ইস্টবেঙ্গল প্রস্তুতিতে আমনা।—নিজস্ব চিত্র।
আল আমনা একাই কী ইস্টবেঙ্গল? প্রশ্ন তুলে দিলেন কিংসলে ওবুমেনেমে। ‘‘আমনা ভাল ফুটবলার। কিন্তু ও একা তো খেলবে না। আমরা শুধু ওকে থামানোর কথা ভাবব কেন? পুরো ইস্টবেঙ্গলকেই আটকাবো।’’ শুক্রবার অনুশীলনের পর বলে দিলেন মোহনবাগানের নাইজিরিয়ান স্টপার।
গতবার আইজল এফ সি-কে আই লিগ চ্যাম্পিয়ন করার পিছনে আমনার মতোই খালিদ জামিলের সেই দলে অপরিহার্য ছিলেন কিংসলে। এ বার খালিদ এবং আমনা দু’জনেই তাঁর বিপক্ষে! রবিবারের ডার্বিতে তাদের হারানোর জন্যই নামবেন কিংসলে। এবং সবথেকে যেটা তাৎপর্যপূর্ণ তা হল, আমনা এবং খালিদ-কে যথাক্রমে ‘ভাল ফুটবলার’ বা ‘বুদ্ধিমান কোচ’ বললেও কিংসলে তাদের আলাদা করে ভাবতে নারাজ।
আমনা সম্পর্কে তাঁর বক্তব্য, ‘‘ও একা নয়, ইস্টবেঙ্গলের পুরো টিমটাই আমাদের চেয়ে অনেক অভিজ্ঞতায় এগিয়ে।’’ আর ইস্টবেঙ্গল কোচ ডার্বিতে কতটা ফ্যাক্টর জানতে চাইলে সঞ্জয় সেনের বিদেশি স্টপার বললেন, ‘‘খালিদ বুদ্ধিমান কোচ। জানে কী ভাবে রণনীতি তৈরি করতে হয়। কিন্তু আমাদের কোচও যথেষ্ট অভিজ্ঞ। তিনিও জানেন কী ভাবে ম্যাচ
জিততে হয়।’’
চব্বিশ ঘণ্টা আগেই মোহনবাগান স্ট্রাইকার আনসুমানা ক্রোমা বলেছিলেন, ‘‘আমনাকে আটকাতে পারলেই ইস্টবেঙ্গল শেষ।’’ সেই মাঠে দাঁড়িয়েই কেন উল্টো পথে হাঁটলেন ক্রোমার দলেরই স্টপার কিংসলে? দু’টো কারণ শোনা যাচ্ছে। এক) আমনা, আমনা করে ভাবতে গিয়ে ডিফেন্ডারদের ফোকাস সীমাবদ্ধ করতে চাইছে না মোহনবাগান। দুই) আমনাকে জোনাল মার্কিংয়ে রাখার পরিকল্পনাই বহাল থাকছে কলকাতা লিগের শেষ ডার্বির সময়ের শিলিগুড়ি-মডেল মেনেই।
যুবভারতীতে এ দিন মোহনবাগান অনুশীলন ছিল মূলত রক্ষণ সংগঠিত করার জন্য। চোট পাওয়া জাপানি মিডিও ইউটা কিনওয়াটিকে রবিবার পাওয়া গেলে কী ভাবে মাঝমাঠ সাজানো হবে বা না গেলে মাঝমাঠের সংগঠন কেমন হবে, দু’রকম প্রস্তুতিই নেওয়া হল। পাঁচ ধরনের কর্নার ও ফ্রি কিক অনুশীলনও করানো হল। সব কর্নার এবং ফ্রি কিক-ই অবশ্য করছিলেন সনি নর্দে। সেখান থেকেই স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে, আমনার পিছনে ডাকটিকিটের মতো লাগানো
হবে না কাউকে।
সেই পরিকল্পনার কথা অবশ্য এ দিন সামনে আনতে চাননি কিংসলে থেকে গোলকিপার শিল্টন পাল অথবা সহকারী কোচ শঙ্করলাল চক্রবর্তীরা। রবিবার যুবভারতীতে যে বাইশজন খেলবেন তাদের মধ্যে সবথেকে ডার্বি-অভিজ্ঞ শিল্টন পাল যেমন বলে দিয়েছেন, ‘‘এই ম্যাচে কেউ ফেভারিট নয়। সেটা কাটিয়ে যে ভাল খেলতে পারবে, সেই জিতবে।’’ তেমনই শঙ্করলাল বলছেন, ‘‘ইস্টবেঙ্গলের পুরো টিমটাই ভাল। ওদের কীভাবে হারানো যায় তার পরিকল্পনা চলছে।’’
ডার্বির ইতিহাসে প্রথমবার দুপুর দুটোয় ম্যাচ দেওয়া হয়েছে। ইস্টবেঙ্গল প্রতিদিন সকাল ন’টায় অনুশীলন করলেও সঞ্জয় সেনের টানা তিন দিনই দুপুরে অনুশীলন করেছে বা করবে। এর পিছনে রহস্যটা কী তা অবশ্য এ দিন সামনে এনে দিয়েছেন শঙ্করলাল। বলে দিলেন, ‘‘খাওয়ার সময়ের পরিবতর্নের অভ্যাসটা বদল করতেই এই সিদ্ধান্ত। কারণ ম্যাচটা পড়েছে দুপুরেই।’’ এতে কী কোনও বাড়তি সুবিধা পাবে মোহনবাগান? কিংসলের মন্তব্য, ‘‘বলা মুশকিল। তবে আইজলে আমরা দুপুরে নিয়মিত ম্যাচ খেলেছি। আমার কোনও
সমস্যা নেই।’’
রক্ষণ সংগঠনের সময় এবং টিম মিটিংয়ে এ দিন মোহনবাগান কোচকে বারবার বলতে শোনা গিয়েছে, ‘‘এক সেকেন্ডের জন্য মনসংযোগ নষ্ট করা যাবে না। আমরা বারবার শেষ মিনিটে গোল খেয়ে যাচ্ছি। সেটা যেন না হয়।’’ পঞ্জাব মিনার্ভা ম্যাচে শেষ মুহুর্তে গোল হজমের প্রসঙ্গ তুললে কিংসলেকে বেশ বিব্রত মনে হল। বলে দিলেন, ‘‘কলকাতা লিগের পর টিমে সাতজন নতুন ফুটবলার ঢুকেছে। আরও তিন-চারটে ম্যাচ লাগবে সংগঠিত হতে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy