Advertisement
E-Paper

সুপ্রিম কোর্টের রায়ের আগে বোর্ডে গৃহযুদ্ধ

সুপ্রিম কোর্টের যে রায়ে আজ বৃহস্পতিবার ভারতীয় ক্রিকেটে একটা বড়সড় ঝড় আসতে পারে, সেই রায় বেরনোর আগেই গৃহযুদ্ধ লেগে গেল বোর্ডে।

চেতন নারুলা

শেষ আপডেট: ০৬ অক্টোবর ২০১৬ ০৫:১৭

সুপ্রিম কোর্টের যে রায়ে আজ বৃহস্পতিবার ভারতীয় ক্রিকেটে একটা বড়সড় ঝড় আসতে পারে, সেই রায় বেরনোর আগেই গৃহযুদ্ধ লেগে গেল বোর্ডে।

লোঢা কমিটি বোর্ডের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট নিয়ে যে নির্দেশ দিয়েছে, তা নিয়ে এমনিতেই বোর্ডের দ্বিধা-দ্বন্দ্ব তুঙ্গে। পরবর্তী আন্তর্জাতিক ম্যাচগুলো আদৌ হবে কি না, অনিশ্চয়তা তা নিয়েও। এ বার দিল্লি ক্রিকেট সংস্থার শীর্ষকর্তারা বোর্ডের নামে অভিযোগ নিয়ে সোজা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হওয়ায় বিসিসিআইয়ের অন্দরমহলেই লেগে গেল গোলমাল।

এই পরিস্থিতিতে ঘর সামাল দিতে আসরে নামলেন অনুরাগ ঠাকুর। রাজ্যসংস্থাগুলোকে চিঠি দিয়ে বোর্ড প্রেসিডেন্ট বোঝানোর চেষ্টা করছেন, লোঢা কমিশনের নির্দেশে কোথায় গরমিল আছে, কোথায় ঠিক মতো ব্যাখ্যা দেওয়া হয়নি। অনুরাগ এও লিখেছেন, বিচারপতি লোঢার নির্দেশের পর এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছিল, যেখানে নিউজিল্যান্ড সিরিজ বাতিল করার মতোও অবস্থা হয়েছিল।

দু’দিন আগে বিদর্ভ ও ত্রিপুরার ক্রিকেট সংস্থা রীতিমতো মিটিং ডেকে সিদ্ধান্ত নেয়, বোর্ডের কথা না শুনে বিচারপতি লোঢার সব সুপারিশ মেনে নেবে তারা। এ বার ডিডিসিএ-ও একই সিদ্ধান্ত নিল। তবে একটু অন্য ভাবে। চেতন চৌহানের নেতৃত্বে আটজন বোর্ড ডিরেক্টর সোজা চলে গেলেন দিল্লি হাইকোর্টে। লোঢা সুপারিশ কার্যকর করতে তাঁরা আদালতের সাহায্য চান। অন্য দিকে আবার সংস্থার দুই সচিব দীনেশ ও সুভাষ শর্মা বোর্ডকে চিঠি দিয়ে পুরো ব্যাপারটা জানিয়েছেন। বিদ্রোহীরা যাতে বেশি দূর যেতে না পারেন, সেই ব্যবস্থা নেওয়ারই অনুরোধ তাঁরা করেছেন বোর্ডকে। চৌহানদের বহিষ্কার করার দাবিও জানিয়েছেন তাঁরা। যার জেরে ফিরোজ শাহ কোটলায় আসন্ন ওয়ান ডে ম্যাচটাই অনিশ্চিত হয়ে যেতে পারে বলে অনেকের ধারণা। যার আশঙ্কা করে হাইকোর্ট নিযুক্ত পর্যবেক্ষক বিচারপতি মুকুল মুদগল ডিডিসিএ-কে পাল্টা যা লিখলেন, তার মোদ্দা কথা হল, ‘‘নিজেদের মধ্যে এমন কোনও গোলমাল বাধাবেন না, যা ওয়ান ডে ম্যাচটাকেই বানচাল করে দেয়। ম্যাচটা না হলে ডিডিসিএ-র ঘাড়ে পুরো দোষটা চাপবে।’’

রাজ্য সংস্থাগুলো এ ভাবে একের পর এক বিদ্রোহ করা শুরু করেছে দেখে বৃহস্পতিবার সুপ্রিম কোর্টের রায়ের আগে সমস্ত সংস্থাকে একজোট থাকার আবেদন জানান অনুরাগ। তাঁর লেখা দু’পাতার চিঠিতে বোর্ডের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের উপর যে বিধিনিষেধ আরোপ করেছে লোঢা কমিটি, তা নিয়ে নিজেদের অবস্থানের কথা জানান অনুরাগ। লোঢা কমিটির এই বিধিনিষেধের সমালোচনা করে বোর্ড প্রধান এই চিঠিতে লেখেন, ‘‘এই ঘটনায় শুধু বোর্ডের নয়, দেশেরও বদনাম হয়েছে। আন্তর্জাতিক মিডিয়াতেও এই খবর ফলাও করে প্রকাশ করা হয়েছে।’’ ২৯ সেপ্টেম্বর থেকে ১ অক্টোবর পর্যন্ত বোর্ড যে সমস্ত লেনদেন করেছে রাজ্য সংস্থাগুলোর সঙ্গে, সেগুলোতে হাত না লাগানোর পরামর্শই দিয়েছে বোর্ড।

কিন্তু আসন্ন আন্তর্জাতিক ম্যাচগুলো কি আদৌ হবে? এই প্রশ্নে এ দিন অনুরাগ সংবাদসংস্থাকে বলেন, ‘‘কোনও স্টেডিয়ামই বোর্ডের নিজস্ব সম্পত্তি নয়, রাজ্য সংস্থার। তারা যদি ম্যাচ করতে পারে, তারা করবে।’’ কিন্তু কোনও সংস্থার যদি নিজস্ব ফান্ড না থাকে, তা হলে ম্যাচ আয়োজন করা বেশ কঠিন হবে।

বৃহস্পতিবার সুপ্রিম কোর্টের সামনে নিজেদের বক্তব্য পেশ করবে বোর্ডের আইনিজীবীদের প্যানেল। লোঢা কমিটি তাদের স্ট্যাটাস রিপোর্টে যে দাবি তুলেছে, তা সুপ্রিম কোর্ট মেনে নিলে বোর্ডের শীর্যকর্তারা সবাই তাঁদের পদ খোয়াবেন। আদালত নিযুক্ত ব্যক্তিরা বোর্ড চালাবেন ও বোর্ডের গঠনতন্ত্রে পরিবর্তন আনার যাবতীয় দায়িত্ব নেবেন। বোর্ডের আইনজীবীরাই যুক্তি দিয়ে আদালতের সেই অবস্থান বদলাতে পারেন কি না, এখন সেটাই দেখার। অর্থাৎ লোঢাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধে বোর্ডের লড়াইয়ের শেষ দিন হয়তো বৃহস্পতিবারই। বৃহস্পতিবারটা মরার না ফের বেঁচে ওঠার, সেই দোলাচলেই এখন ভাসছেন অনুরাগ ঠাকুররা।

Inner Conflict BCCI Anurag thakur
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy