Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪
সেরাদের গ্রহে কোহালি, একান্ত সাক্ষাৎকারে বললেন ডেনিস লিলি

‘বুমরাকে দেখে জেফ থমসনের কথা মনে পড়ে যাচ্ছিল আমার’

যখন এসেছিলেন, ভারত ছিল স্পিনের দেশ। যখন অ্যাকাডেমি থেকে বিদায় নিচ্ছেন, পেস বোলার হওয়ার স্বপ্নের বীজ বোনা হয়ে গিয়েছে চতুর্দিকে। ভারতের সেই পেস-গুরু এখন নিজের শহরে বসে দেখছেন, বিরাট কোহালির দল চার পেসার নিয়ে টেস্ট খেলতে নামছে।

মুগ্ধ: বুমরার ব্যতিক্রমী বোলিং অ্যাকশনে অভিভূত লিলি। ফাইল চিত্র

মুগ্ধ: বুমরার ব্যতিক্রমী বোলিং অ্যাকশনে অভিভূত লিলি। ফাইল চিত্র

সুমিত ঘোষ
মেলবোর্ন শেষ আপডেট: ২০ ডিসেম্বর ২০১৮ ০৪:০২
Share: Save:

তিনি ভারতীয় ক্রিকেটের ‘পেস-মেকার’। যশপ্রীত বুমরা, মহম্মদ শামিদের আগমনের তিন দশক আগে ভারতে শুরু করেছিলেন পেস বোলার তৈরির কারখানা। তখনও ভারত বলতে ব্যাটসম্যান এবং স্পিনারের দেশ। একমাত্র ব্যতিক্রম কপিল দেব নিখাঞ্জ। কিন্তু কপিলও ছিলেন মিডিয়াম পেস বোলিংয়ের অনন্য শিল্পী, এক্সপ্রেস গতিতে বিপক্ষকে ভয় পাওয়ানোর মতো অস্ত্র ছিল না ভারতের হাতে। চেন্নাইয়ের এমআরএফ ফাউন্ডেশন থেকে বেরোলেন জাভাগল শ্রীনাথ, বিবেক রাজদানরা। মিডিয়াম পেসার হিসেবে বেঙ্কটেশ প্রসাদ, সুব্রত বন্দ্যোপাধ্যায়রা। ভারতীয় ক্রিকেটে শুরু হল নতুন এক অধ্যায়।

যখন এসেছিলেন, ভারত ছিল স্পিনের দেশ। যখন অ্যাকাডেমি থেকে বিদায় নিচ্ছেন, পেস বোলার হওয়ার স্বপ্নের বীজ বোনা হয়ে গিয়েছে চতুর্দিকে। ভারতের সেই পেস-গুরু এখন নিজের শহরে বসে দেখছেন, বিরাট কোহালির দল চার পেসার নিয়ে টেস্ট খেলতে নামছে। সেই দৃশ্য দেখে কেমন লাগে তাঁর? কেমন লাগছে কোহালিকে? অস্ট্রেলিয়ার বল-বিকৃতি বিতর্ক এবং আচরণ শুদ্ধিকরণের অভিযানকেই বা কী ভাবে দেখছেন তিনি?

প্রশ্ন অনেক কিন্তু উত্তর পাওয়া যাবে কী করে? মিডিয়ার সামনে যে আসেনই না সর্বকালের অন্যতম সেরা ফাস্ট বোলার এবং ৭০ টেস্টে ৩৫৫ উইকেট নেওয়া অস্ট্রেলীয় কিংবদন্তি। এমনকি, নিজের দেশের সংবাদমাধ্যমকেও দূরে দূরে রেখে দিয়েছেন। চলতি টেস্ট সিরিজেই অস্ট্রেলীয় মিডিয়ার অনুরোধেও একাধিকবার ‘না’ বলে দিয়েছেন।

আরও পড়ুন: বিরাট-পেন কথা আসলে মশকরা, বলছেন কোচ

পার্‌থ টেস্টে কোহালি সেঞ্চুরি করার দিনে খবর পাওয়া গেল তিনি মাঠে এসেছেন। কিন্তু বসেছেন অন্য ফ্লোরে, যেখানে মিডিয়ার প্রবেশাধিকার নেই। নানা বাধা টপকে তাঁর কাছে অবশেষে পৌঁছনো গেল। অনেক অনুরোধের পরে কথা বলতে রাজি হলেন, তবে ব্যস্ততার কারণে তক্ষুনি বলতে পারবেন না। পরে ফোনে সময় দেবেন। শেষ পর্যন্ত মঙ্গলবার, পার্‌থ টেস্টের শেষ দিনে ডেনিস কিথ লিলি একান্ত সাক্ষাৎকার দিলেন আনন্দবাজারকে।

আরও পড়ুন: পরীক্ষা আগে না আইপিএল, ধন্দে প্রয়াস

প্রশ্ন: আপনি যখন এমআরএফ পেস ফাউন্ডেশন কার্যত নিজের হাতে তৈরি করলেন, তখন ভারত ছিল ব্যাটসম্যান আর স্পিনারের দেশ। কী ভাবে পরিবর্তন আনা শুরু হল?

ডেনিস লিলি: আমি একটু অন্য মত হচ্ছি। এক জন ছিল। কপিল দেব। দুর্দান্ত মিডিয়াম পেস এবং সুইং বোলার ছিল কপিল দেব। সর্বকালের অন্যতম সেরা। কিন্তু সেই সময়ে এমআরএফ চাইছিল ফাস্ট বোলার তৈরি করতে। মিডিয়াম পেস-সুইং বোলিং আর ফাস্ট বোলিংয়ে কিছুটা তফাত আছে।

প্র: ভারতের তরুণ প্রতিভাদের বিশ্বাস করানো কতটা কঠিন ছিল যে, তাঁরাও পেস বোলার হতে পারেন?

লিলি: ইন্টারেস্টিং প্রশ্ন। এমআরএফ-কে কৃতিত্ব দিতে হবে যে, ওরা বুঝতে পেরেছিল ভারতের ফাস্ট বোলারও দরকার। বিশেষ করে যখন বিদেশ সফর করতে হবে। ওরা আমার কাছে জানতে চায়, ভারতে ফাস্ট বোলিং প্রতিভা স্পট করে আমি তাদের কোচিং করাতে পারব কি না। আমি জানতাম, কাজটা কঠিন। সেটা আমি ওদেরকেও বললাম। এটাও বলে দিলাম যে, দেখুন ভাই, এটা কিন্তু দীর্ঘ সময়ের ব্যাপার। রাতারাতি কিছু আশা করবেন না। আমি জানতাম, ভারতে এসে সবার প্রথমে মানসিক অবস্থানে পরিবর্তন আনতে হবে। কারণ, যে রকম আপনি বললেন, ভারত প্রধানত ছিল ব্যাটসম্যান এবং স্পিনারদের দেশ।

প্র: ছেলেদের হাতে পাওয়ার পরে কেমন অভিজ্ঞতা হল?

লিলি: একটা ব্যাপার ছিল যে, গড়পরতা ভারতীয় যুবক তখনও শক্তির দিক থেকে কোনও অস্ট্রেলীয় বা ইংল্যান্ডের যুবক, যাদের আমি কোচিং করিয়েছি, তাদের সমান ছিল না। বলতে চাইছি, বেশির ভাগ ক্ষেত্রে ভারতীয় যুবকের শরীরের গঠন সত্যিকারের ফাস্ট বোলার হওয়ার জন্য যথেষ্ট শক্তিশালী ছিল না। তাই শুধু প্রতিভাবান ছেলে খুঁজে বের করে তাদের কোচিং করলেই হচ্ছিল না, আমাকে একটা পেস বোলারের প্রোগ্রামিংও চালু করতে হল। প্রতিভা বেছে নেওয়ার পরে তাদের শক্তি বাড়ানোর প্রক্রিয়া শুরু করা হল। অনেক রকম ফিটনেস ড্রিল্‌স চালু করা হয়েছিল। সেগুলো ছেলেরা যাতে উপভোগ করে, সেটাও দেখা হত। ট্রেনিংয়ে এসে ওদের অনেক স্প্রিন্ট টানতে হত। শেষে গিয়ে সব কিছুই কাজে এসেছিল। কিন্তু আমার মনে হয় কর্তৃপক্ষ এবং কোচেদের বোঝানোটা ছেলেদের চেয়ে বেশি কঠিন হয়ে গিয়েছিল। ছেলেরা খুব উৎসাহী ছিল। ওরা স্বপ্ন দেখত, ফাস্ট বোলার হওয়ার। আর সেটাই ছিল আমার চালিকাশক্তি। ছেলেদের প্রবল উৎসাহই আমার স্বপ্নকে এগিয়ে নিয়ে যেতে সাহায্য করেছিল।

প্র: তার মানে ভারতে পেস বোলারের কারখানা বানিয়ে প্রথমেই ফিটনেস এবং শক্তির উপরে ফোকাস করেছিলেন আপনি। আজকের দিনে সেটাকেই গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে।

লিলি: হ্যাঁ, এখনকার ক্রিকেটে ফিটনেস এবং শক্তি বাড়ানোর প্রোগ্রামিং খুবই গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ হয়ে উঠেছে। এখনকার দিনে অনেকেই বুঝতে পারে যে, ফাস্ট বোলার হতে গেলে কী কী করার দরকার। আমার এখন দেখে ভাল লাগে যে, অত বছর আগে ভারতে যখন গিয়েছিলাম, এই দিকগুলোর উপর জোর দিতে শেখাতে পেরেছিলাম। এর সঙ্গে অবশ্যই আর একটা কথা বলব। ভারতীয় ছেলেদের শরীরে একটা নমনীয়তা থাকে। ফাস্ট বোলিং করতে গেলে সেটাও খুব জরুরি। সেটা আগে থেকেই ছিল।

প্র: ভারতে ফাস্ট বোলার তৈরি করতে এসে মানসিকতা বদলের কথা বলছিলেন। সেটা কী ভাবে করলেন?

লিলি: সহজ কাজ ছিল না, বুঝতেই পারছেন। মিডিয়ায় অনেক কথা বলতে হয়েছে, কোচেদের সঙ্গে বহু বার বসতে হয়েছে। জানতাম, ছেলেদের মরা উইকেটে ঘণ্টার পর ঘণ্টা ফাস্ট বোলিং করে যেতে হবে। তাই ওদের উৎসাহ দিয়ে চাঙ্গা রাখার চেষ্টা করতাম। ওদের মানসিক দিকটা তৈরি করা খুব জরুরি ছিল। ওদের বলতাম, যদি তুমি সত্যিই ভাল বোলার হও, যে কোনও পরিবেশে গিয়ে উইকেট পাবে। ভারতের পিচেও বা সফল কেন হওয়া যাবে না? ওয়েস্ট ইন্ডিজের উদাহরণ দিয়ে বলতাম, ওদের দ্যাখো। ভারতে এসেও কত উইকেট তুলেছে। এটা শুধুই মানসিকতার ব্যাপার।

প্র: ভারতে পেস বোলার তৈরির কারখানা চালু করা এক কিংবদন্তি নিজের শহরে বসে দেখছেন, ভারত আজ চার পেসারে টেস্ট খেলছে। এটা কতটা আনন্দ দিল আপনাকে?

লিলি: খুবই আনন্দদায়ক এই দৃশ্যটা। কিন্তু একটা কথা বলি— এটা কিন্তু শুধু ফাস্ট বোলার খেলানোর কথা। আসল ব্যাপারটা হচ্ছে, ভারত এখন উন্নত মানের ফাস্ট বোলার তুলে আনছে। এমনি ফাস্ট বোলার আর গুণগত মানসম্পন্ন ফাস্ট বোলার— দু’টোর মধ্যে তফাত আছে। এখন ভারতের পেস বোলিং বিভাগ এতটাই শক্তিশালী যে, ওরা যদি চার পেসার খেলাতে চায় তা হলে চার পেসারই অস্ত্রশালায় তৈরি আছে। এবং আমি যতটুকু এই সিরিজে দেখেছি, ওরা প্রত্যেকে খুব ভাল টেস্ট ম্যাচ বোলার। যে ভাবে এরা প্রথম দু’টো টেস্টে বোলিং করেছে, তা দেখে আমি খুবই প্রভাবিত। আমার মনে হয়, ওরা আর একটু ভাগ্যের সহায়তা পেতে পারত।

প্র: ভারতীয় পেসারদের মধ্যে কাকে আপনার সব চেয়ে ভাল লেগেছে?

লিলি: আমার যশপ্রীত বুমরাকে খুবই ইন্টারেস্টিং লেগেছে। খুব ছোট একটা রান-আপে ও বল করে। জগিং দিয়ে শুরু করে, তার পর খুব ছোট একটা দৌড়, তার পরেই ডেলিভারি করে দেয়। হাতটা সোজা থাকে। কোনও ভাবেই বুমরার বোলিংকে টেক্সট-বুক বোলিং বলা যাবে না। কিন্তু দারুণ কাজ দিচ্ছে। অন্য পেস বোলারদের থেকে ও আলাদা এবং সেই কারণে বুমরাকে দেখে আমার সময়কার এক ফাস্ট বোলারকে মনে পড়ে যাচ্ছে। জেফ থমসন। অবশ্যই থমসনের মতো ফাস্ট নয় বুমরা। কিন্তু মিলটা হচ্ছে, দু’জনেই প্রথাগত ফাস্ট বোলিং অ্যাকশন, ব্যাকরণবিধি এবং টেকনিকের বাইরে।

প্র: আপনার সেই ‘আর্ট অব ফাস্ট বোলিং’ সারা ক্রিকেট পৃথিবীতে উঠতি পেসারদের কাছে বাইবেলের মতো ছিল। এখনকার দিনে কতটা সেই সুন্দর টেকনিক এবং ‘আর্ট অব ফাস্ট বোলিং’ দেখতে পান?

লিলি: শুনুন, আমার সময়ের থেকে একটা উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন হয়ে গিয়েছে। আমার সময়ে সকলকে সাইড-অন অ্যাকশনে বল করতে শেখানো হত। কিন্তু পরবর্তী সময়ে নানা ভিডিয়ো বিশ্লেষণে দেখা গিয়েছে, বেশির ভাগ বোলারের ‘সেমি সাইড-অন’ বা ‘সেমি ফ্রন্ট-অন’ অ্যাকশন রয়েছে। ফাস্ট বোলিংয়ে একটা সেমি-সেমি ব্যাপার আবিষ্কার করা গেল (হাসি)। এবং এটা নতুন একটা তথ্য কারণ এর আগে ধারণাটা ছিল যে, ফ্রন্ট-অন (অর্থাৎ বুক চিতিয়ে) অ্যাকশন কারও কারও ক্ষেত্রে কাজে দিতে পারে। কিন্তু বেশির ভাগ বোলারের সমস্যা হবে। বলা হত, ম্যালকম মার্শালের মতো ‘সেমি সাইড-অন’ অ্যাকশনের বোলারদের কোমরের চোট পাওয়ার সম্ভাবনাও বেশি থাকবে। কিন্তু বাস্তবে দেখা গেল, তারা একই রকম কার্যকরী এবং কোমরের চোটও হচ্ছে না। আমার মনে হয়, বোলিং অ্যাকশন নিয়ে নতুন এই থিয়োরি অনেক পরিবর্তন এনে দিয়েছে। এখন আর ‘সাইড-অন’ অ্যাকশন খুব একটা দেখাই যায় না।

প্র: চলতি সিরিজে ভারত এবং অস্ট্রেলিয়া, দু’দলের বোলিং বিভাগকে আপনার কেমন লাগছে?

লিলি: দু’টো দলের হাতেই দারুণ পেস আক্রমণ আছে। তবে আমার মতে, নিজেদের দিনে এবং ছন্দে থাকলে অস্ট্রেলিয়ার পেস আক্রমণ এখনও ভারতের চেয়ে ভাল। আর অস্ট্রেলিয়ার ভাগ্যটাও ভাল যে, এর সঙ্গে দারুণ এক স্পিনারও ওরা পেয়েছে। যে প্রচুর ওভার বল করতে পারে, ফাস্ট বোলারদের ‘ব্যাক-আপ’ হিসেবে দারুণ কাজ করে দেবে। আমি বলব, ভারতের হাতেও খুব ভাল স্পিন-অস্ত্র আছে— অশ্বিন। মেলবোর্নে বক্সিং ডে টেস্টে আমি নিশ্চিত দু’টো দলই তিন জন করে ফাস্ট বোলার ও এক জন স্পিনার খেলাবে। দারুণ উপভোগ্য ক্রিকেট হবে মেলবোর্নে। আমি খুব আগ্রহ নিয়ে তাকিয়ে রয়েছি।

প্র: বিরাট কোহালিকে বিশ্বের সেরা ব্যাটসম্যান বলা হচ্ছে। সর্বকালের সেরাদের সঙ্গে তুলনা করা হচ্ছে। আপনি কী বলবেন?

লিলি: বিরাট গ্রেট প্লেয়ার। সকলেই সেটা জানে, তাই মনে হয় না আমাকে আর নতুন করে সেটা বলতে হবে। যেটা বিরাটকে গ্রেট করে তুলেছে, তা হচ্ছে— টেকনিক, জেদ, ব্যালান্স এবং শট খেলার জন্য নিজের হাতে অনেক সময় থাকা। অন্য সব গ্রেটদের মতো বলটা অনেক আগে দেখতে পায় বিরাট। ক্রিকেট ইতিহাসে যে কোনও বড় ব্যাটসম্যানকে বিশ্লেষণ করলে দেখা যাবে, তার এই চারটে গুণ থাকবেই— টেকনিক, জেদ, ব্যালান্স এবং বল আগে দেখতে পাওয়া। বিরাটের সব ক’টাই আছে। আমি যত বড় বড় ব্যাটসম্যান দেখেছি, তাদের মতোই ভাল বিরাট।

প্র: আপনি যাঁদের বল করেছেন, তাঁদের মধ্যে সেরা?

লিলি: বলা কঠিন। সম্ভবত ভিভ রিচার্ডস। অসামান্য ব্যাটসম্যান!

প্র: সিরিজের স্কোরলাইন ১-১। মেলবোর্ন, সিডনি নিয়ে আপনার পূর্বাভাস কী?

লিলি: সিরিজ একদম ওপেন হয়ে গিয়েছে। আমার মনে হচ্ছে, এটা সর্বকালের সব চেয়ে স্মরণীয় সিরিজগুলোর একটা হতে যাচ্ছে।

প্র: বল-বিকৃতির ঘটনা তোলপাড় ফেলে দিয়েছে অস্ট্রেলিয়াতে। আপনার কী মতামত?

লিলি: আমার কাছে, বল-বিকৃতির এপিসোডের সমাপ্তি ঘটে গিয়েছে। ঘটনাটা মোটেও ঠিক ছিল না এবং তার জন্য দোষীরা শাস্তি পেয়েছে। এ বার এগিয়ে চলো।

প্র: অস্ট্রেলীয়দের আচরণ নিয়েও অস্ট্রেলিয়াতে বিতর্কের ঝড় উঠেছে। স্লেজিং বন্ধের দাবি উঠেছে। আপনার ভোট কোন দিকে?

লিলি: অস্ট্রেলীয় বাচ্চাদের ছোট বয়স থেকে আগ্রাসী ক্রিকেট খেলতে শেখানো হয়। একেবারে অনূর্ধ্ব-১৬ বিভাগ থেকে। তার পর সেই আগ্রাসী ব্র্যান্ডটাই ক্লাব ক্রিকেট, শিল্ড ক্রিকেট হয়ে আন্তর্জাতিক মঞ্চে গিয়ে পড়ে। তাই মাথায় রাখা দরকার যে, এই ভঙ্গিটা পাল্টানো সম্ভব নয়। সেটাকে শুধু নিয়ন্ত্রণে রাখার দরকার। যুগ যুগ ধরে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে যাওয়ার মতো হলেই আমাদের সকলকেই ক্রিকেট মাঠে আম্পায়ারেরা সেটা মনে করিয়ে দিয়েছেন। সেই কারণে আমার মনে হয়, মাঠের মধ্যে আম্পায়ারদের কড়া হতে হবে। প্রয়োজন হলেই তাঁরা দুই ক্যাপ্টেনের সঙ্গে কথা বলুন এবং নিশ্চিত করুন যেন ক্যাপ্টেনদের হাত থেকে রাশ আলগা না হয়ে যায়। কখনওসখনও নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে যাওয়ার মতো অবস্থা হতে পারে, তখন আম্পায়ারদেরই আসরে নামতে হবে। আমাদের সময়ে সেটাই ঘটত। যদি আম্পায়ারদের হস্তক্ষেপেও বিষয় না মেটে, তা হলে উচ্চ কর্তৃপক্ষের কাছে যাওয়া উচিত। তবে আমি মনে করি, আম্পায়ারের হস্তক্ষেপেই ব্যাপারটা থেমে যাওয়া উচিত। আমাদের সময়ে মাঠের মধ্যে বিতর্কিত ঘটনা ঘটেছে। কিন্তু যখনই আম্পায়ার এসে বলেছেন, অনেক হয়েছে, এ বার বন্ধ করো, তখন সবাই বুঝেছে গেট বন্ধ করতে হবে। এখনও সেটাই হওয়া উচিত।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE