Advertisement
E-Paper

নেইমার ছাড়াও এই ব্রাজিল চমকে দিতে পারে

এই ব্রাজিল টিমটার কথা বলতে গেলেই প্রথমে আসে নেইমারের নাম। ২০০২ বিশ্বকাপে যেমন রোনাল্ডিনহো, রোনাল্ডো, রিভাল্ডো ছিল, সাম্প্রতিক কালে ব্রাজিল দলের সেই ব্যাটনটা চলে গিয়েছে নেইমারের কাছে। ছেলেটার যেমন স্কিল, গোল করার দক্ষতাও অনবদ্য। সেই নেইমার ছাড়া ব্রাজিল কী করতে পারে? কাকেই বা নেইমারের জায়গায় খেলাতে পারেন দুঙ্গা? শুধু আমি নয়। এই প্রশ্নটা সবার মাথায় ঘুরছিল।

সুব্রত ভট্টাচার্য

শেষ আপডেট: ২৩ জুন ২০১৫ ০২:৩৩
নেইমারের অভাব ঢাকলেন রোবিনহো। ছবি: এএফপি।

নেইমারের অভাব ঢাকলেন রোবিনহো। ছবি: এএফপি।

ব্রাজিল ২(থিয়াগো, ফির্মিনো) : ভেনেজুয়েলা ১(মিকু)

এই ব্রাজিল টিমটার কথা বলতে গেলেই প্রথমে আসে নেইমারের নাম। ২০০২ বিশ্বকাপে যেমন রোনাল্ডিনহো, রোনাল্ডো, রিভাল্ডো ছিল, সাম্প্রতিক কালে ব্রাজিল দলের সেই ব্যাটনটা চলে গিয়েছে নেইমারের কাছে। ছেলেটার যেমন স্কিল, গোল করার দক্ষতাও অনবদ্য। সেই নেইমার ছাড়া ব্রাজিল কী করতে পারে? কাকেই বা নেইমারের জায়গায় খেলাতে পারেন দুঙ্গা? শুধু আমি নয়। এই প্রশ্নটা সবার মাথায় ঘুরছিল।
ভেনেজুয়েলা হয়তো হেভিওয়েট দল নয়, কিন্তু ব্রাজিলকে চমকে দেওয়ার মতো রসদ ছিল ওদের। এই দলটার বিরুদ্ধে নেইমারকে ছাড়াও বেশ আত্মবিশ্বাসী ব্রাজিলকে দেখলাম। দুঙ্গারও বড় চ্যালেঞ্জ ছিল দলের সেরা ফুটবলার ছাড়া জয় তুলে আনার। এটা বললে ভুল হবে ব্রাজিল দুর্দান্ত খেলেছে। তবে জেতার জন্য যে ফুটবল দরকার ছিল, সেটা খেলেছে। নেইমার না থাকায় প্রথম প্রশ্ন ছিল ওর জায়গায় আনা হবে কাকে। দুঙ্গা বেশ সুন্দর ভাবে পরিস্থিতিটা সামলে নিলেন। ৪-২-৩-১ ছকে দল সাজিয়েছিলেন ব্রাজিল কোচ। নেইমারের জায়গায় নামানো হল রোবিনহোকে। তা ছাড়াও ফরোয়ার্ডে রবের্তো ফির্মিনো-ফিলিপ কুটিনহো-উইলিয়ান ছিল। গতি থেকে ক্রিয়েটিভিটি, ফরোয়ার্ড লাইনে সব কিছুই ছিল।
ব্রাজিল টিমটার সবথেকে বড় প্লাস পয়েন্ট হল, ওরা যেমন দ্রুত পাসিং ফুটবল খেলতে পারে, তেমনই ফরোয়ার্ডে লোক বাড়িয়ে দিতে পারে। এক জন ফুটবলারের কাছে বল এলে তার সামনে পাস বাড়ানোর বেশ কয়েকটা রাস্তা থাকে।
শুরুর থেকে রোবিনহো আর উইলিয়ান দারুণ কম্বাইন করছিল। দ্রুত পাস খেলে, উইংকে ব্যবহার করে খেলা ছড়িয়ে দিচ্ছিল। সেট পিস পরিস্থিতিতেও বল সাপ্লাই ভাল ছিল। রোবিনহোর নেওয়া কর্নার থেকেই তো প্রথম গোলটা করল থিয়াগো সিলভা। অসাধারণ ভলি। প্যারিস সাঁ জাঁর হয়েও দেখেছি সিলভা কর্নার থেকে কতটা ভয়ঙ্কর।

রোবিনহোকে নেওয়ার পরে প্রশ্ন উঠেছিল, কেন ওর মতো একটা বুড়ো ফুটবলারকে ফিরিয়ে আনা হল? রোবিনহো ভেনেজুয়েলার বিরুদ্ধে সমালোচকদের মুখটা বন্ধ করে দিল। প্রমাণ করে দিল, বয়সের সঙ্গে সঙ্গে সব সময় প্রতিভা ফুরিয়ে যায় না। দলের ক্রিয়েভিভ হাব বলতে তো রোবিনহোই ছিল। চোখ ধাঁধানো পায়ের স্কিল দেখালো। ড্রিবল করে, ছোট জায়গায় স্প্রিন্ট টেনে, ঠিকানা লেখা পাস বাড়িয়ে ব্রাজিল জার্সিতে পুনর্জন্ম হল রোবিনহোর। বল যত বার দখলে পাচ্ছিল, কিছু না কিছু করছিল। ফরোয়ার্ডদের খেলার মধ্যে আনছিল। বয়স হওয়ায় গতিটা হয়তো আগের মতো নেই, তবে স্কিল দিয়ে সেটা পুষিয়ে দিচ্ছিল রোবিনহো।

উইলিয়ান আবার ঠিক অন্য ধরনের খেলাটা খেলল। ক্রমাগত উপর-নীচ করে গেল। উইংয়ে খেলা ছড়ালো। ডিফেন্ডারদের এক কথায় নাচালো। ইনসাইড কাট করে ঢোকা ওর স্বভাব। ডিফেন্ডাররা যার কোনও পাল্টা দাওয়াই খুঁজে পায়নি। এ দিনও তাই হল। দ্বিতীয়ার্ধে বাঁ উইং দিয়ে ভেনেজুয়েলা রক্ষণ নাচিয়ে উইলিয়ানের দুর্দান্ত পাস থেকেই তো গোল করল ফির্মিনো। পায়ের আউটসাইড দিয়ে ও রকম মাপা পাস। মুভটা এত সুন্দর ছিল যে দেখলাম ভিআইপি বক্সে থাকা নেইমারের মুখেও হাসি ফুটে উঠল।

ভেনেজুয়েলা ম্যাচ তো উতরে গেল। কোয়ার্টার ফাইনালে ব্রাজিলের সামনে প্যারাগুয়ের পরীক্ষা। যেটায় পাস করতে হলে প্রথমত আরও ডিরেক্ট ফুটবল খেলতে হবে। ভেনেজুয়েলার বিরুদ্ধে দেখলাম অনেক বার ব্রাজিল ভাল জায়গায় বল পেয়েও শট না নিয়ে পাস দিচ্ছে। দ্বিতীয়ত, রক্ষণকে আরও বেশি সতর্ক থাকতে হবে। ভেনেজুয়েলা খুব সহজেই ব্রাজিলের হাফে ঢুকে পড়ছিল। শেষের দিকে তো মিকু একটা গোলও করে দিয়েছিল। প্যারাগুয়ে যাতে এ রকম জায়গায় লুজ বল না পেয়ে যায়, ব্রাজিলকে সেটা দেখতে হবে। তৃতীয়ত, মাঝমাঠ থেকে আরও বেশি সুযোগ তৈরি করতে হবে। ফের্নান্দিনহো আর এলিয়াসকে আরও পাস বাড়াতে হবে।

সবশেষে বলতে চাই নেইমার না থাকার হতাশাটাকে অস্ত্র হিসাবেই ব্যবহার করল ব্রাজিল। সবাই ভেবেছিল ধাক্কা খাবে। কিন্তু নেইমারের অনুপস্থিতিটাই দলকে জিততে আরও তাতিয়ে দিল। এখনই ব্রাজিলকে ‘ফেভারিট’ বলব না। তবে দেওয়ালে পিঠ ঠেকে যাওয়া ব্রাজিল যে কোনও বিপক্ষের জন্যই ভয়ঙ্কর।

ফিরে যাচ্ছেন নেইমার

নেইমারের সাসপেনশনের বিরুদ্ধে আবেদন করছে না ব্রাজিল। এ দিনই ব্রাজিলের বেস ক্যাম্প ছেড়ে ফিরে যাচ্ছেন তিনি। কলম্বিয়া ম্যাচে রেফারিকে গালাগালি দেওয়ায় চার ম্যাচের নির্বাসন হয় নেইমারের। তিনি বলেছেন, ‘‘এত দিন আশা ছিল যে কোনও না কোনও ভাবে কোপায় খেলতে পারব। কিন্তু সেটা সম্ভব নয়। যেখানেই থাকি না কেন, আমার ভাবনা টিমের সঙ্গে থাকবে। টিমমেটদের কাছে ক্ষমা চাইছি।’’ শাস্তির বিরুদ্ধে আবেদন না করার ঘোষণার পরে নেইমার টিমের সঙ্গে থাকবেন না গরমের ছুটি আগাম নিয়ে নেবেন, সেই সিদ্ধান্তটা দশ নম্বর জার্সির উপর ছেড়ে দেন ব্রাজিল কোচ দুঙ্গা।

অন্য খেলায়

প্রয়াত ফুটবলার রঞ্জিত বসুর স্মরণসভা হবে বুধবার ভেটারেন্স ক্লাবে, বিকেল পাঁচটায়।

subrata bhattacharya brazil without neymar neymar without neymar brazil quarterfinal copa america cup 2015
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy