মোহনবাগানের বিরুদ্ধে গোলের পরে এদু-কাতসুমি। এআইএফএফ ও
মোহনবাগানের বিরুদ্ধে গোল করেই খুয়াম লুমপাক স্টেডিয়ামের গ্যালারির দিকে ছুটলেন এদুয়ার্দো ফেরেইরা। পিছনে কাতসুমি ইউসা। এর পরে তিনি কোলে তুলে নিলেন জাপানি তারকাকে। দুই তারকার অভিব্যক্তিতেই উপেক্ষার জবাব দেওয়ার তৃপ্তি।
কাতসুমি ও এদুয়ার্দোকে বছর দু’য়েক আগে দল থেকে ছেঁটে ফেলেছিলেন সবুজ-মেরুন কর্তারা। শুক্রবার তাঁরাই খেতাবি দৌড়ে মোহনবাগানকে আরও পিছিয়ে দিলেন। ম্যাচের সেরার পুরস্কার নিয়ে এদুয়ার্দো বললেন, ‘‘মোহনবাগান বড় দল। তাই আমার জীবনে এই জয় স্মরণীয় হয়ে থাকবে।’’
আই লিগ জয়ের স্বপ্ন বাঁচিয়ে রাখার জন্য নেরোকা এফসি-র বিরুদ্ধে এ দিন ইম্ফলে জিততেই হত মোহনবাগানকে। শুরু থেকেই আক্রমণের ঝড় তোলেন দিপান্দা ডিকারা। নেরোকার প্রথম থেকেই লক্ষ্য ছিল, রক্ষণ সামলে আক্রমণে ওঠা। কিন্তু এদুয়ার্দোর দাপটে ছন্দ হারিয়ে ফেললেন ডিকা। নিষ্প্রভ হয়ে পড়েন আজহারউদ্দিন মল্লিক। বল দখলের লড়াইয়ে ঠোঁট ফেটে রক্তাক্ত হওয়ার পরেও হার মানেননি তিনি।
শুধু রক্ষণ সামলানো নয়, এদুয়ার্দোর গোলেই এগিয়ে যায় নেরোকা। ম্যাচের ২৪ মিনিটে কাতসুমির কর্নারে মাথা ছুঁইয়ে নেরোকা-কে এগিয়ে দেন তিনি। ব্যর্থ আজহারকে তুলে শেখ ফৈয়জকে নামান শঙ্করলাল চক্রবর্তী। মোহনবাগানকে ম্যাচে ফেরান হেনরি কিসেক্কা। ৬৩ মিনিটে ড্যারেন ক্যালডেইরার মাইনাস থেকে হেড করে ১-১ করেন তিনি। যদিও সবুজ-মেরুন শিবিরে স্বস্তি দীর্ঘস্থায়ী হয়নি। ছয় মিনিটের মধ্যেই ফের ধাক্কা। এ বার গোল করেন এরিন গ্লেন উইলিয়ামস।
নেরোকার দু’টি গোলের ক্ষেত্রেই দায়ী মোহনবাগানের ডিফেন্ডারেরা। দশ ম্যাচে ১২ গোল খেয়েছে সবুজ-মেরুন রক্ষণ। যা প্রশ্ন তুলে দিচ্ছে সবুজ-মেরুন কোচের রণকৌশল নিয়েও। কারণ, আই লিগের দশটি ম্যাচ হয়ে যাওয়ার পরেও মোহনবাগানের ডিফেন্ডারদের মধ্যে বোঝাপড়ার অভাব স্পষ্ট।
এদুয়ার্দো গোল করেন প্রথম পোস্টের সামনে থেকে হেড করে। মোহনবাগানের ডিফেন্ডারেরা বাধা দেওয়ার চেষ্টাই করেননি তাঁকে। দ্বিতীয় গোলের সময় যে ছবিটা ফুটে উঠল তা আরও ভয়ঙ্কর। কর্নার থেকে উড়ে আসা বল ধরে সুভাষ সিংহ মোহনবাগানের গোল লক্ষ্য করে মারেন। কিসেক্কা-সহ মোহনবাগানের চার-পাঁচ জন ফুটবলার তখন ছয় গজ পেনাল্টি বক্সের ভিতরে দাঁড়িয়ে। অথচ তাঁদের কাউকেই দেখা গেল না বল বিপন্মুক্ত করার চেষ্টা করতে। গোললাইন পেরোনোর ঠিক আগে বলে পা ছোঁয়ান উইলিয়ামস।
নেরোকার বিরুদ্ধে হারের পরেই সোশ্যাল মিডিয়ায় সবুজ-মেরুন সমর্থকদের একাংশ কোচের পদত্যাগের দাবি তুলতে শুরু করেন। কেউ কেউ ক্ষোভ প্রকাশ করেন চোটের জন্য ছিটকে যাওয়া সনি নর্দেকে নিয়েও। তাঁদের মতে, সনির পরিবর্তে বিদেশি ডিফেন্ডার নিলে এই হাল হত না। মোহনবাগানের এক প্রাক্তন তারকা বলছেন, ‘‘১০ ম্যাচে ১৫ পয়েন্ট মোহনবাগানের। এই পরিস্থিতিতে শুধু জিতলেই হবে না, হারতে হবে অন্য দলগুলোকে। বাস্তবে তা হওয়া কঠিন।’’
মোহনবাগান: শঙ্কর রায়, অরিজিৎ বাগুই, এজে কিংসলে, গুরজিন্দর কুমার, আজহারউদ্দিন মল্লিক (শেখ ফৈয়জ), ইউতা কিনোয়াকি, ড্যারেন ক্যালডেরইরা (মেহতাব হোসেন), ওমর এলহুসেইনি, দিপান্দা ডিকা ও হেনরি কিসেক্কা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy