দলের খেলায় বিরক্ত সিএবি কর্তারা। ফাইল চিত্র
জোড়া বিপর্যয়। সৈয়দ মুস্তাক আলি টি-টিয়েণ্টি পর বিজয় হজারেতেও ভরাডুবি। একরাশ লজ্জা ও ব্যর্থতা নিয়ে এ বারের ঘরোয়া ক্রিকেট মরসুম শেষ করল বাংলা। অন্য রাজ্যগুলো যখন বাইরে গিয়ে দাপটের সঙ্গে খেলছে, তখন অনুষ্টুপ মজুমদারের দল ঘরের মাঠে লাগাতার দুটো প্রতিযোগিতায় একরাশ লজ্জা উপহার দিল। তাও আবার ঘরের মাঠ ইডেন গার্ডেন্সে। তাই হরিয়ানার বিরুদ্ধে হারার পরেই দলের প্রধান কোচ অরুণ লালকে তলব করলেন সিএবি প্রধান অভিষেক ডালমিয়া। সেখানে দুই সচিব স্নেহাশিস গঙ্গোপাধ্যায় ও দেবব্রত দাসের উপস্থিতিতে প্রায় ৩০ মিনিটের বেশি বৈঠক চলে। ক্রিকেটারদের মধ্যে ইতিবাচক মানসিকতা অভাব থেকে শুরু করে ফিটনেসের ঘাটতির জন্যই এই বিপর্যয় হয়েছে। সেটাই নাকি কর্তাদের তুলে ধরেছেন লাল জি।
তবে শুধু জরুরি তলব করে ক্ষান্ত থাকছেন না কর্তারা। ক্রিকেটারদের মানসিকতা নিয়েও চরম বিরক্ত সিএবি কর্তারা। তাই খুব দ্রুত এই জোড়া বিপর্যয়ের ময়নাতদন্ত করা হবে বলে জানা গিয়েছে। অবশ্য সেটা স্বাভাবিক। কোভিড পরিস্থিতির মধ্যেও দলকে তৈরি করার বিন্দুমাত্র খামতি করেননি কর্তারা। তবুও সৈয়দ মুস্তাক আলি প্রতিযোগিতার পর বিজয় হজারেতেও মুখ থুবড়ে পড়লেন অভিমন্যু, ঈশানরা।
বেশ ক্ষোভের সঙ্গে অভিষেক ডালমিয়া বললেন, “দলের সামগ্রিক ফলে আমরা আশাহত। এই মরসুম শুরু হওয়ার আগে কোভিড পরিস্থিতির মধ্যেও দলকে একজোট করার জন্য সিএবি একাধিক প্রয়াস করেছে। তাই এমন ফল আশা করতে পারছি না। কিন্তু দলের কোথায় সমস্যা হচ্ছে সেটাও তো জানতে হবে। তাই আগামী কয়েকদিনের মধ্যে কোচ ও অধিনায়কের সঙ্গে এই বিষয়ে বিস্তারিত কথা বলব। ওঁদের সঙ্গে আলোচনা করার পরেই আগামী মরসুমের রূপরেখা তৈরি করা হবে।”
বাংলা ক্রিকেটের উন্নতির জন্য অধুনা বিসিসিআই প্রধান সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় সিএবি সচিব থাকার সময় ‘ভিশন ২০২০’ শুরু করেছিলেন। ভিভিএস লক্ষ্মণ এই প্রকল্পের সঙ্গে এখনও যুক্ত। যদিও এতে লাভের লাভ কি আদৌ হচ্ছে? ডালমিয়া বললেন, “এই প্রকল্প নিয়ে আমরা নতুন করে চিন্তাভাবনা শুরু করছি। সেই জন্য এই প্রকল্পের নাম ‘ভিশন ২০২৫’ দেওয়া হয়েছে। জুনিয়র ক্রিকেটারদের তুলে আনার জন্যও ভাবতে হবে।”
দলের এমন হতশ্রী পারফরম্যান্স মেনে নিতে পারছেন না স্নেহাশিস। সিএবি সচিব বিস্ফোরক মেজাজে বলে দিলেন, “ক্লাবগুলোর একদিনের প্রতিযোগিতা শুরু হয়ে গিয়েছে। বাংলা দলের ক্রিকেটাররা যে যে ক্লাবের সঙ্গে যুক্ত আছে তাদের সবাইকে ম্যাচ খেলতে হবে। সঠিক কারণ ছাড়া কোনও অজুহাত শুনতে চাই না।”
আর প্রধান কোচ অরুণ লাল, তিনিও বেশ হতাশ। শেষে অল্প কথায় যোগ করলেন, “এমন হতশ্রী ফল হলে কর্তাদের মন খারাপ তো হবেই। তাঁদের প্রশ্ন করা তো স্বাভাবিক।”
এক বছরে ছবিটা পুরো বদলে গেল। গত বছর এমন সময় ঘরের মাঠে রঞ্জি ট্রফির সেমি ফাইনালে কর্ণাটকের বিরুদ্ধে দাপট দেখাচ্ছিল বাংলা। আর এ বার সেই ইডেনেই বঙ্গ ব্রিগেড যেন অন্ধকুপে ঢুকে গেল। তখন ইডেন জুড়ে চাঁদের হাট হলেও এ বার যেন শ্মশানের স্তব্ধতা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy