Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

গোল বাতিলের ম্যাচে মেক্সিকোকে জেতালেন পেরালতা

ম্যাচ শুরুর আগেই বৃষ্টি। কিন্তু তাতেও নাতালের এস্তাদিও দাস দুনাস স্টেডিয়ামের উৎসাহ নেভাতে পারেনি। কোয়ালিফায়ারে কম হোঁচট খেতে হয়নি মেক্সিকোকে। শেষ কোয়ালিফায়ারে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র পানামাকে না হারালে হয়তো ব্রাজিল বিশ্বকাপে নামার সুযোগই পেত না স্যামুয়েল এটোর টিম।

নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ১৪ জুন ২০১৪ ০৪:০২
Share: Save:

মেক্সিকো-১ (পেরালতা)

ক্যামেরুন-০

ম্যাচ শুরুর আগেই বৃষ্টি। কিন্তু তাতেও নাতালের এস্তাদিও দাস দুনাস স্টেডিয়ামের উৎসাহ নেভাতে পারেনি।

কোয়ালিফায়ারে কম হোঁচট খেতে হয়নি মেক্সিকোকে। শেষ কোয়ালিফায়ারে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র পানামাকে না হারালে হয়তো ব্রাজিল বিশ্বকাপে নামার সুযোগই পেত না স্যামুয়েল এটোর টিম। ক্যামেরুনের বিরুদ্ধে ম্যাচের শুরু থেকে যদিও রাফায়েল মারকুয়েজের টিমের হোঁচটের ছিটেফোঁটাও দেখা গেল না। যিনি আবার এ দিন চারটি বিশ্বকাপেই দেশকে নেতৃত্ব দেওয়ার রেকর্ড করে ফেললেন। উল্টে ম্যাচ শুরুর কিছুক্ষণ পরই টুইট ভেসে আসে, “নাতালে বল গড়ানোর শুরু থেকেই মনে হচ্ছে মেক্সিকো হোম ম্যাচ খেলছে। ক্যামেরুনের প্লেয়ারদের বল পায়ে আসলেই দর্শকদের টিটকিরির মুখে পড়তে হচ্ছে।”

ম্যাচের অন্যতম বড় আকর্ষণ ছিল বার্সেলোনার দুই প্রাক্তন প্লেয়ারের পুনর্মিলন। ক্যামেরুনের এটো আর মেক্সিকোর রাফা মারকুয়েজ। ম্যাচের আগে টানেলে দু’জনকে তাই উষ্ণ শুভেচ্ছা জানাতেও দেখা যায়। তবে ৩৫ বছর বয়সি মারকুয়েজ সে রকম ফর্মে নেই। তাঁর থেকে দু’বছরের জুনিয়র ‘এটো সেরা সময় ফেলে এসেছেন’ চেলসি কোচ হোসে মেরিনহোর বিশ্বকাপের আগেই এই মন্তব্য নিয়ে কম বিতর্ক হয়নি। ‘ওল্ড ম্যান’ সেলিব্রেশনে যাঁর জবাব দিয়েছেন এটো। সে সব যদিও ছাপিয়ে গেল রেফারির অফ সাইডের সিদ্ধান্ত নিয়ে বিতর্কে।

ম্যাচের শুরু থেকেই আক্রমণের ঢেউ তুলে দেয় মেক্সিকো। কিছুক্ষণের মধ্যে ১০ গজ দূর থেকে দস সান্তোস দুরন্ত ভলিতে জালে বলও জড়িয়ে দেন। কিন্তু রেফারি অফ সাইড বলে গোল বাতিল করে দেন। রিপ্লেতে যদিও দেখা যায় রেফারির সিদ্ধান্ত নিয়ে বিতর্কের যথেষ্ট কারণ রয়েছে। প্রধমার্ধের মাঝামাঝি ফের জালে বল জড়ায় মেক্সিকো। এ বারও দস সান্তোস। কর্নার থেকে আসা বল হেডে জালে জড়িয়ে দেন ভিয়ারিয়ালের অ্যাটাকিং মিডফিল্ডার। রেফারি ফের অফসাইডের জন্য গোল বাতিল করেন। কিন্তু রিপ্লেতে দেখা যায় বল ক্যামেরুনের প্লেয়ারের গায়ে লেগে এসেছিল। ফের প্রশ্ন উঠে যায় রেফারির সিদ্ধান্তে।

শেষ পর্যন্ত অবশ্য মেক্সিকোর সমর্থকদের মুখে হাসি ফোটান ওরিবে পেরালতা। দস সান্তোস ফাঁকায় পেয়ে গিয়েছিলেন ক্যামেরুনের গোলকিপার ইতান্দেকে। জোরালো শটও মেরেছিলেন। ইতান্দে কোনওরকমে ডান দিকে ডাইভ মেরে শট বাঁচালে বল চলে আসে পেরালতার পায়ে। গোল করতে কোনও ভুল করেননি তিনি।

পিছিয়ে পড়ে ম্যাচে ফিরে আসার প্রবল চেষ্টা চালিয়ে যান এটোরা। কিন্তু ফাইনাল থার্ডে নির্ভুল পাসের অভাবে ডুবতে হয় ক্যামেরুনকে।

তবে, মেক্সিকো শেষ পর্যন্ত ম্যাচ ১-০ জিতলেও রেফারির সিদ্ধান্ত নিয়ে কিন্তু প্রশ্ন থেকেই গেল। উদ্বোধনী ম্যাচের পর দ্বিতীয় ম্যাচেও একই বিতর্কে যা অস্বস্তিতে ফেলে দিতে পারে ফিফাকে। বিশ্বকাপে নামার আগে বোনাস নিয়ে সন্তুষ্ট না হওয়ায় বয়কটের ডাক দিয়েছিলেন ক্যামেরুনের প্লেয়াররা। প্রথম ম্যাচের পর তাঁদের পারফরম্যান্সে এ বার সমর্থকরা বেজায় হতাশ। এই হতাশা এটোরা দ্বিতীয় ম্যাচে কাটাতে পারেন কি না সেটাই এ বার দেখার।

ম্যাচের সেরা জিওভানি দস সান্তোস

দুটো গোল বাতিল হলেও শেষমেশ গ্রুপ ‘এ’-র মেক্সিকো-ক্যামেরুন ম্যাচে পেরাল্তা-র গোল এল সেই জিওভানি দস সান্তোসের প্রয়াসেই। মাঝমাঠ থেকে রিমোট কন্ট্রোলে একা নিয়ন্ত্রণ করলেন ক্যামেরুন গোলমুখে মেক্সিকোর যাবতীয় আক্রমণ। ক্যামরুনের মাবিয়াকে ছাপিয়ে তিনিই নায়ক এই ম্যাচের। শুরু থেকে জিওভানি-র নিয়ন্ত্রিত ফুটবলের জন্যই স্যামুয়েল এটোদের বিরুদ্ধে ম্যাচের দখল চলে গিয়েছিল মেক্সিকোর দখলে। নাতালের বৃষ্টিভেজা মাঠেও জিওভানি দেখালেন বয়স কোনও সমস্যা নয়। আফ্রিকান ‘টাফ ফুটবল’-এর সামনেও তিনি দেখিয়ে দিলেন বয়স কোনও ফ্যাক্টর নয় তাঁর কাছে। দেখিয়ে দিলেন স্কিলের সঙ্গে গতির মিশেল। প্রথম ম্যাচে যার জবাব দিতে পারেনি ক্যামেরুন। আফ্রিকার ‘অদম্য সিংহ’রা এই জিওভানিকে আটকানোর অ্যান্টিডোট খুঁজে পায়নি বলেই ভাল খেলেও জয় নিয়ে ফিরতে পারল না।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

fifaworldcup world cup 2014 mexico-cameroon
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE