ সামলানোর মানসিকতা। এই ধরনের প্রেশার-ম্যাচে এই টেম্পারমেন্ট বজায় রাখাটাই আসল ব্যাপার। টি টোয়েন্টি ম্যাচে ব্যাটসম্যান তো মারবেই। কিন্তু মার খেয়ে ঘাবড়ে গিয়ে আরও মার খাওয়ার বল দিলেই তো বিপত্তি। এই অবস্থায় চাপ সামলানোর এই মানসিক শক্তিটা না থাকলে ডুবতে হয়। অশ্বিনের সেটা আছে বলে ও এই চাপটাও সামলে নিল। ঠিক যেমন ব্যাটিংয়ের সময় করল কোহলি।