Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

সুপ্রিম কোর্টে ধাক্কা খেয়েও জেটলির আদালতে ভাল জায়গায় শ্রীনিবাসন

দেশের সর্বোচ্চ আদালতে সোমবার নারায়ণস্বামী শ্রীনিবাসন বড়সড় ধাক্কা খেলেন। আইপিএল কেলেঙ্কারি নিয়ে পূর্ণাঙ্গ রিপোর্ট জমা করতে মুদগল কমিশন যে আরও দু’মাস চেয়ে পেয়ে গেল তাই নয়, বোর্ডের প্রেসিডেন্ট পদে তাঁকে পুনর্বহাল করার যে আবেদন শ্রীনি করেছিলেন, সুপ্রিম কোর্টে সেটাও খারিজ হয়ে গেল। কোর্ট বলে দিল, মুদগল কমিটির ছাড়পত্র না পেলে বোর্ডে ঢুকতে পারবেন না তিনি।

নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ০২ সেপ্টেম্বর ২০১৪ ০১:৩৫
Share: Save:

দেশের সর্বোচ্চ আদালতে সোমবার নারায়ণস্বামী শ্রীনিবাসন বড়সড় ধাক্কা খেলেন। আইপিএল কেলেঙ্কারি নিয়ে পূর্ণাঙ্গ রিপোর্ট জমা করতে মুদগল কমিশন যে আরও দু’মাস চেয়ে পেয়ে গেল তাই নয়, বোর্ডের প্রেসিডেন্ট পদে তাঁকে পুনর্বহাল করার যে আবেদন শ্রীনি করেছিলেন, সুপ্রিম কোর্টে সেটাও খারিজ হয়ে গেল। কোর্ট বলে দিল, মুদগল কমিটির ছাড়পত্র না পেলে বোর্ডে ঢুকতে পারবেন না তিনি।

অরুণ জেটলির আদালতে সোমবার এতটুকু ধাক্কা খেলেন না নারায়ণস্বামী শ্রীনিবাসন। জেটলির সমর্থন তিনি যেমন আগে পেয়েছেন, এখনও পাচ্ছেন। এবং সমস্যার সমাধানে দেশের অর্থমন্ত্রীর দ্বারস্থ এখন ভারতীয় বোর্ড। আগামী চব্বিশ ঘণ্টা যা খোঁজা চলবে।

সহজে সুপ্রিম কোর্টে ধাক্কা খেয়েও সোমবার জেটলির কোর্টে প্রবল ভাবে অ্যাডভান্টেজ শ্রীনি।

অরুণ জেটলি বোর্ডের এখন কোনও পদে নেই। কিন্তু পদে না থাকলেও বোর্ডে এখনও তিনিই প্রথম এবং শেষ লোক। কারণ তিরিশ ভোটের মধ্যে এগারোটা নিয়ন্ত্রণ করেন জেটলি। এবং জেটলি এখনও মনে করেন, শ্রীনিরই উচিত বোর্ড চালানো। বোর্ডের সর্বময় পদে তিনি অপসারিত প্রেসিডেন্টকেই আবার দেখতে চান। শোনা গেল, সুপ্রিম কোর্টে যতই ধাক্কা খান, বোর্ড সদস্যরাও শ্রীনির দিকে। একান্তই যদি বোর্ড নির্বাচনে শ্রীনি দাঁড়াতে না পারেন, তা হলেই একমাত্র তাঁর পরিবর্ত কাউকে ভাবা হবে। রাজীব শুক্ল-র নাম শোনা যাচ্ছে। কিন্তু তিনি এলেও নাকি ক্ষমতায় আসবেন ‘কম্প্রোমাইজিং ক্যান্ডিডেট’ হিসেবে। অর্থাৎ, একান্ত নিরুপায় হয়ে দাঁড়াতে না পারলেও সেক্ষেত্রে রিমোট কন্ট্রোল থেকে যাবে শ্রীনির হাতেই।

বোর্ডের আইনজীবীরা সুপ্রিম কোর্টে সোমবারই একদফা চেষ্টা করেছিলেন শ্রীনিকে ফেরানোর। বলা হয়, সামনেই বোর্ড নির্বাচন। বার্ষিক অ্যাকাউন্টস পাশ করাতে শ্রীনির সইসবুদ প্রয়োজন। শ্রীনিকে তাই বোর্ডের দৈনন্দিন কাজকর্মে ফেরানো হোক। বিচারপতি টি এস ঠাকুর এবং ইব্রাহিম খলিফুল্লাহ-র স্পেশ্যাল বেঞ্চ সে সবে কর্ণপাত করেনি। বরং বলে দেওয়া হয়, অ্যাকাউন্টসে সই করাটা কোনও ব্যাপার নয়। ওটা কোনও ভিত্তিই নয় শ্রীনিকে ফেরানোর আবেদন মঞ্জুর করার। বোর্ডের আইনজীবী কপিল সিব্বল তখন আবেদন করে বলেন যে, মুদগল কমিটির রিপোর্টে শ্রীনির বিরুদ্ধে কোনও তথ্যপ্রমাণাদি আছে কি না, সেটা অন্তত বলা হোক। রিপোর্টে শ্রীনির নামে কিছু না থাকলে তা হলে তাঁকে বোর্ড মসনদে বসার অনুমতি দেওয়া হোক। স্পেশ্যাল বেঞ্চ তখন পাল্টা বলে যে, রিপোর্টে এখনও পর্যন্ত কিছু নেই। কিন্তু তদন্ত এখনও শেষ হয়নি। আরও সময় দেওয়া হয়েছে। কারণ ক্রিকেটাররা এখন ইংল্যান্ডে। কারও কারও ‘ভয়েস স্যাম্পেল’ নেওয়া বাকি। শ্রীনিকে তাই এখনই বোর্ডে ফেরার অনুমতি দেওয়া যাবে না।

সব দেখেশুনে বোর্ডমহলে প্রশ্ন উঠে পড়ে বার্ষিক সভার ভবিষ্যৎ তা হলে কী হবে? নিয়ম অনুযায়ী, ৩০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে বোর্ড বার্ষিক সভা করতে বাধ্য। কিন্তু সেটা করতে গেলে শ্রীনি-র দাঁড়ানো কত দূর সম্ভব? রাতের দিকে ২০০৬ সালের বোর্ড নির্বাচন পিছনোর দৃষ্টান্ত দিয়ে কেউ কেউ বললেন, শ্রীনির সামনে এখন দু’টো রাস্তা আছে।

এক) নির্বাচন সময়েই ডেকে কাউকে ‘শিখণ্ডী’ হিসেবে দাঁড় করানো। রাজীব শুক্ল-র নাম যে কারণে শোনা যাচ্ছে।

দুই) মাদ্রাজ হাইকোর্টে বোর্ড নির্বাচন পিছনোর আবেদন করা।

একটা অংশের মতে, অবস্থা সুবিধের বুঝলে সোমবারই হয়তো বোর্ডের আইনজীবীরা নির্বাচন পিছনোর আবেদন সুপ্রিম কোর্টে করে বসতেন। কিন্তু পরিস্থিতি যেহেতু বেগতিক ছিল, তাই আর সেটা করা হয়নি। সুপ্রিম কোর্ট নাকচ করে দিলে মাদ্রাজ হাইকোর্টে আবেদনের রাস্তাটাও বন্ধ হয়ে যেত। বোর্ড এমনিতে তামিলনাড়ু সোসাইটি রেজিস্ট্রেশন অ্যাক্টের নথিভুক্ত। তাই মাদ্রাজ হাইকোর্টে আবেদন করে বোর্ড নির্বাচন পিছনোর একটা রাস্তা খোলা থাকছে শ্রীনিবাসনের। মাদ্রাজ হাইকোর্টের রায় মনমতো না হলে শ্রীনি সেটা নিয়ে সুপ্রিম কোর্টেও তখন যেতে পারবেন। এবং যাবতীয় ডামাডোলের মধ্যে শ্রীনি যেটা চাইছেন, সেটা হয়ে যাবে। বোর্ড নির্বাচন পিছিয়ে যাবে। ৩০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে তখন আর করা নাকি অসম্ভব হয়ে দাঁড়াবে। কেউ কেউ আবার হিসেব দিলেন, ব্যাপারটা পিছনো দরকার আর দশটা দিন। তা হলেই সব শেষ! কারণ নিয়ম অনুযায়ী, ১৫ সেপ্টেম্বরের মধ্যে বার্ষিক সভার দিন ঘোষণা করতে হবে। আর সেটাও করতে হবে ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠক ডেকে। যা ডাকতে অন্তত সাত দিনের নোটিশ দিতে হয়। ইমার্জেন্ট ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠক এক্ষেত্রে ডাকা সম্ভব নয়, কারণ অ্যাজেন্ডা একটা নয়। বার্ষিক সভার ক্ষেত্রে সেটা একাধিক। বলা হচ্ছে, বার্ষিক সভা সেপ্টেম্বরের শেষে হতে হলে, আগামী ৫-৬ সেপ্টেম্বরের মধ্যে কিছু না কিছু ঘটতে হবে। নইলে সভা হওয়া মুশকিল।

এই বাজারে শ্রীনি বিরোধীরা? শোনা গেল, তাঁরা নাকি সুপ্রিম কোর্টের দিকে শুধু তাকিয়ে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE