অ্যাসেজ ফিরে পাওয়ার সেই মুহূর্ত। ডান দিকে নির্বাচন কমিটির নতুন সর্বেসর্বা রডনি মার্শ
দল বাছাই সভায় টেলি-বৈঠকে বেশি সময় দিয়ে লাভ কী? ও সব ছেড়ে দলের সতীর্থদের বরং বেশি সময় দেওয়া উচিত গত বছর ভারত সফর সেরে দেশে ফেরার পর এই কথা ভেবে যে দিন নির্বাচক কমিটি থেকে ইস্তফা দিয়েছিলেন মাইকেল ক্লার্ক, সে দিন থেকেই অস্ট্রেলিয়ার ক্রিকেটের মোড় ঘুরেছে বলে মনে করেন সে দেশের সদ্যনিযুক্ত প্রধান নির্বাচক রডনি মার্শ। তাঁর বক্তব্য, “ক্লার্কের সিদ্ধান্ত আজ টেস্ট র্যাঙ্কিংয়ে অস্ট্রেলিয়াকে এক নম্বর জায়গাটা ফিরে ফিরে পেতে সাহায্য করল।” নির্বাচক কমিটিতে এসেছেন মার্ক ওয়।
পাঁচ বছর পর টেস্ট বিশ্ব র্যাঙ্কিংয়ে অস্ট্রেলিয়া ফের এক নম্বরে। যদিও এই নিয়ে উঠছে অনেক প্রশ্ন। কারণ, মার্চের প্রথম সপ্তাহে দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে সিরিজ জয়ের পর থেকে আর টেস্ট সিরিজ খেলেনি অস্ট্রেলিয়া। ২০১২ এপ্রিল থেকে এখন পর্যন্ত তারা ২৬টি টেস্টের মধ্যে জিতেছে ১২টিতে ও হেরেছে ন’টিতে। পাঁচটি টেস্ট ড্র। সাফল্যের হার যেখানে ৫০ শতাংশও নয়, সেখানে কী করে দু’বছরে পাঁচ নম্বর থেকে এক নম্বরে উঠে এল অস্ট্রেলিয়া, এই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে ক্রিকেট বিশ্বে। আইসিসি-র এই র্যাঙ্কিংয়ের নিয়মটা বেশ অদ্ভুত। সেই নিয়ম অনুযায়ী এ বারের র্যাঙ্কিং তালিকা তৈরির সময় তাদের ২০১০-’১১-র অ্যাসেজ পারফরম্যান্স ও ২০১০ থেকে ২০১৩-র মধ্যে দু’বার ভারত সফরে হাফ ডজন টেস্ট হারের পরিসংখ্যান ধরাই হয়নি। ২০১২-’১৩-র অর্ধেক ফল বিচার করেই নাকি এই তালিকা তৈরি হয়েছে বলে আইসিসি-র ব্যাখ্যা।
অস্ট্রেলীয় কোচ ডারেন লেম্যান পর্যন্ত বলছেন, “টেস্ট র্যাঙ্কিংয়ে আমরা এক নম্বরে উঠে এলেও মনে হয় না, আমরা সত্যিকারের বিশ্বসেরা টেস্ট দল। দেশে ও দেশের বাইরে জয়ের ধারাবাহিকতা বজায় রেখে আমাদের তা প্রমাণ করতে হবে।” এই বছরের শুরুতে ঘরের মাঠে দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে তাদের সিরিজ জয় আর গত বছর শেষ দিকে অ্যাসেজে তাদের ‘ক্লিন-সুইপ’-ই ফের সেরার শিরোপা পেতে সাহায্য করল অস্ট্রেলিয়াকে। দক্ষিণ আফ্রিকা নেমে গেল দুইয়ে। ইংল্যান্ড ও পাকিস্তান এক ধাপ করে উঠে যেখানে যথাক্রমে তিন ও চারে উঠে গিয়েছে, সেখানে দু’ধাপ নেমে ভারত এখন পাঁচ নম্বরে। ২০১০-’১১-য় ভারত অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ডকে ঘরের মাঠে ও ওয়েস্ট ইন্ডিজকে সেখানে গিয়ে সিরিজ হারালেও এই তালিকায় তার কোনও প্রভাব পড়েনি।
ওয়ান ডে র্যাঙ্কিংয়েও অস্ট্রেলিয়া এক নম্বরে। এ বার টেস্টের তালিকার শীর্ষেও তারা চলে আসায় ২০০৮-এর ডিসেম্বরের পর এই প্রথম দুই ফর্ম্যাটেই সর্বোচ্চ আসনে অজিরা। ২০০৯-এ অ্যাসেজে ব্যর্থ হওয়ার পর সেই বছর অগস্টে তারা গদিচ্যূত হয়। এত দিনে জায়গাটা ফিরে পেল তারা। স্বাভাবিক ভাবেই খুশি অধিনায়ক ক্লার্ক বলেছেন, “গত দু’বছর ধরে যে চড়াই-উতরাইয়ের মধ্যে দিয়ে এসেছি, তার পর এই জায়গায় এসে পৌঁছনো আমাদের কাছে বড় চ্যালেঞ্জ ছিল।” গত বছর ভারত সফরের প্রসঙ্গ টেনে এনে ক্লার্ক বলেন, “এখনও মনে আছে সেই দিনটার কথা। ভারতের কাছে পাঁচটা টেস্টে হেরে ফেরার পর আমাদের গায়ে ‘ভারত সফরে যাওয়া সবচেয়ে খারাপ অস্ট্রেলিয়া দল’-এর তকমা সেঁটে দেওয়া হয়েছিল। দলের ক্যাপ্টেন হিসেবে কথাগুলো কতটা গায়ে বিঁধেছিল, বলে বোঝাতে পারব না।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy