Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

বয়সই অর্ণবদের কাছে হারিয়ে দিল দেল পিয়েরোকে

ম্যাচ রিপোর্ট লিখতে বসে মনে পড়ছে সাতাত্তরের কসমস ম্যাচের কথা। মনে পড়ছে ভেনেজুয়েলার বিরুদ্ধে কলকাতায় খেলে যাওয়া মেসিদের ফিফা ফ্রেন্ডলি ম্যাচটার কথাও। পেলের কসমসের বিরুদ্ধে নিজে খেলেছি বলে জানি, টিকিটের সে বার চাহিদা কেমন ছিল। মেসিরা যখন খেলতে এল, তখনও হঠাত্‌ই ফুটবলের আকর্ষণ মারাত্মক বেড়ে গিয়েছিল। রবিবারও সেটাই দেখলাম। আমি মাঠে যাইনি, ম্যাচ টিভিতে দেখেছি। আর দিল্লি ডায়নামোসের বিশ্বকাপজয়ী দেল পিয়েরোর চেয়ে আমার মনে ধরল অর্ণব মণ্ডল, সৌভিক চক্রবর্তী, সৌভিক ঘোষদেরই।

যুবভারতীতে রবিবারটা দেল পিয়েরোর ছিল না। ছবি: উত্‌পল সরকার

যুবভারতীতে রবিবারটা দেল পিয়েরোর ছিল না। ছবি: উত্‌পল সরকার

সুব্রত ভট্টাচার্য
শেষ আপডেট: ২০ অক্টোবর ২০১৪ ০২:৫৪
Share: Save:

আটলেটিকো দে কলকাতা-১ (হোফ্রে-পেনাল্টি)
দিল্লি ডায়নামোস এফসি-১ (পাভেল)

ম্যাচ রিপোর্ট লিখতে বসে মনে পড়ছে সাতাত্তরের কসমস ম্যাচের কথা। মনে পড়ছে ভেনেজুয়েলার বিরুদ্ধে কলকাতায় খেলে যাওয়া মেসিদের ফিফা ফ্রেন্ডলি ম্যাচটার কথাও।

পেলের কসমসের বিরুদ্ধে নিজে খেলেছি বলে জানি, টিকিটের সে বার চাহিদা কেমন ছিল। মেসিরা যখন খেলতে এল, তখনও হঠাত্‌ই ফুটবলের আকর্ষণ মারাত্মক বেড়ে গিয়েছিল। রবিবারও সেটাই দেখলাম।

আমি মাঠে যাইনি, ম্যাচ টিভিতে দেখেছি। আর দিল্লি ডায়নামোসের বিশ্বকাপজয়ী দেল পিয়েরোর চেয়ে আমার মনে ধরল অর্ণব মণ্ডল, সৌভিক চক্রবর্তী, সৌভিক ঘোষদেরই। বিশেষ করে অর্ণব। ওর ট্যাকলিং, কভারিং কিন্তু বেশ লাগল।

এর বাইরে ম্যাচটায় মনে রাখার মতো যদি কিছু ঘটে থাকে তা হল দিল্লির পাভেল ইলিয়াসের গোলটা। এ রকম গোল দেখার জন্যই তো দর্শকরা মাঠে ছুটে আসেন। তবে আমার মনে হয়, ২৫০ মিনিট অর্ণবদের রক্ষণ গোল না খাওয়ার সময়টা আরও বাড়িয়ে রাখতে পারত, যদি পাভেলের গোলটার সময় ওদের রক্ষণের আগে যারা খেলছে সেই নাটো বা হোফ্রে চার্জে যেত। ওই রকম স্কোরিং জোন থেকে কেউ শট নেওয়ার সময় সামনে কেউ দাঁড়িয়ে পড়লে সেই ফুটবলার গোলে খুব সহজে বল রাখতে পারে না। কিন্তু পাভেল যখন শটটা নিল তখন আটলেটিকোর কাউকেই ওর সামনে যেতে দেখলাম না।

তবে এটা বলে পাভেলের গোলটাকে খাটো করে দেখছি না। ডান পায়ে ভলি নেওয়ার সময় শরীরের ভারসাম্য যে ভাবে বাঁ দিকে ঝুঁকিয়ে রাখল তা ফুটবলের ব্যাকরণ মেনেই। কিন্তু দেল পিয়েরো? বেশ হতাশ হলাম ওর খেলা দেখে। ফুটবল-বার্ধক্য ওকে গ্রাস করেছে। পুরনো গতি, টাচ, বা এক সঙ্গে চার-পাঁচটা পাস খেলা কোনওটাই দেখতে পেলাম না। খেলা দেখে মনে হল নব্বই মিনিট মাঠে থাকার ফিটনেস এখন আর নেই। তাই দেল পিয়েরোর বয়সের বিরুদ্ধে অর্ণবদের চেষ্টা, আগ্রহই জিতে গিয়েছে একের বিরুদ্ধে এক লড়াইয়ে। কেউ কেউ শুরুতে দেল পিয়েরোর পেনাল্টি না পাওয়া নিয়ে কথা বলছেন। তবে আমার মনে হয়, রেফারি পেনাল্টি না দিয়ে ঠিক করেছেন। কারণ হোসে রে-র হাঁটুতে লেগে দেল পিয়েরো বক্সে পড়ে গিয়েছিল। আর তার পর প্লে-অ্যাক্টিং। রেফারি হলুদ কার্ড দেখিয়ে কিছু ভুল করেননি। তবে অর্ণব, ডেঞ্জিল, বিশ্বজিত্‌দের সুবিধা এটাই যে, আজ দেল পিয়েরোর বিরুদ্ধে সাফল্যের সঙ্গে খেলায় ওদের আত্মবিশ্বাস বাড়বেই। আগামী কয়েক মাস পর যখন জাতীয় দল বা ক্লাবের হয়ে আন্তর্জাতিক ম্যাচে নামবে তখন শুরুতেই কেঁপে যাবে না।

আর আটলেটিকো দে কলকাতা? ক্লান্তি ছাড়া ওদের আর যেটা ভোগাল, তা হল বোরহা ফার্নান্দেজের না থাকা। গার্সিয়াদের বল সাপ্লাই বোরহাই করে। ওর কাজটা সে ভাবে করতে পারছিল না নাটো বা হোফ্রে। দ্বিতীয়ার্ধে হ্যামস্ট্রিংয়ের চোটের কারণে গার্সিয়া বসে যেতেই পরপর দু’ম্যাচের গোলদাতা ফিকরুও বল না পেয়ে নেমে আসছিল। হাবাস কেন গার্সিয়ার বদলি হিসেবে রাকেশ মাসিকে ভাবলেন, বুঝলাম না। বরং কেভিন লোবোকে নামালে ঝাঁঝটা থাকত।

পরের ম্যাচে গোয়ায় জিকো দলের বিরুদ্ধে নামার আগে এগুলো কিন্তু সারিয়ে ফেলতে হবে অর্ণবদের কোচ হাবাসকে।

আটলেটিকো দে কলকাতা: শুভাশিস, ডেঞ্জিল, অর্ণব, হোসে রে, বিশ্বজিত্‌, নাটো, হোফ্রে, বলজিত্‌ (সঞ্জু), গার্সিয়া (মাসি), পদানি (আর্নাল), ফিকরু।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE