চাঁদু বোর্ডে (প্রাক্তন অধিনায়ক ও নির্বাচক প্রধান)
তিনি ভারতের হয়ে পঞ্চান্ন টেস্ট খেলেছেন। দেশের অধিনায়কত্ব করেছেন। জাতীয় নির্বাচক কমিটির চেয়ারম্যানের দায়িত্বও পালন করেছেন। কিন্তু তাঁর ৪০ বছরের বেশি মাঠ ও মাঠের বাইরের ক্রিকেট জীবনে এমন ঘটনা কখনও দেখেননি চাঁদু বোর্ডে। যেখানে দল থেকে বাদ পড়া ক্রিকেটারকে ডেকে বলতে হচ্ছে, কেন তাঁকে বাদ দেওয়া হয়েছে। আর সেটা না হলেই শুরু হয়ে যাচ্ছে বিতর্ক।
আপনি তো অধিনায়ক থেকে নির্বাচক প্রধান, সবই ছিলেন। কখনও কোনও বাদ পড়া ক্রিকেটারকে গিয়ে বলেছেন, কেন তিনি বাদ পড়েছেন? বুধবার দুপুরে পুণেতে ফোনে ধরা হলে প্রশ্নটা শুনে প্রথমে একটু থমকালেন বোর্ডে। তার পরে বললেন, ‘‘আমাদের সময় এ সব হত না। আমরা ক্রিকেটারের দক্ষতা, ফর্ম বিচার করে দল বাছতাম। কেউ বাদ যাওয়া মানে, হয় সে খারাপ খেলছে, না হয় তার দলে প্রয়োজন নেই, ব্যাস। এটা সে নিজেও বুঝতে পারত, বাকিরাও বুঝে নিত। আলাদা ব্যাখ্যা দেওয়ার কোনও প্রয়োজন ছিল না।’’
ভারতীয় দল থেকে করুণ নায়ার, মুরলী বিজয় বাদ যাওয়ার পরে নতুন বিতর্ক দেখা দিয়েছে। সংশ্লিষ্ট ক্রিকেটারেরা অভিযোগ করেছেন, নির্বাচক মণ্ডলী বা ভারতীয় দল পরিচালন সমিতির কেউ, তাঁদের সঙ্গে এ ব্যাপারে কথা বলেননি। কেন তাঁরা বাদ পড়েছেন বা তাঁদের ভবিষ্যৎ কী, তা নিয়েও কিছু জানানো হয়নি। যা শুনে অবাক বোর্ডের পাল্টা প্রশ্ন, ‘‘এ সব কি এখন নিয়ম হয়ে গিয়েছে নাকি? আমাদের সময় তো কেউ কোনও ব্যাখ্যা দিত না।’’
ক্রিকেটার হিসেবে ছন্দে থাকা অবস্থায় বাদ পড়ার দুঃসহ অভিজ্ঞতা আছে বোর্ডেরও। নিউজিল্যান্ডের মাটিতে ১৯৬৮ সালে ভারতের প্রথম বিদেশে টেস্ট সিরিজ জয়ে উল্লেখযোগ্য অবদান থাকলেও তার পরের বছর ভারতীয় দল থেকে বাদ পড়তে হয়েছিল বোর্ডেকে। এমনকী তার পরের বছর অধিনায়ক হিসেবে বোর্ডের নাম ঘোরাফেরা করলেও তাঁকে দলেই ফেরানো হয়নি। সে প্রসঙ্গ উঠতেই প্রাক্তন অলরাউন্ডার যেন একটু বিষণ্ণ হয়ে পড়লেন। একটু থেমে বলে উঠলেন, ‘‘আজও আমি জানি না, কেন বাদ পড়েছিলাম। কেউ কোনও ব্যাখ্যা দেয়নি। দল নির্বাচন হওয়ার পরে শুনেছিলাম, বাদ গিয়েছি।’’
একই ভাবে একটা টেস্টে নেতৃত্ব দেওয়ার পরে সরে যেতে হয়েছিল বোর্ডেকে। কেন? সেটাও জানেন না তিনি। বলছিলেন, ‘‘জানি না। পটোডি (মনসুর আলি খান) বাইরে থাকায় নেতৃত্ব দিই। পরের টেস্টে পটোডি ফিরে আসায় আমাকে সরে যেতে হয়। তখনও এই নিয়ে আমাকে কেউ ব্যাখ্যা দেয়নি।’’ পটৌডির সঙ্গে আপনার সম্পর্ক নিয়ে অনেক কথা শোনা যায়! বলতে না বলতেই হালকা হেসে প্রসঙ্গ বদলে ফেলেন বোর্ডে।
ক্রিকেট থেকে অবসর নেওয়ার পরে নির্বাচকের দায়িত্ব নিয়েছিলেন বোর্ডে। হয়েছিলেন নির্বাচক প্রধান। বলছিলেন, ‘‘আমি চেয়ারম্যান থাকার সময় সুনীল গাওস্কর, কপিল দেব থেকে শুরু করে সচিন তেন্ডুলকর, সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় সবাই ভারতের অধিনায়ক ছিল। ওদের সঙ্গে কাজ করতে হয়েছে।’’
দল থেকে কাউকে ছেঁটে ফেলা নিয়ে এই মহাতারকা অধিনায়কদের সঙ্গে কখনও মনোমালিন্য বা রাগারাগি হয়েছে? বোর্ডের মন্তব্য, ‘‘কাউকে বাদ দিতে হলে আমরা নির্বাচনী সভায় তাকে নিয়ে আলোচনা করতাম। কেন বাদ দেওয়া হচ্ছে, তা নিয়ে অধিনায়কের সঙ্গে কথা বলতাম। তার পর সিদ্ধান্ত নেওয়া হত। আমাদের তর্কাতর্কি হত ঠিকই, কিন্তু তার রেশ সভার বাইরে থাকত না। কারণ আমরা ফর্ম আর দক্ষতার বিচারেই সিদ্ধান্ত নিতাম। আর সে জন্য পরে কাউকে ব্যাখ্যা দিতে হত না।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy