নারাইন ৫৪ রান করেন মাত্র ১৭ বলে। ইনিংসে ছ’টি চার, চারটি ছক্কা। স্ট্রাইক রেট ছিল অবিশ্বাস্য ৩১৭.৬৪। লিন এবং নারাইন দু’জনে মিলে রবিবার বেঙ্গালুরুর বিরুদ্ধে পাওয়ার প্লে-র ৬ ওভারে তোলেন ১০৫ রান। সেটাও আইপিএলের দশ বছরে কখনও হয়নি। কে জানত, উল্টো দিকে দাঁড়িয়ে ক্রিস গেল-কেও এক দিন এমন সংহার দেখতে হতে পারে।
প্রীতি জিন্টার পঞ্জাব মুলুকে যদিও লিন-নারাইন জুটির পাশাপাশি আরও একটি জুটি ফিরছে। কেকেআরের ইতিহাসে এত কাল যে জুটি সবচেয়ে সেরা ছিল। গৌতম গম্ভীর ও রবিন উথাপ্পার যুগলবন্দি। এ বার ক্রিস লিন-কে প্রথমে ওপেনিংয়ে আনার জন্য এই জুটি ভেঙে ফেলতে হয়েছিল। নীচে নেমে যেতে হয় উথাপ্পাকে। এ বার যা পরিস্থিতি, মঙ্গলবারের ম্যাচে না ব্যাটিং অর্ডারে নীচে নেমে যেতে হয় গম্ভীরকেও।
আরও পড়ুন: স্কোরবোর্ড দেখে মনে হচ্ছিল, পাগলামি হচ্ছে: কালিস
নাইট শিবিরের দিক থেকে যা ইঙ্গিত পাওয়া গেল, উথাপ্পা ফিট হয়ে গিয়েছেন। তিনি দলে ফিরতে পারেন মঙ্গলবার। কিন্তু তার চেয়েও বড় প্রশ্ন হচ্ছে, অধিনায়ক গম্ভীর এবং উথাপ্পার ব্যাটিং অর্ডার কী হতে যাচ্ছে? লিন এবং নারাইন বেঙ্গালুরুতে যে রকম তাণ্ডব চালিয়েছেন, তার পর তাঁদের ওপেনিং থেকে সরানোর কথা কেউ দুঃস্বপ্নেও ভাবছে না। সকলেই একমত, লিন-নারাইন জুটি এখন আইপিএলে সব টিমের সব বোলারের ত্রাস হয়ে দাঁড়িয়েছে। বোলারদের রাতের ঘুম কেড়ে নিয়েছেন তাঁরা। এই মনস্তাত্ত্বিক সুবিধে নিয়ে যেতে হবে। লিন-নারাইন জুটি ভাঙা কিছুতেই চলবে না। তাঁদের দিয়েই ওপেন করিয়ে যাও। দরকারে অন্য যে কারও ব্যাটিং অর্ডার পাল্টাও।
এই ফর্মুলা মানতে গেলে প্রীতি জিন্টার দলের বিরুদ্ধে তিনে নামবেন গম্ভীর, চারে উথাপ্পা। মানে দু’জনেরই ওপেনারের পদ গেল। টুর্নামেন্ট শুরুর আগে যা কেউ ভাবতেই পারেনি। এত দিন গম্ভীর-উথাপ্পা ওপেনিং জুটি যে সাফল্য পেয়েছেন, সেটাকে পুরাতন প্রস্তর যুগের ব্যাটিং মনে হচ্ছে লিন আর নারাইনের তাণ্ডব দেখার পরে। এই দু’জনের ব্যাটিং বিপ্লবে টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে পাওয়ার প্লে ব্যাটিংয়েই বিপ্লব ঘটে গিয়েছে। এখন আর গম্ভীরদের বল দেখে শুরু করাটা রণনীতি হচ্ছে না। এখন স্ট্র্যাটেজি হল, শুরুতেই ব্যাট চালাও আর যত পারো রান প্রথম ৬ ওভারে তুলে নাও।
কেকেআরের জন্য সবচেয়ে ভাল খবর হতে পারে হাসিম আমলার না থাকা। শোনা যাচ্ছে, আমলাকে দেশে ফিরে যেতে হয়েছে দেশের হয়ে খেলার জন্য। এই মরসুমে পঞ্জাবের ব্যাটিং কিংগ আমলা। কপিবুক ক্রিকেটার হয়েও তাঁর এই আইপিএলে দু’টো সেঞ্চুরিকে বলা হচ্ছে সেরা বিস্ময়। প্রীতির দলকে প্লে-অফের দৌড়ে টিকে থাকতে গেলে এই ম্যাচ জিততেই হবে। আর নাইটদের জিততে হবে প্রথম দুইয়ে থাকার সম্ভাবনা জোরাল করার জন্য।