সফল: হাফ সেঞ্চুরির পথে রবিন উথাপ্পা। ছবি: দেশকল্যাণ চৌধুরী
টেকনিক বদলে তিনি এক নতুন ব্যাটসম্যান। নতুন মানুষ। নাইটদের রবিনহুডের আসল রূপ প্রকাশ পেলে কী হয়, তা দেখল শনিবারের ইডেন।
রবিন উথাপ্পার ব্যাট থেকে যে পাঁচটা বাউন্ডারি ও চারটে ছয় দেখল ইডেনের ৫২ হাজার মানুষ, তাতে শুধু ভরপুর আনন্দ নয়, ছিল পরিপূর্ণ তৃপ্তিও। বঙ্গ বর্ষের প্রথম দিন তাঁর ব্যাটেই যেন উঠল নববর্ষের গানের সুর, ‘নব আনন্দে জাগো’।
ওপেনারের জায়গা খোয়ানোর ক্ষোভই কি উগড়ে দিলেন শনিবার?
নাহ্। রবিন উথাপ্পা সে কথা বলছেন না। ওপেনারের জায়গা হারিয়ে আফসোস বা ক্ষোভ নেই তাঁর। বরং তিনে নেমে রান পেয়ে বেশি খুশি। বললেন, ‘‘তিন নম্বর জায়গাটাই বা খারাপ কীসের? যথেষ্ট দায়িত্ব নিতে হয়। চাপ সামলানোর জন্য একজন অভিজ্ঞ ব্যাটসম্যান দরকার। ওপেনারদের কেউ ব্যর্থ হলে পুরো চাপটা এসে পড়ে তিন নম্বরের ওপরই। তাই তিন নম্বরে নামার চ্যালেঞ্জটা আমি নিয়েছিলাম।’’
টেকনিক বদলেই যে নিজেকে ফিরিয়ে আনলেন, সে কথাও জানান ম্যাচের পরে। ম্যাচ সেরার পুরস্কার নিয়ে রবিন বলেন, ‘‘গত কয়েক বছর ধরে প্রচুর পরিশ্রম করে অবশেষে নতুন টেকনিক রপ্ত করেছি। এখন মনে হচ্ছে আগে যে ভাবে বোলারদের পেটাতাম, সেই রবিন উথাপ্পাকে ফিরিয়ে আনতে পেরেছি।’’
আরও পড়ুন: বলে সুনীল ব্যাটে রবিন জেতালেন কলকাতাকে
শনিবার দর্শক-বোঝাই ইডেনে সানরাইজার্স বোলারদের একের পর এক বাউন্ডারির বাইরে আছড়ে ফেলার পরে সোমবার তাঁকে ফিরোজ শাহ কোটলায় ওপেনারের জায়গাটা ফিরিয়ে দেওয়া হতে পারে বলে অবশ্য কেকেআর শিবিরের খবর।
বৃহস্পতিবার যেমন সুনীল নারাইনকে ওপেন করতে নামিয়ে চমক দিয়েছিল নাইটরা। শনিবারও সেই ক্যারিবিয়ান স্পিনারকেই একই ভূমিকায় দেখা যায়। তবে এ দিন আর ব্যাটে তেমন রান পাননি নারাইন।
তবে নারাইনের ওপেন করতে নামা নিয়ে বিন্দুমাত্র আপত্তি নেই রবিনের। বরং বললেন ‘‘সুনীল যথেষ্ট দায়িত্ববান ছেলে। ভালই হিট করছে ও। গত ম্যাচের মতো শনিবারও উইকেটে জমতে শুরু করে দিয়েছিল। পরীক্ষাটা যে একেবারেই ব্যর্থ হয়ে গিয়েছে, তা কিন্তু নয়। আমাদের ওর পাশে দাঁড়ানো উচিত। আমরা যদি একে অন্যের পাশে না দাঁড়াই তা হলে তো সবাই নিরাপত্তার অভাব বোধ করব। আমরা ওর পাশেই আছি। আমার বিশ্বাস, সুনীল এই আস্থার দামও দেবে।’’
ফেব্রুয়ারির শেষ সপ্তাহে রবিন উথাপ্পা কলকাতায় এসে একটা হাফ সেঞ্চুরি করেছিলেন। সল্টলেকে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় মাঠে কর্নাটকের হয়ে ৫১ রান করেছিলেন বিজয় হজারে ট্রফির ম্যাচে। তার পর থেকে তাঁর ব্যাটে রানের খরা। প্রায় দেড় মাস পর সেই কলকাতাতেই ৩৯ বলে ৬৮ রানের ইনিংস।
দলের মিডল অর্ডার ব্যাটসম্যানদের দাপটে স্বাভাবিক ভাবেই খুশি অধিনায়ক গৌতম গম্ভীর। বললেন, ‘‘রবিন, ইউসুফ, মণীশরা যে ভাল ব্যাট করছে, এটাই আমাদের কাছে সুখবর। ভাল দল যে কোনও পরিস্থিতিতেই সাফল্য পায়। সে টসে যাই হোক। ওদের রশিদকে আজ বল করতে দেখেই বুঝতে পারি আমাদের কুলদীপ-নারাইনরাও পারবে। সেটাই হল।’’ ১৭২ রান তোলার পরেও যে আত্মবিশ্বাসে ভরপুর ছিল তাঁদের শিবির, তা জানিয়ে রবিন বলেন, ‘‘একবারও মনে হয়নি ম্যাচটা আমাদের হাত থেকে চলে যেতে পারে। আমাদের ১০-১২ রান কম ছিল ঠিকই। কিন্তু বোলারদের জন্য জানতাম, জিতবই।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy