পাক অলিম্পিয়ান মাহুর শাহজাদ। ছবি: টুইটার।
পিভি সিন্ধুর কাছে হেরে ভারতকে হিংসে করছেন মাহুর শাহজাদ। কমনওয়েলথ গেমসে ব্যাডমিন্টনের মিক্সড টিম ইভেন্টে ভারতের কাছে হেরেছে শাহজাদের পাকিস্তান। তাঁর উপলব্ধি, পাকিস্তানে ভারতের মতো খেলাধুলোর পরিকাঠামোই নেই।
শাহজাদ বলছেন, ভারতের মতো আধুনিক পরিকাঠামো পেলে অনেকটা এগোতে পারে পাকিস্তানের ব্যাডমিন্টন। সে জন্য দরকার দু’দেশের রাজনৈতিক সুম্পর্ক। কমনওয়েলথ গেমসে কেন পারছে না পাকিস্তান? কোথায় পিছিয়ে পাকিস্তানের ব্যাডমিন্টন? শাহজাদ জানিয়েছেন তাঁর দেশে কোনও পরিকাঠামোই নেই। বলেছেন, ‘‘পাকিস্তানে একটাও আধুনিক প্রশিক্ষণ কেন্দ্র নেই। অথচ ভারতের একাধিক শহরে আন্তর্জাতিক মানের অ্যাকাডেমি রয়েছে। পাকিস্তানে এখনও কোনও ক্রীড়া সংস্কৃতি তৈরি হয়নি। যেটুকু হয়েছে, সেটা ক্রিকেটকে ঘিরে। ব্যাডমিন্টন নিয়ে পাকিস্তানে আগ্রহও নেই। আমরা নিজেদের আগ্রহে অনুশীলন করি।’’
কেন এমন বেহাল দশা পরিকাঠামোর? শাহজাদ বলেছেন, ‘‘আমাদের দেশ অর্থনৈতিক সমস্যার মধ্যে রয়েছে। খেলাধুলোয় গুরুত্ব দেওয়ার তেমন সুযোগ নেই। সরকার ব্যস্ত গরিব মানুষদের সাহায্য করতে। তাদের অর্থনৈতিক উন্নতিতে। আশা করব, আমাদের দেশ দারিদ্রের সমস্যা থেকে মুক্ত হলে সরকার খেলাকে গুরুত্ব দেবে।’’
দেশে প্রয়োজনীয় সুযোগ-সুবিধা না থাকায় প্রশিক্ষণ নিতে আসতে চেয়েছিলেন ভারতে। তা-ও সম্ভব হয়নি। এ জন্য দু’দেশের তিক্ত রাজনৈতিক সম্পর্কের দিকে আঙুল তুলেছেন শাহজাদ। নিজের অভিজ্ঞতার কথা জানিয়ে বলেছেন, ‘‘২০১৯ সালে আমরা কয়েক জন খেলোয়াড় ভারতে প্রশিক্ষণ নিতে যাওয়ার চেষ্টা করেছিলাম। কিন্তু আমাদের ভিসা দেওয়া হয়নি। দু’দেশের সম্পর্কের উন্নতি হলে আমরা ভারতে গিয়ে প্রশিক্ষণ নেওয়ার সুযোগ পেতে পারি।’’
ভারতের কাছে হারের মধ্যে অবাক হওয়ার কিছু নেই বলেই মনে করেন তিনি। শাহজাদ বলেছেন, ‘‘ব্যাডমিন্টনে ভারত এখন বিশ্বের অন্যতম সেরা দল। গত কমনওয়েলথ গেমসে চ্যাম্পিয়ন। ভারতের খেলোয়াড়দের কাছে আমাদের অনেক কিছু শেখার রয়েছে। বিশ্বের সেরা খেলোয়াড়দের বিরুদ্ধে খেললে শেখা যায়।’’
সিন্ধুর কাছে ২১-৭, ২১-৬ ব্যবধানে ব্যক্তিগত পরাজয় প্রত্যাশিত বলেও জানিয়েছেন পাক শাটলার। টোকিয়ো অলিম্পিক্সে অংশ নেওয়া ব্যাডমিন্টন খেলোয়াড় বলেছেন, ‘‘সিন্ধু প্রাক্তন বিশ্বচ্যাম্পিয়ন। অলিম্পিক্সে রুপোর পদক জিতেছে। সিন্ধুর শটের বৈচিত্র অনেক বেশি। কোর্টে গতি বেশি। কী শট মারবে সব সময় অনুমান করা যায় না।’’ হারলেও সিন্ধুর খেলা দেখে শেখার চেষ্টা করেছেন শাহজাদ। সিন্ধুর ম্যাচে পাওয়া শিক্ষা পরের ম্যাচগুলোয় প্রয়োগ করতে চান তিনি।
কমনওয়েলথ গেমসে অংশ নিতে পারবেন সেই নিশ্চয়তাও ছিল না পাকিস্তানের ব্যাডমিন্টন খেলোয়াড়দের। পাকিস্তান স্পোর্টস বোর্ড (পিএসবি) প্রথমে ব্যাডমিন্টন দলকে না পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেয়। টাকার অভাবে দল পাঠাতে রাজি ছিল না পিএসবি। গেমস শুরুর কয়েক দিন আগে স্পনসর পাওয়ায় বার্মিংহ্যামে আসতে পেরেছেন শাহজাদরা। ব্যাডমিন্টনে পাকিস্তানের এক মাত্র অলিম্পিয়ান বলেছেন, ‘‘এখানে সব দেশের আট জন করে খেলোয়াড় এসেছে। অথচ আমাদের মাত্র চার জন্য এসেছে। আমি শুধু সিঙ্গলসই খেলি। কিন্তু এখানে ডাবলস, মিক্সড ডাবলসও খেলতে হবে।’’
২০২৪ প্যারিস অলিম্পিক্সেও নামতে চান ২৬ বছরের ব্যাডমিন্টন খেলোয়াড়। যদিও জানেন না খেলাধুলো চালিয়ে সম্ভব হবে কি না। শাহজাদ বলেছেন, ‘‘পাকিস্তানে কেউ খেলতে আসতে চায় না। আমরা বেশি আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলতে পারি না। আমাদের উন্নতির কোনও সুযোগ নেই। একটা জায়গাতেই আটকে রয়েছে আমাদের ব্যাডমিন্টন।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy