ব্রাজিলের নেমারের সঙ্গে বল দখলের লড়াইয়ে জনি অ্যাকোস্তা। রাশিয়া বিশ্বকাপে গ্রুপের ম্যাচে। ছবি: রয়টার্স।
বিশ্বকাপের আবহেই বিশ্বকাপার পেয়ে গেল কোয়েস ইস্টবেঙ্গল। নাম জনি অ্যাকোস্তা জামোরা। কোস্টা রিকার ডিফেন্ডার তিনি। রাশিয়া বিশ্বকাপে লাতিন আমেরিকার দলের হয়ে গ্রুপের প্রতিটি ম্যাচই খেলেছেন তিনি।
কলকাতায় এর আগে অনেক বিশ্বকাপারই খেলে গিয়েছেন। এমেকা এজুগো খেলেছেন। মজিদ বাসকর খেলেছেন। ক্যামিনো নামেও এক বিশ্বকাপার খেলে গিয়েছেন। কয়েক বছর আগে কোস্টা রিকারই কার্লোস হার্নান্দেজ খেলে গিয়েছিলেন প্রয়াগ ইউনাইটেডের হয়। কিন্তু, কখনও টাটকা বিশ্বকাপে খেলা ফুটবলার আসেননি। মঙ্গলবার রাতে অ্যাকোস্তা জামোরার লাল-হলুদ ক্লাবে সই সেজন্যই অন্য মাত্রা আনছে ময়দানে। যা রীতিমতো নজিরবিহীন ঘটনা। ইস্টবেঙ্গল সেজন্যই ইতিহাস গড়ল জনি অ্যাকোস্তাকে সই করিয়ে।
৩৪ বছর বয়সি ডিফেন্ডার এখনও পর্যন্ত ৬৯ আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলেছেন। দুটো গোলও করেছেন। চলতি বিশ্বকাপে গ্রুপের তিন ম্যাচে আটবার ক্লিয়ারেন্স করেছেন বল। ১১ বার বল কেড়েছেন বিপক্ষের থেকে। নেইমারের ব্রাজিলের বিরুদ্ধে সদ্য খেলার অভিজ্ঞতা ভারতে সঙ্গী হবে তাঁর। এক বিবৃতিতে তিনি জানিয়েছেন, “ইস্টবেঙ্গল হল ভারতের অন্যতম সেরা ক্লাব। ভারতীয় ফুটবলের সঙ্গে যুক্ত হতে চাইছি। আমার নতুন ক্লাবকে শুভেচ্ছা জানাচ্ছি। অন্য ভারতীয় ফুটবলারদের উত্সাহিত করব, গাইড করব। কোয়েস ইস্টবেঙ্গল এফসি-র হয়ে ট্রফি জেতাও লক্ষ্য।”
২০১৪ ব্রাজিল বিশ্বকাপে হল্যান্ডের ভ্যান পার্সিকে আটকাচ্ছেন জনি অ্যাকোস্তা। ছবি: এএফপি।
তবে কবে কলকাতায় আসছেন, কবে অনুশীলনে যোগ দেবেন, কবে প্রথম ম্যাচ খেলবেন, এগুলো নিয়ে ধোঁয়াশা রয়েছে। রাশিয়া বিশ্বকাপ খেলে কোস্টা রিকা সবে দেশে ফিরেছে। ভিসার ব্যাপার রয়েছে। সব কিছু ঠিকঠাক করে কলকাতায় পা রাখতে অ্যাকোস্তার সময় লাগবে। কলকাতা লিগের প্রথম দিকের ম্যাচে তাঁর খেলার সম্ভাবনা কম। এমনও হতে পারে যে, কলকাতা লিগে তিনি খেললেনই না। কলকাতা লিগে ইস্টবেঙ্গলের প্রথম ম্যাচ ২৬শে জুলাই নিজেদের মাঠে বিপক্ষ আরিয়ান। তাই শুরুর দিকে অ্যাকোস্তাকে পাওয়া যাবে না ধরেই এগোতে চাওয়া হচ্ছে। এই মুহূর্তে ইস্টবেঙ্গলের বিদেশি বলতে রয়েছেন আল আমনা ও কাটসুমি।
আরও পড়ুন: হ্যারি কেন ও মদরিচ, দু'জনের সামনেই ইতিহাসের হাতছানি
এই মুহূর্তে কলম্বিয়ার রিওনেগ্রো আগুইলাসে খেলেন জনি অ্যাকোস্তা। যা খবর, তাতে সেই ক্লাবে তিনি যা পান, তার থেকে বেশি অর্থের প্রস্তাবেই ইস্টবেঙ্গলে আসছেন তিনি। ভারতীয় মুদ্রায় যা ১ কোটি ৩৬ লক্ষ টাকা। ঘটনা হল, ভারতীয় ফুটবলের নিরিখে ইস্টবেঙ্গলকে খুব বেশি খরচ করতে হচ্ছে না তাঁর জন্য। তাঁকে চিহ্নিত করা হচ্ছে ক্লাবের 'মার্কি' ফুটবলার হিসেবেও।
এর মধ্যেই আইএসএলে খেলার ব্যাপারে জল্পনা বাড়ছে। ইস্টবেঙ্গল কর্তারা চাইছেন দেশের সেরা লিগে নামতে। সমস্যা হল, আইএসএলের গঠনতন্ত্র অনুসারে খেলে দশ দল। এই দশ দলের কেউ আগ্রহ হারালে বা খেলতে না পারলে তবে নতুন কোনও দলকে অন্তর্ভুক্ত করার পরি়স্থিতি তৈরি হবে। বা, আইএসএলে যদি দলের সংখ্যা বাড়ে, সেক্ষেত্রেও সুযোগ আসতে পারে। কিন্তু, তেমন কোনও ভাবনা রয়েছে বলে এখনও খবর নেই ফুটবলমহলে। শোনা যাচ্ছে, অক্টোবরে হয়তো শুরু হবে আইএসএল। আর আই লিগ শুরু হতে পারে সেপ্টেম্বরে। এই মুহূর্তে সর্বভারতীয় ফুটবল ফেডারেশনের প্রায় সব কর্তাই রাশিয়ায় রয়েছেন। তাঁরা না ফেরা পর্যন্ত চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হবে না।
কলকাতায় লাল-হলুদ জার্সিতে সফল হতে পারবেন জনি অ্যাকোস্তা? ছবি: এএফপি।
পরের বছর ১৮ দলের লিগে খেলবে ধরেই এগোতে চাইছে ইস্টবেঙ্গল। ক্লাবের সহ-সচিব শান্তিরঞ্জন দাশগুপ্ত আনন্দবাজারকে বললেন, “আইএসএল নিয়ে এখনও সিদ্ধান্ত হয়নি। দশটা দলের লিগ এখনও রয়েছে। আইএসএলে খেলার ১৫ কোটি টাকা দেওয়ার ক্ষমতা আমাদের নেই। যদি কোয়েস দিয়ে দেয়, আমাদের কোনও সমস্যা নেই। দেশের সেরা লিগে খেলাই আমাদের লক্ষ্য। আর তার জন্য কোনও তাড়া নেই।”
যদিও ফুটবলমহলে অন্য খবর ভাসছে। শোনা যাচ্ছে, এবারের আইএসএলেই খেলতে পারে ইস্টবেঙ্গল। ২০ জুলাই ইস্টবেঙ্গলকে আইএসএলে অন্তর্ভুক্তির ঘোষণা হতে পারে বলে খবর ছড়িয়েও পড়েছে। কোয়েস কর্তৃপক্ষও আইএসএলে খেলতে আগ্রহী। তাঁরা আইএসএলে খেলার জন্য দৌড়ঝাঁপ শুরুও করে দিয়েছেন বলে ফিসফাস রয়েছে। জনি অ্যাকোস্তার সই সেই লক্ষ্যেই এগিয়ে যাওয়া বলেও মনে করা হচ্ছে। ধরা হচ্ছে, আইএসএলে খেলানোর লক্ষ্যেই তাঁকে নেওয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন: বল পায়ে নয়, বল জুগিয়েই বিশ্বকাপের মাঠে হাজির পাকিস্তান
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy