Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪

স্যানিটারি ন্যাপকিন বানাবেন জেলের মেয়েরা

জলপাইগুড়ি কেন্দ্রীয় সংশোধনাগারে ইতিমধ্যেই বেকারি চালু হয়েছে৷ পোশাক বা কাঠের আসবাব তৈরির কর্মশালাও হয়েছে।

ফাইল চিত্র।

ফাইল চিত্র।

পার্থ চক্রবর্তী
জলপাইগুড়ি শেষ আপডেট: ১১ জানুয়ারি ২০১৮ ০৪:১৭
Share: Save:

কেউ যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত। কেউ ততটা না হলেও দীর্ঘ মেয়াদে জেল খাটছেন। জলপাইগুড়ি কেন্দ্রীয় সংশোধনাগারের এমনই কুড়ি জন মহিলা বন্দি এ বার স্যানিটারি ন্যাপকিন তৈরি করবেন, জেলা প্রশাসন ও কারা দফতরের তত্ত্বাবধানে। প্রশাসন সূত্রে বক্তব্য, জেলার প্রান্তিক বহু এলাকাতেই স্যানিটারি ন্যাপকিনের অভাব রয়েছে। সেই ঘাটতি পূরণ করতে বিশেষ করে স্কুল, কলেজ ও হোমগুলিতে এই ন্যাপকিন সরবরাহ করা হবে। বিলোনো হবে জেলের মধ্যেও। খোলা বাজারেও বিক্রি করা হবে।

জলপাইগুড়ি কেন্দ্রীয় সংশোধনাগারে ইতিমধ্যেই বেকারি চালু হয়েছে৷ পোশাক বা কাঠের আসবাব তৈরির কর্মশালাও হয়েছে। এমনকী, তেল পরিশোধন যন্ত্রও বসেছে। এ বারে স্যানিটারি ন্যাপকিন তৈরি করতে স্বনির্ভর গোষ্ঠী গঠনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। প্রশাসন সূত্রে খবর, মাসখানেক আগে এই ভাবনা নিয়ে তাঁরা প্রথম আলোচনা শুরু করেন। তার পরে কথা বলেন কারা দফতরের শীর্ষকর্তাদের সঙ্গে।

কেন স্যানিটারি ন্যাপকিন? জেলা প্রশাসনের এক শীর্ষকর্তা জানান, মেয়েদের স্বাস্থ্যের কথা মাথায় রেখে রাজ্যের অনেক জায়গাতেই স্কুল-কলেজে স্যানিটারি ন্যাপকিনের ভেন্ডিং মেশিন বসানো হয়েছে। সম্পূর্ণা প্রকল্পে স্বনির্ভর গোষ্ঠী গড়ে এই ন্যাপকিন তৈরির কাজ আগেও অন্যত্র হয়েছে। এমনকী, জেলের আবাসিকদের দিয়েও স্যানিটারি ন্যাপকিন তৈরির কাজ দু’একটি জায়গায় শুরু হয়েছে। তবে চাহিদা অনুযায়ী সব মিলিয়ে জোগান অত্যন্ত কম। জলপাইগুড়ি সেন্ট্রাল জেলের আবাসিকরা কাজ শুরু করলে কিছুটা হলেও চাহিদা মিটবে।

জেল সুপার শুভব্রত চট্টোপাধ্যায় জানান, উত্তরবঙ্গে এমন প্রচেষ্টা এই প্রথম। তিনি বলেন, ‘‘এই জেলার বহু প্রান্তিক এলাকার মেয়েদের হাতে স্যানিটারি ন্যাপকিন পৌঁছয়ই না। আমাদের জেলে এর উৎপাদন শুরু হলে তা স্কুল-কলেজের মাধ্যমে প্রান্তিক এলাকাতেও পাঠানো যেতে পারে।’’ তাঁর কথায় সায় দিয়েছেন জেলা প্রশাসনেরও এক শীর্ষকর্তা। পাশাপাশি জেলাশাসক রচনা ভকত বলেন, ‘‘বিভিন্ন হোমের মহিলারা যদি স্বনির্ভর গোষ্ঠী গড়ে নানান জিনিস গড়তে পারেন, তা হলে সংশোধনাগারে থাকা মহিলা বন্দিরাই বা কেন পারবেন না? সেই ভাবনা থেকেই আমাদের এই পরিকল্পনা৷’’

প্রশাসন সূত্রে খবর, ২০ জন মহিলা বন্দিকে বেছে নেওয়া হয়েছে। তাঁদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থাও হচ্ছে। শীঘ্রই তাঁদের নামে ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট খোলা হবে। স্বনির্ভর গোষ্ঠী তৈরি হবে। কেনা হবে ন্যাপকিন তৈরির যন্ত্রও। সব মিলিয়ে প্রকল্পটির জন্য শুরুতে লাগবে ছ’লক্ষ টাকা। প্রশাসনের এক কর্তার কথায়, সব কিছু ঠিক থাকলে মাস তিনেকের মধ্যে এই গোষ্ঠীর তৈরি স্যানিটারি ন্যাপকিন বাজারে আসবে। স্কুল, কলেজ, হোম বা জেলে বিনে পয়সায় এই ন্যাপকিন দেওয়া হবে বলেই আপাতত ঠিক হয়েছে। বাকি বিক্রি হবে বাজারে। জেলাশাসকের কথায়, এতে সংশোধনাগারের মেয়েরা স্বনির্ভরও হবেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE