ছবি: সংগৃহীত।
পশ্চিমবঙ্গে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে যুদ্ধের অন্যতম কৌশল হিসেবে সংখ্যালঘু উন্নয়নের পথে হাঁটতে চাইছে বিজেপি। মমতার প্রতিশ্রুতি সত্ত্বেও যে সব প্রকল্প বাস্তবায়িত হয়নি, সেগুলিতে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টা শুরু হয়েছে নরেন্দ্র মোদী সরকার তথা বিজেপি নেতৃত্বের তরফে। তারই একটি— ফুরফুরা শরিফে রেল যোগাযোগ।
ফুরফুরা শরিফকে রেলপথে জোড়ার দীর্ঘদিনের দাবিটি নিয়ে পীরজাদা ত্বহা সিদ্দিকীর সঙ্গে সম্প্রতি দীর্ঘক্ষণ কথা হয় কেন্দ্রীয় মন্ত্রী তথা বিজেপির রাজ্য নেতা সুরেন্দ্র সিংহ অহলুওয়ালিয়ার। রেলমন্ত্রী হিসেবে ২০১০ সালে ডানকুনি থেকে ফুরফুরা শরিফ— সাড়ে আঠারো কিলোমিটার রেললাইনের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন মমতা। পরবর্তী কালে তৃণমূলের অন্য দুই রেলমন্ত্রী দীনেশ ত্রিবেদী এবং মুকুল রায়ও একই প্রতিশ্রুতি দিয়ে এসেছিলেন। কিন্তু কাজের কাজ কিছু হয়নি। এই পরিস্থিতিতে দাঁড়িয়ে সাহায্যের হাত বাড়াতে প্রস্তুত বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। অহলুওয়ালিয়া বলেন, ‘‘কেউ আমার কাছে সহযোগিতা চাইলে সাহায্য করতে আপত্তি কোথায়?” সূত্রের খবর, প্রস্তাবিত ওই প্রকল্প নিয়ে প্রথমে তাঁর কাছে বিস্তারিত তথ্য পাঠাতে ত্বহাকে অনুরোধ করেছেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী। তার পরে প্রয়োজনে রেলমন্ত্রী সুরেশ প্রভুর সঙ্গেও ত্বহার কথা বলিয়ে দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন তিনি। বিজেপি নেতারা ইতিমধ্যেই বলতে শুরু করেছেন, পশ্চিমবঙ্গে মুসলিমরা যে মমতার আমলেও বঞ্চিত, সেই কথা তাঁরা এ বার প্রচারে তুলে ধরবেন৷ এ-ও বলবেন, উন্নয়নের মূল স্রোতে ফিরিয়ে আনতে না-পারলে সংখ্যালঘুদের অবস্থার পরিবর্তন হবে না৷ ত্বহার কথায়, ‘‘মমতা সংখ্যালঘুদের উন্নয়নের জন্য যতটা গর্জাচ্ছেন, ততটা বর্ষাচ্ছেন না। ফুরফুরা শরিফকে রেললাইনে জোড়ার কাজটিও আমার মনে হয় রাজনৈতিক কারণে ইচ্ছে করে ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে। শুধু প্রতিশ্রুতি দেওয়া হচ্ছে।’’ রেলমন্ত্রী থাকাকালীন মমতা প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, এই প্রকল্পের জন্য জমিদাতাদের পরিবার-পিছু এক জনকে চাকরি দেওয়া হবে। কিন্তু রেল মন্ত্রক লাইন পাতার জমি অধিগ্রহণ করতে গিয়ে দেখে, ওই ঘোষণার আগে যে জমির মালিক ছিলেন এক জন, সেই জমি ভেঙে গিয়েছে একাধিক মালিকানায়। একই পরিবার থেকে একাধিক জমির মালিক তৈরি হয়েছে! ত্বহার মতে, মমতা ওই ঘোষণা করে সমস্যাটিকে আরও জটিল করে দিয়েছেন। এখন রেলের পক্ষেও বিষয়টি কঠিন হয়ে গিয়েছে। সম্প্রতি মমতার কাজের সমালোচনা করেও সভা করছেন ফুরফুরার পীরজাদা। রাজনৈতিক সূত্রের মতে, এই পরিস্থিতিকে কাজে লাগিয়ে উন্নয়নের মোড়কে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মন পাওয়ার চেষ্টা করছে বিজেপি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy