Advertisement
২৭ মার্চ ২০২৩
FIFA World Cup 2022

বিশ্বকাপে রাজনীতির বিতর্ক, বন্ধ হয়ে গেল সাংবাদিক বৈঠক, আমেরিকার নির্বাসন দাবি ইরানের

আমেরিকার সাংবাদিক বৈঠক ঘিরেও হতে পারত বিতর্ক। ইরানের হিজাব-বিরোধী আন্দোলন নিয়ে আমেরিকার দুই ফুটবলারকে প্রশ্ন করেন এক ইরানি সাংবাদিক। প্রশ্ন শুনেই আমেরিকা বন্ধ করে সাংবাদিক বৈঠক।

কাতার বিশ্বকাপে আমেরিকা-ইরানের রাজনৈতিক উত্তাপের আঁচ।

কাতার বিশ্বকাপে আমেরিকা-ইরানের রাজনৈতিক উত্তাপের আঁচ। ছবি: টুইটার।

নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ২৮ নভেম্বর ২০২২ ১৪:৫৩
Share: Save:

মাঠে নামার আগেই লেগে গেল আমেরিকা এবং ইরানের। জাতীয় পতাকা বিকৃত করার অভিযোগ তুলে আমেরিকাকে ১০টি ম্যাচের জন্য নির্বাসিত করার দাবি তুলল ইরান। আবার ইরানের সাংবাদিকের প্রশ্ন শুনে সাংবাদিক বৈঠক ছেড়ে উঠে গেলেন আমেরিকার দুই ফুটবলার।

Advertisement

আমেরিকা এবং ইরানের রাজনৈতিক সম্পর্ক দীর্ঘ দিন ধরেই শীতল। সেই শীতলতার আঁচ এ বার বিশ্বকাপের আসরেও। হিজাব-বিরোধী আন্দোলনে উত্তাল ইরান। প্রথম ম্যাচে ইরানের ফুটবলাররাও আন্দোলনের সমর্থনে জাতীয় সঙ্গীতের সময় মুখ বন্ধ করে রেখেছিলেন। সুযোগ বুঝে খোঁচা দিয়েছে আমেরিকাও। ইরানে নারী স্বাধীনতার দাবি সমর্থন করেছে তারা। হিজাব-বিরোধী আন্দোলনের সমর্থনে আমেরিকার ফুটবল ফেডারেশন সমাজমাধ্যমে ইরানের জাতীয় পতাকার বিকৃত ছবি দিয়েছে। পতাকা থেকে মুছে দেওয়া হয়েছে ইরানের রাষ্ট্রীয় প্রতীক। সঙ্গে লেখা হয়েছে, ‘ইরানের যে মহিলারা সাধারণ মানবিক অধিকারের জন্য লড়াই করছেন, আমরা তাঁদের পাশে রয়েছি।’

বিষয়টি নজরে আসতেই সরব হয়েছে ইরানের ফুটবল ফেডারেশন। জাতীয় পতাকার অবমাননার প্রতিবাদে ফিফার এথিকস কমিটির কাছে অভিযোগ জানিয়েছে। আমেরিকাকে কমপক্ষে ১০টি ম্যাচের জন্য নির্বাসিত করার দাবি জানানো হয়েছে। এ ক্ষেত্রে ফিফার আইনকেই হাতিয়ার করা হয়েছে। ফিফার আইনের ১৩ নম্বর ধারায় বলা রয়েছে, ‘কোনও ব্যক্তি বা কোনও দেশের মর্যাদা বা অখণ্ডতায় আঘাত করা হলে কোনও ব্যক্তি বা জনগোষ্ঠীকে ১০টি ম্যাচ বা একটি নির্দিষ্ট সময়ের জন্য নির্বাসিত করা হবে বা উপযুক্ত শাস্তি দেওয়া হবে।’

ইরানের জাতীয় পতাকার মাঝে তাদের জাতীয় প্রতীক যুক্ত করা হয় ১৯৮০ সালে। চারটি বন্ধনীর মধ্যে রয়েছে একটি তরোয়াল। ইরানের প্রতিবাদীদের অনেকের হাতেই দেখা যাচ্ছে সিংহের প্রতীক এবং সূর্য দেওয়া পতাকা। যা আসলে ইরানের প্রাক্তন শাসক শাহ মহম্মদ রেজ়ার প্রতীক এবং পতাকা। বিশ্বকাপের আসরেও ইরানের অনেক সমর্থক সিংহের প্রতীক এবং সূর্য দেওয়া পতাকা প্রদর্শন করছেন দেশের আন্দোলনকারীদের সমর্থনে। অনেকের জামায় লেখা থাকছে, ‘মহিলা, জীবন, স্বাধীনতা’। ইরানের তরফ থেকে বিশ্বকাপের আসরে এই ধরনের প্রতিবাদ বন্ধ করার জন্যও ফিফার কাছে আবেদন করা হয়েছে। ফিফার তরফে অবশ্য কোনও প্রতিক্রিয়া জানানো হয়নি। ইরানের দাবি মেনে প্রতিবাদীদের আটকানোর নির্দেশও দেয়নি ফিফা।

Advertisement

অন্য দিকে, ইরানের এক সাংবাদিক আমেরিকা দলের সাংবাদিক বৈঠকে গিয়ে বিতর্ক উস্কে দিয়েছেন। ইরানের সাংবাদিক শেরভিন তাহেরি আমেরিকার দুই ফুটবলার টিম রিয়াম এবং ওয়াকার জ়িমেরম্যানকে ইরানের মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে প্রশ্ন করেন। এই সংক্রান্ত প্রশ্ন না- করার অনুরোধ করার পরও তাহেরি উত্তরের জন্য চাপ দেন। শেষ পর্যন্ত বিশ্বকাপের সময় ফুটবলারদের বিতর্ক থেকে দূরে রাখতে সাংবাদিক বৈঠক বন্ধ করে দেন আমেরিকা ফুটবল দলের ডরেক্টর অফ কমিউনিকেশন মাইকেল কামেরম্যান।

এর আগে আমেরিকার দুই ফুটবলারকে তাহেরি প্রশ্ন করেছিলেন, ১৯৯৮ সালে শতবর্ষের বিশ্বকাপে ইরান যখন আমেরিকাকে হারিয়েছিল, তখন তাঁদের কত বয়স ছিল। জবাবে রিয়াম বলেন, ‘‘মনে হয় তখন আমার ন’বছর বয়স ছিল। অনেকটাই ছোট ছিলাম। ওই ম্যাচটা আমার তেমন মনে নেই। এটুকু বলতে পারি, সেই ম্যাচের ফলের সঙ্গে এ বারের ম্যাচের কোনও সম্পর্ক নেই।’’ জ়িমেরম্যান বলেন, ‘‘তখন আমার বয়স ছিল পাঁচ। তাই ওই ম্যাচ সম্পর্কে আমার কোনও ধারণা নেই। ২০০২ বিশ্বকাপের কিছু ম্যাচের কথা অল্প মনে আছে। সে বারই প্রথম বিশ্বকাপের খেলা দেখেছিলাম।’’ উল্লেখ্য, ৩০ নভেম্বর দুই দল কাতারে মুখোমুখি হবে গ্রুপ পর্বের খেলায়।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, Twitter এবং Instagram পেজ)
Follow us on: Save:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE
Popup Close
Something isn't right! Please refresh.