Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

আইসিসি-র সভায় যোগ দিতে দুবাইয়ে শ্রীনি

আদালতের নির্দেশে ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের প্রেসিডেন্টের পদ থেকে তাঁকে সরে দাঁড়াতে হলেও আইসিসি-র সভায় ভারতের প্রতিনিধিত্ব করতে দুবাই উড়ে গেলেন নারায়ণস্বামী শ্রীনিবাসন। বুধ ও বৃহস্পতিবার আইসিসি-র এগজিকিউটিভ বোর্ডের সভা মরুশহরে। সেই সভায় যোগ দিতে মঙ্গলবার দুপুরে শ্রীনিবাসন দুবাই চলে গেলেন বলে বোর্ড সূত্রের খবর। দু’সপ্তাহ আগেই দেশের সর্বোচ্চ আদালত শ্রীনিবাসনকে বোর্ডের যাবতীয় কার্যকলাপ থেকে নিজেকে সরিয়ে নেওয়ার নির্দেশ দেয়।

নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ০৯ এপ্রিল ২০১৪ ০২:৩৪
Share: Save:

আদালতের নির্দেশে ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের প্রেসিডেন্টের পদ থেকে তাঁকে সরে দাঁড়াতে হলেও আইসিসি-র সভায় ভারতের প্রতিনিধিত্ব করতে দুবাই উড়ে গেলেন নারায়ণস্বামী শ্রীনিবাসন।

বুধ ও বৃহস্পতিবার আইসিসি-র এগজিকিউটিভ বোর্ডের সভা মরুশহরে। সেই সভায় যোগ দিতে মঙ্গলবার দুপুরে শ্রীনিবাসন দুবাই চলে গেলেন বলে বোর্ড সূত্রের খবর। দু’সপ্তাহ আগেই দেশের সর্বোচ্চ আদালত শ্রীনিবাসনকে বোর্ডের যাবতীয় কার্যকলাপ থেকে নিজেকে সরিয়ে নেওয়ার নির্দেশ দেয়। সেই নির্দেশ সত্ত্বেও কী ভাবে তিনি আইসিসি-র সভায় ভারতের প্রতিনিধি হিসেবে যোগ দিতে চলেছেন, এই নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে দেশের ক্রিকেট মহলে। ললিত মোদী তো টুইটার মারফত রীতিমতো হুমকি দিয়ে বলেছেন, শ্রীনি আইসিসি প্রেসিডেন্ট হলে আইসিসি-কে তার ফল ভুগতে হবে।

দুবাইয়ের সভায় যোগ দিতে উড়ে গেলেও বোর্ড কর্তাদের মধ্যে এই নিয়ে গোপনীয়তা রক্ষার এক অদ্ভূত চেষ্টা দেখা গেল মঙ্গলবার দিনভর। ভারপ্রাপ্ত বোর্ড প্রেসিডেন্ট শিবলাল যাদব বলে দিলেন, “এই ব্যাপারে কোনও মন্তব্য করব না।” নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আর এক ভাইস প্রেসিডেন্ট বললেন, “আমি ঠিক জানি না, কে যাচ্ছে।” আর এক ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্ট সুনীল গাওস্কর ও বোর্ড সচিব সঞ্জয় পটেল ফোনই ধরলেন না। অবশেষে বোর্ডেরই এক কর্তা নাম গোপন রাখার শর্ত দিয়ে জানালেন, “শ্রীনিবাসনই যাচ্ছেন দুবাইয়ের সভায়। মঙ্গলবার দুপুরে রওনা হয়ে গিয়েছেন তিনি।”

সুপ্রিম কোর্টের শেষ শুনানির পরই অবশ্য সচিব সঞ্জয় পটেল জানিয়েছিলেন, আইসিসি-র বৈঠকে যেতে সমস্যা হবে না শ্রীনিবাসনের। বোর্ডের কার্যকলাপের সঙ্গে যুক্ত না থাকলেও তিনি তো তামিলনাড়ু ক্রিকেট সংস্থার প্রেসিডেন্ট পদে বহাল রয়েছেন। এ জন্যই বোর্ড তাঁকে ওই সভায় যোগ দেওয়ার জন্য মনোনীত করতে পারে বলে সে দিন জানিয়েছিলেন পটেল। যা খবর, শ্রীনি আইসিসি বৈঠকে যোগ দেবেন বোর্ডের মনোনীত হিসেবেই, প্রেসিডেন্ট হিসেবে নয়।

বোর্ডের বার্ষিক সভায় প্রেসিডেন্টই আইসিসি-র বৈঠকে যোগ দেওয়ার জন্য প্রতিনিধি মনোনিত করেন। গত সেপ্টেম্বরে চেন্নাইয়ে বার্ষিক সভায় মৌখিক ভাবে ঠিক হয় আইসিসি-র এগজিকিউটিভ বোর্ডে শ্রীনিবাসনই যাবেন। নিয়ম অনুযায়ী সেই সভায় যাঁরা ছিলেন, তাঁদের সভার ‘মিনিটস’ বা বিবরণ পাওয়া উচিত। কিন্তু এখনও তাঁদের তা পাঠানো হয়নি।

বিসিসিআই প্রেসিডেন্টকে আইসিসি বোর্ডে ডিরেক্টর হিসেবে রাখার একটা প্রথা অবশ্য রয়েছে। কিন্তু শ্রীনি যেহেতু এখন আর বিসিসিআই প্রেসিডেন্ট নন, তাই আইসিসি বোর্ডেও তিনি ‘অটোমেটিক চয়েস’ কি না, এই নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। আইসিসি-র ‘কোড অব এথিকস’-এর ২.১ ধারা অনুযায়ী, আইসিসি-র সম্মানহানী হয়, এমন কোনও কাজের সঙ্গে যুক্ত থাকতে পারবেন না ডিরেক্টররা। এবং আইসিসি-র গঠনতন্ত্রের ৪.১১ (এফ) ধারায় বলা আছে, কোনও ডিরেক্টরের অসততা বা অপরাধ প্রমানিত হলে তাঁকে বোর্ড থেকে সরিয়ে দেওয়া হবে। আইসিসি-র অন্দরমহলে অবশ্য এই নিয়ে কোনও প্রতিক্রিয়া নেই।

জুনে বিশ্ব ক্রিকেট প্রশাসনের প্রথম চেয়ারম্যান পদে বসার কথা শ্রীনিবাসনের। তার আগে আইসিসি গঠনতন্ত্রে সংশোধন হওয়ার কথা। সংশোধন হয়ে নিয়মটা দাঁড়াবে, আইসিসি বোর্ডে ভারতের মনোনীত সদস্যই প্রথম চেয়ারম্যানের আসনে বসবেন। আগে মনোনীত সদস্যকে সরিয়ে বিসিসিআই অন্য কোনও সদস্যকে আইসিসি বোর্ডে মনোনয়ন দিলেও তিনি চেয়ারম্যান হতে পারেন। এই নিয়ম সংশোধন হয়ে গেলে শ্রীনির আইসিসি চেয়ারম্যান হতে কোনও বাধা থাকবে না বলে ওয়াকিবহাল মহলের ধারণা। কারণ জুনে তিনি বিসিসিআই প্রেসিডেন্টের চেয়ারে না থাকলেও আইসিসি বোর্ডে বিসিসিআই-এর মনোনীত সদস্য হিসেবেই চেয়ারম্যানের পদে বসতে পারবেন।

মোদীর হুঙ্কার
• শ্রীনিবাসন ক্ষমতায় থাকার জন্য
• যা খুশি করতে পারে। সারা দুনিয়ার ক্রিকেটে নিজের কীর্তির ছাপ রাখার জন্য।
• যাঁরা ওকে এ সব করতে দিচ্ছেন, তাঁদের জানিয়ে রাখি, আপনারাও কিন্তু ক্রিকেটকে আরও নীচে নামতে দিচ্ছেন। ক্রিকেটকে অবমাননার দায়ে আপনারাও পড়বেন।
• টুইটার মারফত আইসিসি-র সদস্য ও ক্রিকেটের রক্ষাকর্তাদের সাবধান করে দিতে চাই, ফিক্সার শ্রীনিকে ঢুকতে দেবেন না।
• বল এখন আইসিসি-র কোর্টে। শ্রীনিকে আইসিসি প্রেসিডেন্ট হতে দিলে বুঝতে হবে ওরাও ক্রিকেটে ফিক্সিংয়ের পরোয়া করে না। তখন নিজেদের ক্রিকেটের রক্ষাকর্তা দাবি করবেন না।
• খেলাটাকে হাইজ্যাক করা হচ্ছে। যুদ্ধ চলুক। আশা করি আইসিসি সদস্যরা দেওয়াল লিখন দেখতে পাচ্ছেন। না হলে হরিশ সালভে খুব তাড়াতাড়িই তা দেখাবেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

srinivashan icc dubai
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE