Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪
আজ কমলা-ঝড় বনাম লা টিকোস

মন্ত্রপূত জল ও ব্রাজিলীয় রক্তের সামনে স্নেইডাররা

কে বলবে দিন তিনেক আগে এই দলটারই মেক্সিকোকে হারাতে প্রায় দম বেরিয়ে গিয়েছিল। সেমিফাইনালে ওঠার যুদ্ধে আবার মাঝমাঠের অন্যতম অস্ত্র নাইজেল দে জং চোটের জন্য নেই। নেদারল্যান্ডসের প্র্যাকটিসের মেজাজ দেখলে এ সব ভাবনা বাইরে ফেলে আসতে হবে। বিশ্বকাপে এ বারের অন্যতম চমক কোস্টারিকার চ্যালেঞ্জে নামার আগে ডাচ টিম ফুরফুরে বললেও ভুল বলা হয়। যাকে বলে তুরীয় মেজাজে।

ফান গলের প্র্যাকটিসে খোশমেজাজে ফুটবলাররা।

ফান গলের প্র্যাকটিসে খোশমেজাজে ফুটবলাররা।

নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ০৫ জুলাই ২০১৪ ০৩:৫২
Share: Save:

কে বলবে দিন তিনেক আগে এই দলটারই মেক্সিকোকে হারাতে প্রায় দম বেরিয়ে গিয়েছিল। সেমিফাইনালে ওঠার যুদ্ধে আবার মাঝমাঠের অন্যতম অস্ত্র নাইজেল দে জং চোটের জন্য নেই। নেদারল্যান্ডসের প্র্যাকটিসের মেজাজ দেখলে এ সব ভাবনা বাইরে ফেলে আসতে হবে। বিশ্বকাপে এ বারের অন্যতম চমক কোস্টারিকার চ্যালেঞ্জে নামার আগে ডাচ টিম ফুরফুরে বললেও ভুল বলা হয়। যাকে বলে তুরীয় মেজাজে।

আর্জেন রবেনদের শরীরী ভাষাতেও সেটা স্পষ্ট। প্রথমে যেটা সেট পিসের প্র্যাকটিস মনে হচ্ছিল একটু পরেই সেটা মনে হতে পারে আসলে গোলের পর সেলিব্রেশনের মহড়া। কোস্টারিকার বিরুদ্ধে পাঁচ রকম গোলের উৎসব করার টার্গেট নিয়েই হয়তো কঠোর প্র্যাকটিস চালিয়ে যাচ্ছেন আর্জেন রবেনরা। এমনও মনে হতেই পারে।

তবে, যাই মনে হোক না কেন ওয়েসলি স্নেইডাররা নিন্দুকদের মন্তব্যকে পাত্তা দিচ্ছেন কোথায়! ক্যাম্পবেলদের মুখোমুখি হওয়ার আগে বিশ্রাম পেয়ে গোটা দলের চেহারাটাই যে বদলে গিয়েছে। স্নেইডার বলে দিয়েছেন, তিনি অনেক বদলে গিয়েছেন। লুই ফান গলের চাল সফল করতে তিনি ‘বোড়ে’র দায়িত্ব সামলেও খুশি। আর সমালোচনাকে মোটেও তেমন পাত্তা দিচ্ছেন না। “কে কী বলল সে সব নিয়ে ভাবছি না। আমি আগের থেকে বদলে গিয়েছি। আমাকে যদি ২০১০-এর স্নেইডার ধরে নেন যে বল পায়ে রাখতে পারে না, ক্রস বাড়ায় না, তা হলে ভুল হবে।” সঙ্গে ডাচ তারকা যোগ করেন, “কোচ আমার খেলায় খুশি। সেটাই বড় ব্যাপার। আমায় যে দায়িত্ব উনি দিয়েছেন সেটা আমি সামলাতে পারছি। আমি নিজের পজিশন ধরে রেখে পরিকল্পনা অনুযায়ী খেলতে পারছি। অন্য প্লেয়ারদের মতো আমিও তাই বোড়ের মতোই এক জন কর্মী।”

নেদারল্যান্ডস প্র্যাকটিসের ছবি।

১৯৯০ বিশ্বকাপে এক ব্রাজিলিয়ানের হাত ধরেই শেষ ষোলোয় গিয়েছিল কোস্টারিকা। তাঁর নাম আলেকজান্ডার বোর্গেস গুইমারেইস। চব্বিশ বছর কেটে গিয়েছে কিন্তু ছবি পাল্টায়নি। ব্রাজিল বিশ্বকাপেও কোস্টারিকা দলের অন্যতম অস্ত্র বোর্গেস। যিনি এক কথায় কোস্টারিকা মাঝমাঠের এখন অক্সিজেন। তবে এই বোর্গেস আলেকজান্ডারের ছেলে, সেলসো।

শরীরে ব্রাজিলিয়ান রক্ত। মারণ গ্রুপ অতিক্রম করে দলের শীর্ষে শেষ করার পিছনে অন্যতম কারণ সেলসো। পজিশন মাঝমাঠ। এখনও পর্যন্ত কোস্টারিকার অর্ধেক গোলের পিছনে তাঁর অবদান। বাবার জন্মভূমিতে সেরাটা বেরিয়ে আসা কোনও চমক নয়। ছোটবেলা থেকেই বোর্গেস ব্রাজিলীয়দের দেখে বড় হয়েছেন। রিভাল্ডো, রোমারিওদের খেলা দেখেই ফুটবলার হওয়ার স্বপ্ন দেখেছেন। এক সময় বলেওছিলেন, “বাবার দেশে বিশ্বকাপ খেলা আমার স্বপ্ন।”

এখন যিনি তৈরি কমলা সিংহদের বিরুদ্ধে শেষ মিনিট অবধি স্বপ্নের দৌড় বজায় রাখতে। বলেন, “কোয়ার্টার ফাইনালে উঠলেও জেতার খিদে দলে কমেনি। আগেও বলেছি নেদারল্যান্ডস যাতে না ভাবে আমরা ব্রাজিল ঘুরতে এসেছি। আমাদের কিছুই হারানোর নেই।”

প্র্যাকটিসে বোর্গেস।

হোর্জে লুই পিন্টো, ব্রায়ান রুইজ ও জোয়েল ক্যাম্পবেল ছাড়াও কোস্টারিকার সাফল্যর পিছনে নাকি রয়েছে সান্তোসের মন্ত্রপূত জল। স্থানীয় মানুষের বিশ্বাস যে, এলাকার জলে নাকি অদ্ভূত ক্ষমতা আছে। যা খেলেই মানুষের জীবনে উন্নতি হয়। শোনা যাচ্ছে গ্রুপ পর্ব চলাকালীন পিন্টো সেই জল এনে দেন ফুটবলারদের। সমর্থকদের বিশ্বাস, সেই জলের মহিমাতেই নাকি ফুটবলাররা বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনালে উঠতে পেরেছেন।

কোচ অবশ্যই মন্ত্রপূত জল নয়, বিশ্বাস রেখেছেন ফুটবলারদের পারফরম্যান্সের উপর। বলছেন, “এটা ঠিক আমরা সেই জল খেয়েছিলাম। কিন্তু আমার টিমকে টানছে ফুটবলাররা। ওরা দুর্দান্ত খেলেছে। ওরা সর্বশক্তি দিয়ে না খেললে কোয়ার্টার ফাইনালে যাওয়া হত না। নেদারল্যান্ডসকে শ্রদ্ধা করি। দল হিসাবে আমাদের থেকে ওরা শক্তিশালী। তবে আমরাও কম যাই না। এ বার আরও এগোতে চাই।”

ছবি: এএফপি

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

fifaworldcup
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE