নারায়ণস্বামী শ্রীনিবাসনের আইসিসি চেয়ারম্যান পদে বসা যে কেউ আটকাতে পারবে না, তা এক প্রকার জানিয়েই দিলেন বোর্ডসচিব সঞ্জয় পটেল। তাঁর সাফ কথা, এই ব্যাপারে সুপ্রিম কোর্টেরও কোনও নিষেধাজ্ঞা নেই।
চলতি মাসের শেষেই শ্রীনিবাসন মেলবোর্ন রওনা হবেন আইসিসি-র বৈঠকে যোগ দিয়ে চেয়ারম্যানের দায়িত্ব নিতে। কিন্তু সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে বিসিসিআই প্রেসিডেন্ট পদ থেকে অপসারিত থাকা সত্ত্বেও কী করে শ্রীনি আইসিসি-র সর্বোচ্চ পদের দায়িত্ব নিতে পারেন, সেই প্রশ্ন রয়েই গিয়েছে। এই প্রশ্নেরই উত্তর দিয়ে বিষয়টি পরিষ্কার করার চেষ্টা শুরু করে দিলেন বোর্ড সচিব সঞ্জয় পটেল। এ দিন এক অনুষ্ঠানে বোর্ডসচিব বলে দিলেন, “শ্রীনিবাসনের আইসিসি চেয়ারম্যান হওয়া নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের কোনও নিষেধাজ্ঞা নেই। তাই তিনি মেলবোর্ন যাবেন এবং চেয়ারম্যানের দায়িত্বও নেবেন।”
বিশ্ব ক্রিকেট প্রশাসনে ভারতের সংস্কারের প্রস্তাব না মানা হলে যে আইসিসি-র বিকল্প সংগঠন গড়ার হুমকি দিয়েছিলেন শ্রীনিবাসন, এ দিন এই কথাও রীতিমতো বুক ফুলিয়ে জানিয়ে দেন পটেল। বলেন, “মিডিয়াতে এই নিয়ে প্রচুর সমালোচনা হয়েছিল। বেশ কয়েকটি দেশ প্রথমে আমাদের প্রস্তাবে রাজিও ছিল না। কিন্তু ভারতীয় বোর্ডের পক্ষ থেকে পরিষ্কার জানিয়ে দেওয়া হয়, আমাদের প্রস্তাব না মানা হলে আমরা দ্বিতীয় আইসিসি গড়তে বাধ্য হব। ইংল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়া সম্মতি দেওয়ার পরই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় যে, ২৭ জুন থেকে বিশ্ব ক্রিকেট প্রশাসনে নয়া পরিকাঠামো চালু হবে। এবং এটাও জানিয়ে রাখি যে, আইসিসি-র দশ পূর্ণ সদস্য দেশই এই প্রস্তাবে রাজি হয়েছে।”
আইসিসি-র চেয়ারম্যান পদে বসা নিয়ে যে আইসিসি সদস্যদের তরফ থেকে কোনও বাধা আসবে না, তেমনই ইঙ্গিত দিয়ে এ দিন বোর্ড সচিব বলে দেন, “গত চার মাসে আমরা আইসিসি-র পূর্ণ সদস্যদের সঙ্গে বসে পুরো বিষয়টা মিটিয়ে নিয়েছি। আর তাঁদের নতুন প্রশাসনিক পরিকাঠামো ও আর্থিক মডেলের উপকারিতাও বুঝিয়েছি। কেন ভারতের আইসিসি-তে প্রধান ভূমিকা নেওয়া উচিত, তা এখন সবারই জানা। আইসিসি-র ৬৮-৭২ শতাংশ লভ্যাংশ আসে ভারতের জন্য। কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত আমরা লভ্যাংশের তিন-চার শতাংশের বেশি পাই না।” এর পিছনে যুক্তিগুলো খাড়া করার চেষ্টা করে পটেল বলেন, “আইসিসি-র এই নতুন আর্থিক মডেল যাচাই করার জন্য এবং কোথা থেকে কত লভ্যাংশ আসছে, তা জানতে শ্রীনিবাসন একটি বেসরকারি সংস্থাকে দায়িত্ব দিয়েছিলেন। সেই সমীক্ষাতেই এই তথ্য পাওয়া যায়। আইসিসি অবশ্য বলেছিল ৬৮ শতাংশ লভ্যাংশ আমরা দিই। দুবাইয়ে আইসিসি-র বৈঠকে আমরা সওয়াল করি, ৬৮ বা ৭২ বড় কথা নয়, এটা পরিষ্কার যে, লাভের সিংহভাগ অঙ্কই আসছে ভারতের জন্য তা হলে কেন ভারত মাত্র তিন থেকে চার শতাংশ লাভের অর্থ পাবে?”
তা হলে আইসিসি-র অ্যাকাউন্ট থেকে কত টাকা বিসিসিআই-এর অ্যাকাউন্টে আসতে পারে?
অঙ্কটা গগণচুম্বী হয়ে উঠতে পারে। এই দাবি করে পটেল বলেন, “২০১৬ থেকে ২০২৩-এর মধ্যে ভারতের ২৪ শতাংশ লভ্যাংশ পাওয়া উচিত। এবং আমাদের সঙ্গে একমত অস্ট্রেলিয়া আর ইংল্যান্ড। সেই হিসেবে অর্থের অঙ্কটা দাঁড়ায় মোটামুটি ৭০০ থেকে ৮০০ মিলিয়ন ডলার।” ভারতীয় মুদ্রায় হিসাব করলে অঙ্কটা দাঁড়ায় প্রায় ৪,১৪০ কোটি থেকে প্রায় ৪,৭৩০ কোটি টাকা। এমনকী আইসিসি-র সদর দফতর যে দুবাই থেকে সরিয়ে ভারতেও চলে আসতে পারে, তেমন ইঙ্গিতও এ দিন দিয়ে রাখলেন বোর্ড সচিব সঞ্জয় পটেল।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy