জাডেজার মারা ওই একটা ছয়ের কাছে ম্লান হয়ে গেল রাসেলের এমন একটা ইনিংস।
রবীন্দ্র জাডেজার মারা ছয়টা গ্যালারিতে উড়ে যাওয়ার পরে টিভি-তে এক ঝলক শাহরুখ খানের হতাশ মুখটা ভেসে উঠল। কলকাতা নাইট রাইডার্সের মালিকের কি তখন একবারের জন্য হলেও গৌতম গম্ভীরের কথা মনে পড়ছিল?
চেন্নাই সুপার কিংসের সঙ্গে এই ম্যাচে মনে রাখার মতো অনেক মুহূর্তই ছিল। কিন্তু খেলার পরে সব কিছু ছাপিয়ে একটা মুখই ভেসে উঠছে। দীনেশ কার্তিকের! ব্যাটসম্যান নয়, অধিনায়ক কার্তিকের কথা বলছি। কেকেআর অধিনায়ককে দেখে মনে হচ্ছিল, পুরোপুরি বিভ্রান্ত। আইপিএলের মতো বড় মঞ্চে এ বারই প্রথম অধিনায়কত্ব করছে। সেটার চাপই যেন নিতে পারল না। না হলে শেষ ওভারে কেউ বিনয় কুমারকে বল করতে আনে?
আগের ম্যাচেই রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালোরের বিরুদ্ধে ইডেনে শেষ ওভার বল করতে এসে ১৬ রান দিয়েছিল বিনয়। চেন্নাই ম্যাচেও প্রথম ওভার বল করতে এসে ১৬ রান দিয়ে যায়। ১৯ নম্বর ওভার পর্যন্ত আর বল করেনি। আত্মবিশ্বাস একেবারে ছিল না। ম্যাচ থেকে প্রায় হারিয়ে গিয়েছিল। সেই বিনয়কে কেন ২০ নম্বর ওভারে বল দেওয়া হবে? শেষ ওভারে জয়ের জন্য দরকার ছিল ১৭ রান। প্রথম বলটাই নো আর ওভারবাউন্ডারি। ওখানেই ম্যাচটা বেরিয়ে যায়। গম্ভীর কিন্তু সুনীল নারাইনকে ঠিক শেষ তিন ওভারের মধ্যে একটা ওভারে নিয়ে আসত। আর নারাইন হয় উইকেট তুলে, না হয় রান আটকে চাপ বিশাল বাড়িয়ে দিত। এখানে নারাইনকে ১৬ ওভারের মধ্যে শেষ করে দিল কার্তিক। কুলদীপ যাদবের এক ওভারও বাকি থেকে গেল। টি-টোয়েন্টিতে ভুল করার জায়গা যে খুবই কম, আরও একবার বোঝা গেল।
বিধ্বংসী: ৩৬ বলে অপরাজিত ৮৮ রান আন্দ্রে রাসেলের। ছবি: পিটিআই
রাসেল ওর ৩৬ বলে অপরাজিত ৮৮ রানের ইনিংসে ১১টি ছয় মেরেছে। কলকাতা শুধু ওর জন্যই ২০২ তুলতে পারল। কিন্তু জাডেজার মারা ওই একটা ছয়ের কাছে সব ম্লান হয়ে গেল। হারিয়ে গেল রাসেলের এমন একটা ইনিংস। পাশাপাশি চেন্নাইয়ের বিলিংসের কথাও বলতে হয়। পাঁচ নম্বরে নেমে ২৩ বলে ৫৬ করল। ইনিংসে রয়েছে পাঁচটি ওভারবাউন্ডারি। ধোনি (২৮ বলে ২৫) আটকে গেলেও বিলিংস দলকে লক্ষ্যের কাছে নিয়ে আসে।
সিএসকে-র বিরুদ্ধে রাসেলের ব্যাটিং নিয়ে একটা কথা বলতে চাই। ও পুরোপুরি ‘পাওয়ার হিটার’। অর্থাৎ শারীরিক শক্তির ওপর নির্ভর করে শটগুলো খেলে। বেশির ভাগ শট নেওয়ার সময়ই দেখছিলাম, রাসেলের বাঁ পা লেগ স্টাম্পের অনেক বাইরে চলে যাচ্ছিল। আর ডান পা নিয়ে আসছিল অফ স্টাম্পের ওপর। ফলে লং অন থেকে ডিপ মিড উইকেট— এই পুরো অঞ্চল জুড়ে শট খেলার জায়গা তৈরি করতে পারছিল। রাসেল বটম হ্যান্ড ব্যাটসম্যান। মানে শট খেলার সময় যে ব্যাটসম্যান নীচের হাতের শক্তি ব্যবহার করে। রাসেলের ক্ষেত্রে যেটা ওর ডান হাত। ‘বটম হ্যান্ড ব্যাটসম্যান’ বলে বলগুলো ও ভাবে তুলে মারতে পারছিল। যে জন্য বাউন্ডারির চেয়ে বেশি ওভারবাউন্ডারি রাসেলের ইনিংসে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy