Advertisement
E-Paper

নতুন প্রস্তাবে ভবিষ্যৎ অন্ধকার ইস্ট-মোহনের

আই লিগ আর আইএসএল মিলছে না ঠিকই, তবে ইস্টবেঙ্গল-মোহনবাগানের মতো আই লিগ খেলা ক্লাবগুলো পড়তে চলেছে তীব্র সমস্যায়। পরিস্থিতি যা তাতে আর্থিক লড়াইয়ে কর্পোরেট সংস্থার সঙ্গে জনগণের ক্লাবের এঁটে ওঠা প্রায় অসাধ্য। তাদের ভবিষ্যৎ অন্ধকার।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৮ মে ২০১৬ ০৩:৫৭

আই লিগ আর আইএসএল মিলছে না ঠিকই, তবে ইস্টবেঙ্গল-মোহনবাগানের মতো আই লিগ খেলা ক্লাবগুলো পড়তে চলেছে তীব্র সমস্যায়। পরিস্থিতি যা তাতে আর্থিক লড়াইয়ে কর্পোরেট সংস্থার সঙ্গে জনগণের ক্লাবের এঁটে ওঠা প্রায় অসাধ্য। তাদের ভবিষ্যৎ অন্ধকার।

নিলামে অংশ নিয়ে আইএসএল খেলা ইস্ট-মোহনের পক্ষে সম্ভব নয়। কারণ তাদের আর্থিক অবস্থা করুণ। তা ছাড়া ফুটবলার নেওয়ার লড়াইতেও তারা পিছিয়ে পড়বে নতুন নিয়ম চালু হলে।

কী ভাবে?

মঙ্গলবার দিল্লির পাঁচতারা হোটেলে আইএসএলের ফ্রাঞ্চাইজি এবং আই লিগের ক্লাবগুলোকে বৈঠক ডেকেছিল ফেডারেশন। উদ্দেশ্য ছিল দুই টুর্নামেন্টকে মিলিয়ে দেওয়া। কিন্তু হল ঠিক উল্টোটা। এক লিগের বদলে হয়ে গেল তিনটে টুর্নামেন্ট। আইএসএল, আই লিগ থাকলই। নতুন করে চালু হচ্ছে সুপার কাপ। ফেডারেশন কাপের পরিবর্তে। যা অবস্থা তাতে নীতা অম্বানিদের আইএসএল হবে এক নম্বর টুর্নামেন্ট। যেখানে খেলবে আটলেটিকো দে কলকাতা। আই লিগ হবে দ্বিতীয় ডিভিশন। যেখানে খেলবে ইস্ট-মোহন। আর আই লিগ-টু হবে তৃতীয় ডিভিশন।

ইস্টবেঙ্গল, মোহনবাগান কর্তারা প্রথম থেকেই গোঁ ধরেছিলেন, ফ্রাঞ্চাইজিদের মতো কোটি কোটি টাকা দিয়ে তারা আইএসএল খেলবেন না। সেই চাপের মুখে ফেডারেশন কর্তারা আই লিগটা রেখে দিলেন। কিন্তু প্রস্তাব আকারে ২০১৭-’১৮ মরসুমের জন্য যে নিয়ম চালু করতে চাইছেন প্রফুল্ল পটেল অ্যান্ড কোম্পানি, তা ইস্টবেঙ্গল, মোহনবাগান, সালগাওকর, মুম্বই এফসি-র মতো ক্লাবগুলোর পক্ষে ভয়ঙ্কর আকার নিতে পারে। কার্যত মৃত্যমুখে ঠেলে দেওয়ার ব্যবস্থা হচ্ছে আই লিগের সমর্থক সমৃদ্ধ ক্লাবগুলোকে।

প্রস্তাব যা হচ্ছে তাতে আইএসএল চলবে এখন সাত মাস ধরে। সেপ্টেম্বর থেকে মার্চ। এখন যে আটটি টিম আছে তাদের সঙ্গে যুক্ত হবে আরও দু’টি টিম। সেগুলো আসবে নিলামের মাধ্যমে। পনেরো থেকে চল্লিশ কোটি টাকা হতে পারে ফ্রাঞ্চাইজি ফি। শোনা যাচ্ছে বেঙ্গালুরু, শিবাজিয়ান্সের মতো আই লিগের কর্পোরেট ক্লাবগুলো খেলতে পারে আইএসএলে।

উঠে যাচ্ছে এখনকার ফুটবলার নেওয়ার নিয়মও। এখন ক্লাবগুলি থেকে চার মাসের জন্য মেহতাব হোসেন-জেজেদের লোনে নেয় আইএসএলের ফ্রাঞ্চাইজিরা। ফলে ক্লাবগুলির আর্থিক ভাবে লাভবান হয়। চার মাসের বেতন দেয় ফ্রাঞ্চাইজি টিম। বাকিটা দেয় ক্লাব। নতুন নিয়ম চালু হলে সারা বছরের জন্য জেজেদের নিয়ে নেবে ফ্রাঞ্চাইজিরা। ফলে ইস্টবেঙ্গল, মোহনবাগানের মতো ক্লাবগুলি ওই ফুটবলারকে আর সারা বছর পাবে না। ভাল ফুটবলার নেওয়ার জন্য টাকার লড়াইতেও তারা পেরে উঠবে না। ফলে আজহারউদ্দিন, অবিনাশ রুইদাসের মতো প্লেয়ারদের নিয়েই আগামী দিনে সন্তুষ্ট থাকতে হবে দুই প্রধানকে।

প্রস্তাবে বলা হয়েছে, আইএসএলের প্রথম চারটি ক্লাবের সঙ্গে আই লিগের প্রথম চারটি ক্লাবকে নিয়ে হবে সুপার কাপ। সুপার কাপের চ্যাম্পিয়ন এবং রানার্স টিম যাবে এএফসি টুর্নামেন্ট খেলতে। কিন্তু প্রশ্ন উঠেছে আইএসএল তো এক একটা টিমে খেলবে ছয় জন বিদেশি। যা এএফসি-র নিয়মে মানা। তা হলে তারা সুপার কাপ খেলবে কী করে? ফেডারেশনের সিদ্ধান্তে খুশি এটিকে সচিব সুব্রত তালুকদার বলছিলেন, ‘‘সুপার কাপে তো চারটে বিদেশি নিয়ে আমাদের খেলতে হবে বলে আলোচনা হয়েছে। খেলব।’’ কিন্তু আইএসএল টুর্নামেন্ট তো ফিফা অনুমোদিত নয়। তা হলে আইএসএলের প্রথম চারটে টিম কী ভাবে সুপার কাপে খেলবে? যা নিয়ে অসন্তুষ্ট ক্লাবগুলো। এই প্রস্তাব আসার পর সভায় হইচই হয় বলে খবর।

ফেডারেশনের সিদ্ধান্তগুলো এতটাই হ-য-ব-র-ল গোছের হয়েছে যে নানা প্রতিবাদ এসেছে বিভিন্ন ক্লাব থেকে। সেই জন্যই সভায় ফেডারেশন প্রেসিডেন্ট প্রফুল্ল পটেল বলেছেন, আরও এক মাস দরকার পুরো ব্যপারটা ঠিক করতে। ফেডারেশনের আনা নানা প্রস্তাবের খবর পেয়ে মোহনবাগান সচিব অঞ্জন মিত্র তাই নিজেও কিছুটা দ্বিধাগ্রস্ত। বললেন, ‘‘আমাদের প্রতিনিধি দিল্লি থেকে ফিরলে সব কাগজপত্র দেখার পরই আলোচনা করে যা করণীয় করব। আমাদের মারতে চাইলে আমরাও ছাড়ব না।’’ আর ইস্টবেঙ্গলের শীর্ষকর্তা দেবব্রত সরকার বললেন, ‘‘ফ্রাঞ্চাইজি ফি না নিলে আমরা আইএসএল খেলব। তবে ওঠানামা থাকতে হবে। সবই তো প্রস্তাব আকারে। এখনও চূড়ান্ত কিছু হয়নি। দেখি না কী হয়, তার পর যা বলার বলব।’’

East Bengal Mohan Bagan
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy