ভারত ১০১ (১৮.৫ ওভারে)
শ্রীলঙ্কা ১০৫-৫ (১৮ ওভারে)
অস্ট্রেলিয়াকে উড়িয়ে দেশে ফিরে প্রথম টি-টোয়েন্টি ম্যাচ ভারত হেরে গেল। হেরে গেল প্রায় আনকোরা একটা টিমের কাছে। কেউ কেউ বলতে পারেন, এটাকে এত গুরুত্ব দেওয়ার কী আছে? অস্ট্রেলিয়াকে তাদের দেশে টি-টোয়েন্টি সিরিজে উড়িয়ে দিয়েছে ভারত। তার পর এক-আধটায় হারলে ক্ষতি কতটুকু? মারাত্মক গুরুত্ব আমিও দিচ্ছি না। শুধু একটা ব্যাপার খচখচ করছে।
দেশে এ নিয়ে টানা তিনটে টি-টোয়েন্টি ম্যাচ হারল ধোনির টিম। শেষ দু’টো চ্যালেঞ্জিং উইকেটে, খুব খারাপ ভাবে।
দক্ষিণ আফ্রিকা সিরিজে কটক ম্যাচ আর শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে মঙ্গলবারের পুণে ম্যাচের কথা বলছি। দু’টোতেই চ্যালেঞ্জিং উইকেট, আর দু’টোতেই একশো তুলতে ধোনিদের কালঘাম ছুটে গেল। একবারও বলছি না, টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে এই ম্যাচের ন্যূনতম প্রভাব পড়বে। পিচ এতটা চ্যালেঞ্জিং হবে বলেই আমার মনে হয় না। এটাও বলছি না যে, চলতি সিরিজে এর ফলে ভারত অনেক পিছিয়ে পড়ল। বরং আমার মনে হয়, শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধেও সিরিজটা শেষ পর্যন্ত আমরাই জিতব। কারণ একই, পিচ অন্য রকম হবে। কিন্তু আমার প্রশ্ন হচ্ছে, তোমরা বিশ্বের এক নম্বর টি-টোয়েন্টি টিম। একটু কঠিন উইকেটে তোমরা পারবে না কেন? বল একটু মুভ করলে, বা বল ঠিকঠাক ব্যাটে না এলেই কেন তোমাদের বারবার বেহাল দেখাবে?
পুণের ম্যাচটা দেখে তো মনে হল না, উইকেটটা বোঝারই কারও ইচ্ছে ছিল বলে। এটা একদমই টি-টোয়েন্টি উইকেট নয়। এটা ১৩০-এর উইকেট, ১৭০ এখানে অসম্ভব। কিন্তু ভারতকে দেখে কেমন যেন মনে হল, ওরা অস্ট্রেলিয়ায় যে ভাবে খেলেছে, এখানেও সে ভাবেই খেলতে চাইছে। অস্ট্রেলিয়ায় পুরোপুরি ব্যাটিং ট্র্যাক ছিল। সেখানে যে মনোভাব নিয়ে নামা গিয়েছে, তা সব জায়গায় চলবে নাকি?
অথচ ভারতীয় ব্যাটিং লাইনআপ দেখুন। বিরাট কোহলিকে এ দিন বিশ্রাম দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু তার পরেও যারা ছিল, অনায়াসে এই শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে তাদের ম্যাচ বার করে দেওয়া উচিত। আট নম্বরে জাডেজা আসছে, নয়ে অশ্বিন— তার মানে তো ব্যাটিং লাইনআপ বিরাট। সেই টিমের কেন দশ ওভারের মধ্যে সাত উইকেট চলে যাবে! কেন তারা মধ্যের আধঘণ্টায় একটাও বাউন্ডারি মেরে চাপ কাটাতে পারবে না? কেন বিশ্রী সব শট খেলবে? রোহিত টাইমিংয়ের গণ্ডগোল করল। শিখর ক্রসব্যাটে খেলতে গেল। যুবরাজেরও ও রকম জঘন্য শট খেলার কোনও দরকার ছিল না। শর্ট পিচ বলে যুবরাজকে খুব নড়বড়ে দেখিয়েছে। আগের বলটাই হেলমেটে খেল। রায়নাকেও দেখলাম বলের ‘মেরিট’ বুঝে খেলার কোনও ইচ্ছেই দেখাল না।
``ভারতীয় ব্যাটিংয়ে ধস নামার কিছু ঘণ্টা আগে কফির কাপে চুমুক দিতে দিতে বিরাট কোহলির টুইট, ‘বাড়ির শান্ত পরিবেশ আর ডাবল এসপ্রেসো শট। সবার জন্য দিনটা খুব ভাল কাটুক।’ কোহলিবিহীন ভারতীয় ব্যাটিংয়ের দিনটা অবশ্য একেবারেই ভাল কাটল না। –পিটিআই, টুইটার``
প্রশ্ন এখানেই। এমন হেভিওয়েট টিমের কেন কোনও প্ল্যান বি থাকবে না? কেন ব্যাটসম্যান ক্রিজে নেমে বুঝবে না আজ চালানোর দিন নয়, ধরে খেলার দিন। বোলার যতই আনকোরা হোক, তাকে বুঝে খেলার দিন। শ্রীলঙ্কার যে দুই পেসার মিলে ছ’উইকেট তুলে নিয়ে গেল তাদের মধ্যে কাসুন রজিতের এ দিন আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অভিষেক হল। আর দ্বিতীয় জন, দাসুন শানাকার এটা দ্বিতীয় ম্যাচ। ভাবা যায়, তারা কি না রায়না-ধোনিদের ছেলেখেলা করে গেল! টিমের প্ল্যানিংয়েও গণ্ডগোল দেখলাম। পুণেতে দরকার ছিল বাড়তি একজন পেসার নিয়ে নামা। রবীন্দ্র জা়ডেজাকে অনায়াসে বসানো যেত। ধোনি সেটা করেনি। কিন্তু শ্রীলঙ্কা করেছে। ভারতীয় পেসারদেরও আরও একটু ভাল বল করা উচিত ছিল। শ্রীলঙ্কার পেসাররা পারলে, নেহরা-বুমরাহও বা পারবে না কেন? শ্রীলঙ্কার উইকেট পড়েছে ঠিকই, কিন্তু রানটাও উঠেছে। তার উপর কয়েকটা হাফচান্স মিস হয়েছে, সিঙ্গলসও আটকানো যায়নি। সাধারণ দিনে এ সবে অসুবিধে হয় না। কিন্তু পকেটে একশো রান নিয়ে কতটুকু আর বিলাসিতা সম্ভব?
সংক্ষিপ্ত স্কোর: ভারত ১০১ (অশ্বিন ৩১ ন.আ., শানাকা ৩-১৬)। শ্রীলঙ্কা ১০৫-৫ (চাণ্ডিমল ৩৫, অশ্বিন ২-১৩)।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy