তাঁর দলের দ্বিতীয় দিনের ব্যাটিংয়ে ‘হতাশ’ বাংলা কোচ সাইরাজ বাহুতুলে। কিন্তু পাশাপাশি আবার দিনের শেষে বাংলার বোলিং ঘিরে ‘আশাবাদী’ প্রাক্তন মুম্বই স্পিনার। এবং বাহুতুলের মননই কোটলায় বাংলা-দিল্লি রঞ্জি ম্যাচের দ্বিতীয় দিনের যেন আয়না!
সুদীপ চট্টোপাধ্যায়-ঋদ্ধিমান সাহা-মনোজ তিওয়ারি, ব্যাটিং ত্রয়ী জ্বলে উঠলেন কিন্তু তা সত্ত্বেও বাংলা চারশো পেরোতে পারেনি প্রথম ইনিংসে। অথচ এ দিন সকালে বাংলা ড্রেসিংরুম থেকে ব্যাট হাতে বেরিয়ে এসেছিলেন গত দিনের দুই জমে ওঠা অপরাজিত ব্যাটসম্যান সুদীপ আর ঋদ্ধি। সুদীপ তো সেঞ্চুরি করে! কিন্তু তিনি আগের দিনের ১০৮-এর সঙ্গে আর মাত্র আট রান যোগ করে আওয়ানার বলে ফিরে গেলেন সকাল সকালই। পরের বলেই ঋদ্ধি রান আউট। ৭২-এ। আগের দিনের রানের সঙ্গে মাত্র পাঁচ রান যোগ করে। সেই ধাক্কা আর বাংলার পরের দিকের ব্যাটসম্যানরা সামলাতে পারেননি।
ফলে ইশান্ত শর্মা-বিহীন দিল্লি বোলিং, তা-ও প্রদীপ সাঙ্গওয়ান (৪-৪৮) বাদে কারও বোলিং হিসেব বলার মতো নয়, সেই অবস্থাতেও আগের দিনের ২৭২-৩ স্কোরে বড় রানের ইনিংসের আশা জাগানো বাংলা শেষ সাত উইকেট মাত্র ৭২ রানে হারিয়ে ৩৫৭-তেই শেষ!
যা দেখে বাহুতুলের প্রতিক্রিয়া, ‘‘আমাদের আজকের ব্যাটিংয়ে আমি হতাশ। বাজে একটা রান আউটের ঘটনা ঘটল। আমাদের অবশ্যই সাড়ে চারশোয় পৌঁছনো উচিত ছিল।’’
কিন্তু সেই বাহুতুলেই দিনের শেষে বলেছেন, ‘‘আমাদের ব্যাটসম্যানদের আজকের পারফরম্যান্সে আমি যতটা হতাশ হয়েছি, ততটাই ভাল লেগেছে আমাদের বোলারদের পারফরম্যান্স। আমাদের বোলাররা ভাল করেছে। দ্বিতীয় দিনের পিচেই বল ঘুরছে। আশা করা যাক, কালকের দিনটা আমাদের ভাল কাটবে।’’
আসলে কোটলার দু’রকমের বাউন্সের গুবলেট ধরনের পিচে ব্যাট করতে নেমে গোড়াতেই গৌতম গম্ভীরকে হারিয়ে এ দিন পরের ৪১ ওভারে খোলসের মধ্যে ঢুকে পড়েছিল দিল্লি ব্যাটিং। তাঁর অনেক দিনের পুরনো ওপেনিং পার্টনার বীরেন্দ্র সহবাগ আন্তর্জাতিক ক্রিকেটকে ‘গুডবাই’ জানানোর পরেও হরিয়ানার হয়ে সেঞ্চুরি হাঁকাচ্ছেন যখন, তখন দিল্লি অধিনায়ক গম্ভীর, কেকেআর নেতা গম্ভীর বাংলার বিরুদ্ধে ইনিংসের দ্বিতীয় বলেই শূন্যতে এলবিডব্লিউ। অশোক দিন্দা তাঁর পরের ন’ওভারে আর কোনও উইকেট না পেলেও গম্ভীরের মহামূল্যবান উইকেট তুলে নিয়ে কাজের কাজটা অবশ্য করে দিয়েছেন। দিল্লির আর এক ঘাঘু ওপেনার উন্মুখ চন্দকে আবার মাত্র ১৩-এ ফিরিয়ে দিয়ে গ্রুপ ‘এ’-র এক নম্বর টিমকে দ্বিতীয় বড় ধাক্কা দেন সদ্য বাংলায় আসা অভিজ্ঞ বাঁ-হাতি স্পিনার প্রজ্ঞান ওঝা। অন্য উইকেটটা বীরপ্রতাপ সিংহের ঝুলিতে। দিল্লি ৪২ ওভারে খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে ১০০ রান তুলেছে তিন উইকেট হারিয়ে।
আইপিএল বা আইএসএলের ভাষায় ম্যাচটা এক বনাম ছয়-এর। সেই যুদ্ধে ছয়ের বিরুদ্ধে কিন্তু ঘরের মাঠ কোটলায় একটু হলেও সমস্যায় এক! আরও ঠিক ভাবে বললে, এ বারের রঞ্জিতেই এই প্রথম বারের মতো সমস্যায় দিল্লি।
সংক্ষিপ্ত স্কোর: বাংলা প্রথম ইনিংস ৩৫৭ (সুদীপ ১১৬, ঋদ্ধিমান ৭২, সাঙ্গওয়াল ৪-৪৮), দিল্লি প্রথম ইনিংস ১০০-৩ (গম্ভীর ০, দিন্দা ১-২৭, প্রজ্ঞান ১-২৭)।