Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪
Tokyo Olympics

Tokyo Olympics : চিন্তা নিয়েই অলিম্পিক্সে যাচ্ছেন বাংলার জিমন্যাস্ট প্রণতি নায়েক

ভল্টে ব্যর্থ হয়ে গত রিও অলিম্পিক্সে চতুর্থ হয়েছিলেন দীপা কর্মকার। সেই দীপাও তাঁর বোনকে পরামর্শ দিয়েছেন।

কাজটা কঠিন হলেও স্বপ্ন দেখছেন প্রণতি নায়েক।

কাজটা কঠিন হলেও স্বপ্ন দেখছেন প্রণতি নায়েক। ফাইল চিত্র

সব্যসাচী বাগচী
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৭ জুলাই ২০২১ ১৬:৫২
Share: Save:

জাতীয় দলের প্রশিক্ষক লক্ষ্মণ শর্মার সঙ্গে শনিবার রাতেই দেশ ছাড়ছেন। লক্ষ্য প্রথম বার অলিম্পিক্সে নেমেই আর্টিস্টিক জিমন্যাস্টিক্সের অলরাউন্ড বিভাগে পদক জয়। তবে তাঁর এই স্বপ্ন পূরণ হবে কিনা সেই ব্যাপারে আশ্বস্ত হতে পারছেন না ২০১৯ সালে এশীয় আর্টিস্টিক জিমন্যাস্টিক্সে ব্রোঞ্জ জেতা প্রণতি নায়েক

আক্ষেপ করে প্রণতি বলছেন, “গেমস ভিলেজে পা রাখার আগে একটু চিন্তা তো হচ্ছেই। একে তো প্রথম অলিম্পিক্স, এর মধ্যে ঠিকঠাক অনুশীলনের সুযোগ পেলাম না। করোনা ও লকডাউনের জন্য প্রায় এক বছর গ্রামের বাড়িতে থাকতে হয়েছিল। পরে কলকাতার সাইতে (স্পোর্টস অথরিটি অব ইন্ডিয়া) এসে অনুশীলন করেছিলাম। এমন প্রতিযোগিতায় ভাল ফল করার জন্য অন্তত পাঁচ মাস নিবিড় অনুশীলন প্রয়োজন। সেখানে মাত্র দুই মাস সাইতে অনুশীলন করলাম। তাই চিন্তা কমছে না। এই সময় যতটা ফুরফুরে থাকার কথা তেমন খোলা মনে থাকতে পারছি না।”

অলিম্পিক্সে দল এবং ব্যক্তিগত বিভাগে নামবেন প্রণতি। চারটি ইভেন্টে তাঁকে লড়াই করতে হবে। ফ্লোর এক্সারসাইজ়, আনইভেন বার্‌স, ব্যালান্স বিম এবং ভল্ট। এই ভল্টে ব্যর্থ হয়ে গত রিও অলিম্পিক্সে চতুর্থ হয়েছিলেন দীপা কর্মকার। সেই দীপাও তাঁর বোনকে পরামর্শ দিয়েছেন। দীপার পরামর্শ মেনে টোকিয়ো যাওয়ার আগে প্রণতি ফ্রন্ট ৫৪০ এবং ব্যাক ৫৪০ দুটো ভল্টের উপরে জোর দিয়েছিলেন।

২০১৯ সালে এশীয় আর্টিস্টিক জিমন্যাস্টিক্সে ব্রোঞ্জ জেতার পর প্রণতি নায়েক। ফাইল চিত্র।

২০১৯ সালে এশীয় আর্টিস্টিক জিমন্যাস্টিক্সে ব্রোঞ্জ জেতার পর প্রণতি নায়েক। ফাইল চিত্র।

আর কী পরামর্শ দিয়েছেন দীপা? প্রণতি বলছেন, “ফ্লোর এক্সারসাইজ় থেকে শুরু করে ভল্ট নিয়ে অনেক পরামর্শ দিয়েছে দিদি। পয়েন্ট বাড়ানোর জন্য বাড়তি চেষ্টা করলে অনেক সময় চোট পাওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়। সেই দিকটাও খেয়াল রাখতে বলেছে। আমিও সেটা বিশ্বাস করি। কারণ এই অলিম্পিক্স তো আমার জীবনের শেষ প্রতিযোগিতা নয়। সুস্থ থাকলে দেশের হয়ে এশিয়ান গেমস, কমনওয়েলথ গেমসে নামতে পারব।”

টোকিয়ো যাওয়ার আগে আরও একটি সমস্যায় পড়েছিলেন প্রণতি। ছোটবেলার প্রশিক্ষক মিনারা বেগম এখন আর তাঁর সঙ্গে নেই। মিনারা সাই থেকে অবসর নিয়ে ফেলেছেন। এ দিকে মিনারার দাবি তাঁকে চক্রান্ত করে ছেঁটে ফেলা হয়েছে। কিন্তু প্রণতি এই প্রসঙ্গ নিয়ে মন্তব্য করতে নারাজ।

ছোটবেলার প্রশিক্ষক মিনারা বেগমের সঙ্গে প্রণতি। ফাইল চিত্র।

ছোটবেলার প্রশিক্ষক মিনারা বেগমের সঙ্গে প্রণতি। ফাইল চিত্র।

তবে প্রিয় ছাত্রীর প্রসঙ্গ উঠলেই আবেগপ্রবণ হয়ে পড়েন এই জিমন্যাস্টি প্রশিক্ষক। তিনি বলছেন, “আমি সঙ্গে থাকলে প্রণতির আত্মবিশ্বাস আরও বাড়ত। তাই টোকিয়ো না যাওয়ার জন্য আক্ষেপ তো থাকবেই। ওর জয় দেখতে চাই।”

দীপা পারেননি। আগামী কয়েকটা দিন প্রণতির সামনে অপেক্ষা করছে কঠিন লড়াই। এই কয়েকটা দিন তাঁর জীবনের গতি প্রকৃতি বদলে দিতে পারে। তাই অল্প অনুশীলন করার সুযোগ পেলেও পদক জেতার স্বপ্ন দেখতে ছাড়ছেন না পশ্চিম মেদিনীপুরের পিংলা থেকে উঠে আসা এই অ্যাথলিট।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE