চোখের জল আটকে রাখার অনেক চেষ্টা করেছিলেন। শেষ পর্যন্ত পারলেন না। পরে স্বীকারও করে নিলেন, হয়তো আটকাতে পারতেন না। নিজের পেশাদার টেনিসজীবনের শেষ ম্যাচের শেষ কিছু মুহূর্তে আবেগের কাছে হার মানলেন জো উইলফ্রেড সঙ্গা। চোখ দিয়ে অবিরাম গড়িয়ে পড়ল জলের ধারা। বাঁ হাতের কালো সোয়েটব্যান্ড দিয়ে মোছার চেষ্টা করছিলেন, কিন্তু পারছিলেন না। দৃষ্টি ঝাপসা হয়ে আসছিল। কোনও মতে ম্যাচটা শেষ করে নেটের সামনে গিয়ে হাঁটু গেড়ে বসলেন। মাথা ঠেকালেন সুরকির কোর্টে। কপালে লেগে গেল লাল লাল গুঁড়ো। সঙ্গার ভ্রূক্ষেপ নেই। ফিলিপে শাঁতিয়ের কোর্টের গ্যালারি তখন হাততালি দিয়েই চলেছে। থামার কোনও লক্ষণ নেই।
অনেক উত্থান-পতন, অনেক ব্যথা-যন্ত্রণার পর দীর্ঘ ১৯ বছরের টেনিসজীবন শেষ হল ফরাসি তারকার। চোট-আঘাতের কারণে শেষ কয়েকটা বছর ভাল করে খেলতেই পারেননি। কেরিয়ারও শেষ করলেন চোট দিয়েই। কিন্তু ফরাসিদের কাছে তিনি থেকে যাবেন স্বপ্নের ফেরিওয়ালা হিসাবেই। গ্র্যান্ড স্ল্যামে কাকে না হারিয়েছেন! রজার ফেডেরার, রাফায়েল নাদাল, নোভাক জোকোভিচ, অ্যান্ডি মারে— সবাই কোনও না কোনও সময়ে সঙ্গার কাছে পরাস্ত হয়েছেন। ২০০৮-এর অস্ট্রেলিয়ান ওপেনের ফাইনালে উঠেছিলেন সঙ্গা। সে বারই হারিয়েছিলেন নাদালকে। ফাইনালে হেরে যান জোকোভিচের কাছে। ঘটনাচক্রে যা জোকোভিচের প্রথম গ্র্যান্ড স্ল্যাম খেতাব। আজ জোকোভিচের কাছে যখন ২০টি গ্র্যান্ড স্ল্যাম রয়েছে, তখন সঙ্গার নামের পাশে সংখ্যাটি শূন্য। আসলে গ্র্যান্ড স্ল্যাম জেতার জন্য যে বাড়তি একটা তাগিদ দরকার, সেটা হয়তো কোনও দিনই সঙ্গার মধ্যে ছিল না।