Advertisement
১৮ এপ্রিল ২০২৪

খুলনা টাইটান্সকে ফের জয় এনে দিলেন বোলার মাহমুদুল্লাহ

একটা সময়ে ‘অফ স্পিনার’ই তাঁর প্রধান পরিচয় ছিল। ওয়ানডে হোক বা টেস্ট— বাংলাদেশ ক্রিকেট দলে ওই পরিচয়েই নিজের জায়গা করে নিয়েছেন। ২০০৯-এ সেন্ট ভিনসেন্ট-এর টেস্টে অভিষেক ইনিংসেই ৫ উইকেট নিয়ে নিজের জাত চিনিয়েছিলেন তিনি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
ঢাকা শেষ আপডেট: ১৩ নভেম্বর ২০১৬ ০০:২৪
Share: Save:

একটা সময়ে ‘অফ স্পিনার’ই তাঁর প্রধান পরিচয় ছিল।

ওয়ানডে হোক বা টেস্ট— বাংলাদেশ ক্রিকেট দলে ওই পরিচয়েই নিজের জায়গা করে নিয়েছেন। ২০০৯-এ সেন্ট ভিনসেন্ট-এর টেস্টে অভিষেক ইনিংসেই ৫ উইকেট নিয়ে নিজের জাত চিনিয়েছিলেন তিনি।

অথচ, সেই মাহমুদুল্লাহকেই ২০১৫-র বিশ্বকাপে ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে মনে হয়েছে, যেন বোলিং-এ মন নেই তাঁর। জাতীয় দলে ব্যাটিং অর্ডারে প্রোমোশন পেয়ে সাত থেকে চারে থিতু হয়েছেন। কিন্তু, শেষ ন’টি ওয়ানডে ম্যাচে মাত্র দু’বার তাঁর হাতে বল তুলে দিয়েছেন অধিনায়ক মাশরফি। মুশফিকুর রহিম টেস্ট অধিনায়ক হয়েও তার বোলিং সাপোর্ট নিচ্ছেন না। ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে শেষ টেস্ট সিরিজে শুধু চট্টগ্রামেই বল হাতে দেখা গিয়েছে মাহমুদুল্লাহকে। তা-ও মাত্র দুটো ছোট স্পেলে। দুই ইনিংসে তিন বার করে। অথচ বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ (বিপিএল)-এ নিজের সেই পুরনো ফর্মে দেখা যাচ্ছে খুলনা টাইটান্স-এর অধিনায়ক মাহমুদুল্লাহকে। আশ্চর্য হলেও সত্যি, বিপিএল-এর শেষ ওভার থ্রিলারে একই ঘটনা পর পর দু’বার ঘটিয়েছেন। তিন দিন আগে রাজশাহি কিংস-এর টার্গেট যখন ৬ বলে ৭ রান, তখন গর্জে উঠেছে মাহমুদুল্লাহর বল। শেষ ওভারে আবুল হাসান রাজু ড্যারেন স্যামি এবং নাজমুল অপুকে আউট করে ৩ রানের অবিশ্বাস্য জয় পেয়েছে খুলনা কিংস।

শনিবার ফের আরও এক বার। চিটাগাং ভাইকিংস-এর তখন দরকার এক ওভারে ৬ রান। আর হাতে রয়েছে চারটি উইউকেট। এমন অবস্থায় তাদের স্বপ্নভঙ্গ করেছেন মাহমুদুল্লাহ। শেষ ওভারে তিন তিনটি শিকার। ওভারের প্রথম বলে মহম্মদ নবি সিঙ্গল নিয়ে যখন বাঁ হাতি চতুরঙ্গা সিলভাকে দিয়েছেন স্ট্রাইক, তখনই ম্যাচে ফেরার উপায় পেয়েছেন ওই অফ স্পিনার। অফ স্ট্যাম্পের বাইরে ওইয়াড ডেলিভারি দিয়ে চতুরঙ্গাকে ফাঁদে ফেলতে চেয়েছেন। সেই ফাঁদে পা-ও দিয়েছেন শ্রীলঙ্কার ওই ব্যাটসম্যান। তাঁর জায়গায় বাঁ-হাতি রাজ এসে পরের বলে রান নিতে পারেননি। চতুর্থ ডেলিভারিতে লং অনে ক্যাচ দিয়ে ফিরে গিয়েছেন রাজ। শেষ ২ বলে চিটাগাং ভাইকিংস-এর যখন ৫ রান দরকার, তখন পঞ্চম বলে বাউন্ডারি ছাড়া উপায় ছিল না নবির। কিন্তু, সে আশায় জল ঢেলেছেন মাহমুদুল্লাহ। শেষ বলে যখন ছয় প্রয়োজন, অফ স্ট্যাম্পের বাইরের বলে পুল শটে সে চেষ্টাও করেন নবি। কিন্তু, মিড উইকেটে দাঁড়িয়ে থাকা অলোক কাপালির হাতে জমা পড়ে যায় বল। টানটান উত্তেজনায় গর্জে ওঠা মাহমুদুল্লাহই খুলনা টাইটান্সকে ফের জয় এনে দিলেন।

ম্যাচ শেষে সফল ওই বোলার বলেন, ‘‘৬ বলে ৬ রান। উইকেটে তখন যে দু’জন ছিলেন, তাঁরা দু’জনই সেট ব্যাটসম্যান। তাই ওই সময়ে বল হাতে নিয়ে খুব নার্ভাস লাগছিল। হাত ঘেমে যাচ্ছিল! ধরেই নিয়েছিলাম, ম্যাচটা হেরে গিয়েছি। নবিকে যতটা কম স্ট্রাইক দেওয়া যায়, সেই চেষ্টা করেছি। চতুরঙ্গার উইকেটটা ওই সময় খুব গুরুত্বপূর্ণ ছিল। প্রথম বলটা ডট হওয়ার পর আস্তে আস্তে আত্মবিশ্বাস ফিরে পাই।’’

৮ মাস আগে টি-২০ বিশ্বকাপে বেঙ্গালুরুতে ভারতকে হারানোর সহজ সুযোগ হাতছাড়া করেছেন এই মাহমুদুল্লাহ। ৩ বলে ২ রানের সহজ টার্গেটে দাঁড়িয়ে মুশফিকুরের দেখাদেখি হার্দিকের পরের বলে লং অনে ক্যাচ দিয়েছেন। সেই অপরাধবোধ এখনো তাড়িয়ে বেড়ায় মাহমুদুল্লাহকে। তাঁর কথায়, ‘‘সারা জীবন মনে থাকবে ওটা।’’ এর পরেই মাহমুদুল্লাহের সংযোজন, ‘‘যদি আমি দলে থাকি, চেষ্টা করব আমার সেরাটা দেওয়ার।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Mahmudullah
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE