জোরকদমে কাজ চলছে বড়নীলপুরের চৌরঙ্গি মাঠে। সোমবার তোলা নিজস্ব চিত্র।
তিনি আসছেন।
কলকাতার পরে বর্ধমান। তাঁকে ঘিরে জনতার কৌতূহল তুঙ্গে।
বিজেপি সভাপতি অমিত শাহের সভার শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি নিয়ে সোমবার দিনভর চূড়ান্ত ব্যস্ততার ছবিই দেখল শহর। বিজেপি নেতারা যেমন ঘনঘন সভাস্থল পরিদর্শনে গিয়েছেন, শহরের বুকে ঘুরেছে দলের সুসজ্জিত প্রচার ভ্যান, তেমনই আবার পরের দিনের পাল্টা সভা সফল করতে পাড়ায়-পাড়ায় মিছিল তথা প্রচার অভিযান চালিয়েছে তৃণমূল।
সকালে বড়নীলপুরের মাঠে গিয়ে দেখা যায়, বিজেপির সভা উপলক্ষে তিনটি মঞ্চ তৈরি। মাঝে মূলমঞ্চ রেখে দু’পাশে দুটি মঞ্চ গড়া হয়েছে। তিনটিতেই দলের সর্বভারতীয় নেতাদের ছবি। মঞ্চের চারপাশে রাখা হয়েছে অমিত শাহ, রাহুল সিংহের মতো জাতীয় ও রাজ্যস্তরের নেতাদের কাটআউট। বর্ধমান শহরের নানা জায়গায় তৈরি হয়েছে কয়েকটি তোরণ। তবে মঞ্চ ও সভাস্থল বাদ দিয়ে চারপাশের পাল্লা দিয়ে পতাকা ও ফ্লেক্সে ঘিরেছে তৃণমূল। ফলে সভা নিয়ে দু’দলের প্রতিযোগিতা যে তুঙ্গে উঠেছে, তার আঁচ এ দিন থেকেই স্পষ্ট।
দুপুরে জেলা তৃণমূল সভাপতি (গ্রামীণ) তথা মন্ত্রী স্বপন দেবনাথ দলের কালীবাজার অফিসে সাংবাদিক বৈঠকে দাবি করেন, “বিজেপি মঙ্গলবারের সভায় যত লোক আনবে, তার দ্বিগুণ মানুষ বুধবার অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সভায় আসবেন। এটাই আমাদের চ্যালেঞ্জ। আমরা দেখিয়ে দিতে চাই, বর্ধমানে তৃণমূলই প্রধান রাজনৈতিক শক্তি।” স্বপনবাবুর দাবি, জেলায় বিজেপি, সিপিএম ও কংগ্রস তলায়-তলায় ‘অশুভ জোট’ বেঁধেছে। মঙ্গলবার আসলে সেই জোটেরই সভা হচ্ছে। তাকে চ্যালেঞ্জ বুধবার যে সভার আয়োজন করা হয়েছে, সেখানে অভিষেক ছাড়াও পার্থ চট্টোপাধ্যায়, সুব্রত মুখোপাধ্যায়, সুব্রত বক্সী, ফিরহাদ হাকিম, মলয় ঘটকদের থাকার কথা।
ইতিমধ্যে জেলার নানা মহলে দিনভর জল্পনা চলেছে, মঙ্গলবারের সভায় তৃণমূলের বেশ কয়েকজন বিধায়ক, মন্ত্রী এমনকী সাংসদ পর্যন্ত বিজেপিতে যোগ দেবেন। বিজেপির একটি সূত্র এই জল্পনায় ইন্ধন জুগিয়েছে। বিশেষ করে বর্ধমান দক্ষিণের বিধায়ক তথা মন্ত্রী রবিরঞ্জন চট্টোপাধ্যায় এই তালিকা রয়েছেন বলে চাউর হয়েছে। যা উড়িয়ে দিয়ে স্বপনবাবু বলেন, “বর্ধমানের কেউ দল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দেবেন বলে অন্তত আমার কাছে খবর নেই।” রবিরঞ্জনবাবুও দাবি করেন, “একদম বাজে কথা! এই ধরনের গুজব কে বা কারা রটাচ্ছে?” এক পা এগিয়ে স্বপনবাবু যোগ করেন, “দলনেত্রী বলেছেন, যার ইচ্ছে হয় তিনি দল থেকে বিদায় নিতে পারেন। কাউকে জোর করে আটকে রাখা হবে না। আমিও বলছি, কোনও নেতা বা কর্মী দল ছেড়ে চলে যাওয়ার অর্থ তো এই নয় যে, মানুষ আমাদের সঙ্গে নেই। যারা তৃণমূলকে ভালবাসে, তারা কোনও দিনই দল ছেড়ে যাবে না।”
বিজেপি সূত্রের খবর, তাদের সভায় শুধু বর্ধমান নয়, গোটা দক্ষিণবঙ্গ থেকেই লোক আসবে। কিন্তু তৃণমূলের দাবি, তারা বিজেপির মতো হুগলি বা বাঁকুড়া থেকে লোক আনবে না। স্বপনবাবু বলেন, “আমাদের সভায় মানুষ আসবেন বর্ধমান আর তার চারপাশের এলাকা থেকেই। শুধু যুব-ছাত্র-মহিলাদেরই ব্যাপক সমাবেশ হবে। শুনেছি, বড়নীলপুরের মাঠে বিজেপি সভাপতির সভা হবে। তার জবাব আমরা দলের যুব সভাপতিকে দিয়েই দিয়ে দেব।” যা শুনে বিজেপির জেলা সভাপতি (গ্রামীণ) দেবীপ্রসাদ মল্লিকের প্রতিক্রিয়া, “আমরা কারও সঙ্গে রেষারেষিতে যেতে চাই না। তৃণমূল আমাদের পাল্টা সভা করে আসলে নিজেদের রাজনৈতিক দেউলিয়াপনাই স্পষ্ট করছে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy