স্টিভ ওয় মনে করছেন, অস্ট্রেলিয়ায় প্রথম বার টেস্ট সিরিজ জেতার এটাই সেরা সুযোগ ভারতের সামনে। অ্যাডিলেডে ৬ ডিসেম্বর শুরু হচ্ছে প্রথম টেস্ট। তার আগে স্টিভ বলছেন, ‘‘এ বার ভারতের সামনে ভাল রকম সুযোগ থাকছে সিরিজ জেতার। ওরা নিশ্চয়ই দীর্ঘ সময় ধরে এই মুহূর্তটার জন্য তৈরি হয়েছে। আমার মনে হয় এ বারে খুবই হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হবে।’’
অস্ট্রেলীয় বোলারদের সামনে সব চেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ বিরাট কোহালি। দুরন্ত ফর্মে থাকা ভারত অধিনায়ক অস্ট্রেলিয়ায় রান করতে ভালবাসেন। চার বছর আগে চার টেস্টে তিনি চারটি সেঞ্চুরি করেছিলেন। কোহালিকে নিয়ে স্টিভের মন্তব্য, ‘‘বিরাট অসাধারণ এক ক্রিকেটার। বড় মঞ্চে, মোক্ষম মুহূর্তে জ্বলে উঠতে পছন্দ করে। ঠিক তেন্ডুলকর আর লারার মতো।’’ অস্ট্রেলিয়ার ক্রিকেট ইতিহাসে অন্যতম সেরা অধিনায়ক যোগ করছেন, ‘‘এই ধরনের বড় ক্রিকেটারেরা বড় সিরিজের জন্য মুখিয়ে থাকে। বড় মঞ্চে ওরা নিজেদের সেরাটা তুলে ধরতে চায়।’’ তবে স্টিভ মনে করছেন, ভারতের অন্যান্য ব্যাটসম্যানেরাও ভাল এবং সব বিভাগ মিলিয়েই কোহালির দল বেশ সমীহ করার মতো।
শুধু স্টিভ ওয়ই নন, কোহালি সম্পর্কে প্রশংসা শোনা গিয়েছে আরও কয়েক জন প্রাক্তন অস্ট্রেলীয়ের মুখে। অ্যাডাম গিলক্রিস্ট যেমন বলেছেন, ‘‘এই মুহূর্তে বিশ্বের সেরা ক্রিকেটার বিরাট কোহালি। এ নিয়ে কোনও সন্দেহই নেই। ভারতীয় দল চাইবে, তাদের অধিনায়কের ব্যাটে রানের ঝড় চলুক। তবে তার পাশাপাশি, দু’দলেরই প্রত্যেক ব্যাটসম্যানের সামনেই আলাদা আলাদা চ্যালেঞ্জ থাকবে।’’ বিশ্বের সর্বকালের অন্যতম সেরা উইকেটকিপার-ব্যাটসম্যানের কথায়, মিচেল স্টার্ক, প্যাট কামিন্স, জশ হেজ্লউডকে নিয়ে তৈরি অস্ট্রেলীয় বোলিং আক্রমণে ভারতীয় ব্যাটসম্যানদের সমস্যায় ফেলার মতো গোলাবারুদ মজুত আছে। ‘‘প্যাট কামিন্স অসাধারণ। হেজ্লউড অনেকটা ম্যাকগ্রার মতো। মিচেল স্টার্ক রয়েছে। এই তিন জন এবং রিজার্ভে থাকা আরও দু’তিন জন বেশ উচ্চ মানের ফাস্ট বোলার।’’
আরও পড়ুন: বিরাট-বাণ, অস্ট্রেলিয়াকে তো চিনি!
এক প্রাক্তন অস্ট্রেলীয় ফাস্ট বোলারের মুখে অবশ্য ভারতীয় জোরে বোলারদের কথা বেশি শোনা গিয়েছে। তিনি— জেফ লসন বলে দিচ্ছেন, ভারতের এই বোলিং বিভাগ দীর্ঘকালের মধ্যে তাঁর দেখা অন্যতম সেরা আক্রমণ। নিজের সময়ে অস্ট্রেলিয়ার অন্যতম সেরা ফাস্ট বোলার লসন বলছেন, ‘‘ভারতের হাতে দুর্ধর্ষ কয়েক জন ফাস্ট বোলার রয়েছে। এত ভাল বোলিং গ্রুপ আমি দীর্ঘকাল দেখিনি। এর সঙ্গে ওদের দলে ভাল স্পিনারও আছে, যারা বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই নিজেদের কাজটা ঠিক করে দেবে।’’ প্রসঙ্গত, ভারতীয় দলের হেড কোচ রবি শাস্ত্রী মন্তব্য করেছিলেন যে, বর্তমান পেস আক্রমণই ভারতীয় ক্রিকেটে সর্বকালের সেরা। তা নিয়ে মিডিয়ার একাংশে প্রশ্ন তোলা হলেও দেখা যাচ্ছে, লসন মোটামুটি একমত।
আরও পড়ুন: এক ওভারে ২৬ তুলে ঝোড়ো সেঞ্চুরি, তৈরি বিজয়
ভারতীয় পেসারদের নিয়ে আলাদা করে কথা বলতে গিয়ে লসন যোগ করছেন, ‘‘ইশান্ত শর্মাকে শেষ বার যখন এখানে দেখেছিলাম, অতিরিক্ত বাউন্স আদায় করে নিয়েছিল। উমেশ যাদব অভাবনীয় কিছু ডেলিভারি করতে পারে। মহম্মদ শামি দারুণ সুইং করায়। ভুবনেশ্বর কুমার সুইং করায়। ওরা হয়তো একসঙ্গে চার পেসার খেলাবে না। সম্ভবত তিন পেসারের সঙ্গে এক বা দু’জন স্পিনার নামাবে।’’ মূলত আশির দশকে খেলে টেস্ট ক্রিকেটে লসন ১৮০ উইকেট পেয়েছেন। অ্যাডিলেডে সিরিজ শুরু করাটাও ভারতের পক্ষে যাবে বলে মনে করছেন তিনি। ‘‘যত দূর মনে হয়, ভারতীয় দলও চেয়েছিল অ্যাডিলেডে প্রথম টেস্ট খেলতে। সেটা ওদের পক্ষেই যাবে। ওদের চার জন দ্রুতগতিসম্পন্ন ভাল পেসার আছে। যাদের প্রত্যেকের হাতে অতিরিক্ত গতি রয়েছে। আমি দুর্দান্ত একটা সিরিজ দেখতে পাব বলেই আশা করছি।’’
টেস্ট সিরিজ শুরুর আগে প্রস্তুতি ম্যাচের স্কোরকার্ড যদিও বোলারদের নিয়ে সামান্য চিন্তায় রাখছে। একমাত্র শামি ছাড়া কেউ খুব একটা সাফল্য পাননি। শামি, উমেশ, ইশান্ত, অশ্বিন সকলেই অনেক ওভার বল করেন। তবে অধুনা ভারতের এক নম্বর পেস অস্ত্র যশপ্রীত বুমরা এবং ভুবনেশ্বর কুমার প্রস্তুতি ম্যাচে খুব একটা বেশি বোলিং করেননি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy