Advertisement
E-Paper

কুলদীপ থাকলে হয়তো আরও আগে জয় আসত

ক্রিকেটের আসল রোমাঞ্চ যেমন অনুভব করা গেল সোমবার, অ্যাডিলেড ওভালে। স্যার ডন ব্র্যাডম্যানের শহরেই ফিরে এল ক্রিকেটের আসল গরিমা।

সম্বরণ বন্দ্যোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ১১ ডিসেম্বর ২০১৮ ০৩:১৫
ঐতিহাসিক: হতাশ লায়ন মাথা নিচু করে বসে। তাঁর লড়াই ব্যর্থ করে দশ বছর পরে অস্ট্রেলিয়ায় প্রথম টেস্ট জেতার উচ্ছ্বাস ভারতীয় ক্রিকেটারদের। ছবি: রয়টার্স।

ঐতিহাসিক: হতাশ লায়ন মাথা নিচু করে বসে। তাঁর লড়াই ব্যর্থ করে দশ বছর পরে অস্ট্রেলিয়ায় প্রথম টেস্ট জেতার উচ্ছ্বাস ভারতীয় ক্রিকেটারদের। ছবি: রয়টার্স।

আর একবার প্রমাণিত হল টেস্ট ক্রিকেটের মৃত্যু নেই। সে ইংল্যান্ড-অস্ট্রেলিয়ার মধ্যে অ্যাশেজ সিরিজ হোক বা চলতি ভারত-অস্ট্রেলিয়া সিরিজ। ক্রিকেটের আসল রোমাঞ্চ যেমন অনুভব করা গেল সোমবার, অ্যাডিলেড ওভালে। স্যার ডন ব্র্যাডম্যানের শহরেই ফিরে এল ক্রিকেটের আসল গরিমা।

টেস্টের এক এক দিনে গড়ে ২১৭ করে রান উঠতে অস্ট্রেলিয়ায় কোনও টেস্টে দেখেছি বলে মনে পড়ছে না। ভারতও অস্ট্রেলিয়ায় কোনও টেস্ট সিরিজ জয় দিয়ে শুরু করেছে বলে শুনিনি। কোনও ভারতীয় উইকেটকিপারই বা কবে এক টেস্টে ১১টা ক্যাচ ধরেছেন? তাই একাধিক দিক থেকে এই টেস্টে নতুন কিছু দেখা গেল। তবে এই টেস্টে বড় প্রাপ্তি যেটা, তা হল, পুরোপুরি বিরাট কোহালির ওপর নির্ভর না করে ম্যাচ জেতা। বিরাটের কাঁধে ভর করে জেতার অভ্যাস বোধহয় এ বার বর্জন করার চেষ্টা করতে শুরু করেছে ভারতীয় দল। একটা ছেলে আর কতই বা টানবেন ভারতকে! তাই এ বার থেকে এই অভ্যাসটা বজায় রাখতে হবে বিরাটের সতীর্থদের।

এর ফলে অবশ্য অস্ট্রেলীয় শিবিরের চিন্তাও বাড়তে পারে। ওদের বোলাররা এত দিন কোহালিকে আটকানোর ওপর বেশি জোর দিয়ে নিজেদের নীল নকশা বানাচ্ছিলেন। এখন দেখা যাচ্ছে, শুধু ভারত অধিনায়ক নন, আরও অনেককে নিয়ে নিখুঁত পরিকল্পনা করতে হবে জাস্টিন ল্যাঙ্গারদের।

যেমন চেতেশ্বর পূজারা ও অজিঙ্ক রাহানে। এঁরা যে টেস্ট ক্রিকেটের বিশেষজ্ঞ, তা সবারই জানা. কিন্তু অস্ট্রেলীয় বোলারদের বিরুদ্ধে যে এ ভাবে রুখে দাঁড়িয়ে ম্যাচ তাঁদের হাত থেকে বার করে নিতে পারবেন পূজারা-রাহানেরা, তা বোধ হয় ভাবতে পারেননি অনেকে। সেই বিরাটের ব্যাট চললে তবেই ভারতের বিজয়রথ ছুটবে, এমন ধারণাই হয়তো ছিল প্যাট কামিন্স, মিচেল স্টার্কদের। তাই ওঁরা হয়তো ভেবেছিলেন, বিরাটকে শেষ করা মানে ভারতকেও অর্ধেক শেষ করে দেওয়া। সেটা যখন হতে দিলেন না পূজারা-রাহানেরা, তখনই ওঁদের পরিকল্পনা ধাক্কা খায়।

প্রথম ইনিংসে পূজারার অসাধারণ ১২৩ ও দ্বিতীয় ইনিংসে রাহানের সঙ্গে তাঁর ৮৭ রানের পার্টনারশিপটাই এই জয়ের দুই প্রধান উপাদান বলা যেতে পারে। ওঁদের দেখে বরং অস্ট্রেলিয়ার উইকেটে ব্যাট করা শিখুক দলের অন্য ব্যাটসম্যানরা। বিশেষ করে নেথান লায়নকে যে ভাবে সামলেছেন এই দুই ব্যাটসম্যান, সেটাই শেখার মতো। বারবার লায়নের বল এগিয়ে খেলার চেষ্টা করেছেন এঁরা। যাতে অস্ট্রেলিয়ার সেরা স্পিনারের বিষাক্ত ঘূর্ণি তাঁদের পরাস্ত করতে না পারে। তাই বল উইকেটে পড়ার আগেই বা সঙ্গে সঙ্গে খেলে দেওয়ার প্রবণতা দেখা যায় ওঁদের মধ্যে।

দ্বিতীয় ইনিংসে লায়ন আরও ভয়ঙ্কর হয়ে ওঠেন উইকেট আরও ভেঙে যাওয়ায়। সে দিক থেকে আমাদের অশ্বিন কিন্তু কিছুটা পিছনেই পড়ে রইলেন। প্রথম ইনিংসে বেশি পরীক্ষা-নিরীক্ষার দিকে যাচ্ছিলেন না অশ্বিন। একই জায়গায় বল রেখে সমানে ব্যাটসম্যানদের চাপে রাখার চেষ্টা করে যান। কিন্তু দ্বিতীয় ইনিংসে ফের তাঁকে সেই পুরনো অভ্যাসেই ফিরে যেতে দেখলাম। যার ফলে লায়নের মতো অতটা কার্যকরী হয়ে উঠতে পারেননি তিনি। বিশেষ করে শেষ দিকটা। যখন অস্ট্রেলিয়া লক্ষ্যে পৌঁছনোর জন্য মরিয়া হয়ে উঠেছিল। ওঁদের টেল এন্ডাররাও অসাধারণ দক্ষতায় ব্যাটিং করে ক্রমশ এগিয়ে যাচ্ছিলেন, তখন অশ্বিনের কাছ থেকে যে ধারালো বোলিংটা আশা করেছিলাম, সেটা পেলাম না। হয়তো কুলদীপ যাদব থাকলে ম্যাচটা আরও আগে শেষ হয়ে যেত। কুলদীপের ঘূর্ণি সামলে এত দূর রানটাকে টেনে নিয়ে যেতে পারত কি না অস্ট্রেলিয়া, সন্দেহ আছে। অস্ট্রেলিয়ার টেল এন্ডাররা বরাবরই এ রকম মরিয়া. মাটি কামড়ে পড়ে থাকার অভ্যাসটা ওদের বরাবরই রয়েছে। আগেও শেন ওয়ার্ন, জেসন গিলেসপিদের দেখেছি, এখন এই কামিন্স, লায়নদেরও দেখলাম। মানসিকতাটা একই রকমের আছে।

Cricket Kuldeep Yadav India Vs Australia Adelaide
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy