Advertisement
২৩ এপ্রিল ২০২৪

সাইকেলের বদলে গাড়িতে ভোট দিতে গেলেন দীপেন্দু

বৃদ্ধাকে রিকশা থেকে নামাচ্ছিলেন আত্মীয়েরা। অসুস্থ শরীরে এসেছেন ভোট দিতে। দেখতে পেয়ে এগিয়ে গেলেন প্রার্থী। মশকরা করে বললেন, “এই যে বুড়ি, চিনতে পারছ?” “কে বাবা?” চোখ তুলে তাকালেন অশীতিপর বৃদ্ধা। একগাল হেসে বললেন, “ও মা, এ যে আমাদের মিঠু। ভাল আছিস তো?” “দেখলেন, এরপরে আমাকে কি কেউ আর বহিরাগত বলবে?”— বললেন প্রার্থী।

ডাবে চুমুক। টাকিতে তৃণমূল প্রার্থী দীপেন্দু বিশ্বাস। — নিজস্ব চিত্র

ডাবে চুমুক। টাকিতে তৃণমূল প্রার্থী দীপেন্দু বিশ্বাস। — নিজস্ব চিত্র

অরুণাক্ষ ভট্টাচার্য ও নির্মল বসু
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৪ সেপ্টেম্বর ২০১৪ ০৩:৫৯
Share: Save:

বৃদ্ধাকে রিকশা থেকে নামাচ্ছিলেন আত্মীয়েরা। অসুস্থ শরীরে এসেছেন ভোট দিতে। দেখতে পেয়ে এগিয়ে গেলেন প্রার্থী। মশকরা করে বললেন, “এই যে বুড়ি, চিনতে পারছ?” “কে বাবা?” চোখ তুলে তাকালেন অশীতিপর বৃদ্ধা। একগাল হেসে বললেন, “ও মা, এ যে আমাদের মিঠু। ভাল আছিস তো?” “দেখলেন, এরপরে আমাকে কি কেউ আর বহিরাগত বলবে?”— বললেন প্রার্থী।

বসিরহাটের সঙ্গে এমনই নাড়ির টান তৃণমূল প্রার্থী দীপেন্দু বিশ্বাসের। ছোটবেলায় পড়েছেন বসিরহাট হাইস্কুলে। খেলাধূলার ঝোঁক ছিল ছোট থেকে। টাটা ফুটবল অ্যাকাডেমিতে তালিম নিয়ে বসিরহাটকে দেশের ক্রীড়া মানচিত্রে পাকাপাকি ভাবে জায়গা করে দিয়েছেন। ক্লাব ফুটবল থেকে শুরু করে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক স্তর মিলিয়ে গোল করেছেন ২৪৫টি। সংখ্যাতত্ত্বের নিরিখে যা চুনী গোস্বামী ও ভাইচুং ভুটিয়ার ঠিক পরেই। বসিরহাটের নৈহাটির বাসিন্দা দীপেন্দুর নেতৃত্বে সন্তোষ ট্রফিতে রানার্স আপ হয়েছে বাংলা দল। জাতীয় দল চ্যাম্পিয়ন হয়েছে তাঁর নেতৃত্বে। ২০০২ সালে প্রি অলিম্পিকে নেতৃত্ব দিয়েছেন। ইস্টবেঙ্গল-মোহনবাগান-মহামেডানের হয়ে মাঠ কাঁপিয়েছেন বহু বার। ‘নিউ বাণী সঙ্ঘ’ গড়ে বসিরহাটে ছোট ছেলেদের ফুটবল খেলা শেখান দীপেন্দু। যা তাঁকে বাড়তি পরিচিতি দিয়েছে এলাকায়।

এ হেন বত্রিশ বছরের যুবকটিকে তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যখন বেছে নিয়েছিলেন বসিরহাট দক্ষিণ কেন্দ্রের প্রার্থী হিসাবে, তখন দলের নিচু তলার কিছু অংশ সেই সিদ্ধান্তে খুশি হতে পারেনি। মিশুকে স্বভাবের যুবকটিকে ‘কাছের মানুষ’ হিসাবে পছন্দের তালিকায় রাখলেও ‘রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব’ হিসাবে মেনে নিতে তাঁদের প্রাথমিক আপত্তি ছিল। কিন্তু ফুটবলার দীপেন্দুর জনপ্রিয়তাকে কাজে লাগাতে চেয়েছিলেন নেত্রী।

শনিবার সকালে বাবা-মাকে প্রণাম সেরে বাড়ি থেকে বেরিয়েছিলেন দীপেন্দু। তারপর সারা দিন গাড়ি নিয়ে টইটই। বললেন, “প্রচারে কোনও দিন থেকে গাড়িতে এসি চালাইনি। কিন্তু আজ এত গরম, আবার হঠাৎ হঠাৎ বৃষ্টি। এসি থেকে বাইরে বেরোলেই অসুস্থ হয়ে পড়তাম। খেলোয়াড় তো, ফিটনেসের ব্যাপারটা বুঝি।”

ময়দানের লড়াইয়ের সঙ্গে তফাত কী বুঝছেন ভোটে?

টেনশন করা ধাতে নেই দীপেন্দুর। মুচকি হেসে বললেন, “অন্য বার নৈহাটি বকুলতলা প্রাথমিক স্কুলের বুথে ভোট দিতে যাই সাইকেলে চেপে। এ বার গেলাম গাড়িতে!”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE