নতুন ২৭টি সিসিটিভি (ক্লোজড সার্কিট) ক্যামেরা এবং পাঁচটি ‘সাউন্ড বক্স’। সোমবার বামপন্থী ছাত্র সংগঠন এবং অরাজনৈতিক ‘মঞ্চ’-এর স্মারকলিপি জমা দেওয়ার আগে নিরাপত্তায় এই কড়াকড়ির জেরে বিতর্ক থিতোল না বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ে।
এসএফআইয়ের কটাক্ষ, গত মঙ্গলবার তাদের কর্মসূচিতে পুলিশের ‘হামলা’র ছবি বিশ্ববিদ্যালয়ের সিটিটিভি-তে আসেনি। শুক্রবার পরীক্ষা পিছনোর দাবিতে আন্দোলনকারীদের উপরে তৃণমূলপন্থী বহিরাগতদের ‘চড়াও’ হওয়ার ছবি ধরা পড়েছে সংবাদমাধ্যমের ক্যামেরায়। সংগঠনের রাজ্য সভানেত্রী মধুজা সেন রায়ের কথায়, ‘‘যখন পুলিশ আর তৃণমূলের লোকজন মারল তখন সিসিটিভি নেই! আর এ দিন আমাদের কর্মসূচির ঠিক আগেই সিসিটিভি এনে বসিয়ে দেওয়া হল! এতে কি বুঝব?’’ তিনি মনে করিয়ে দিয়েছেন, পড়ুয়ারা অরাজনৈতিক ভাবে আন্দোলন চলাকালীন পরীক্ষা পিছনো হয়নি। তৃণমূল ছাত্র পরিষদ নেতৃত্ব উপাচার্যকে ওই দাবিতে স্মারকলিপি দিতেই দশ দিন পিছিয়ে যায় পরীক্ষা।
বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য স্মৃতিকুমার সরকার অবশ্য বলেন, ‘‘সাম্প্রতিক ঘটনার প্রেক্ষিতে প্রস্তুতি নিয়েছি। সিসিটিভিতে ছবি উঠবে আর সাউন্ড বক্সে আন্দোলনকারীদের কাছে আমাদের বক্তব্য ঠিকঠাক পৌঁছে দেওয়া যাবে।’’ বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রের দাবি, এ দিন সকালে অরাজনৈতিক মঞ্চ ‘হোক প্রতিবাদ’ এবং দুপুরে সাড়ে ৩টে নাগাদ ডিওয়াইএফ এবং এসএফআইয়ের স্মারকলিপি দেওয়ার কর্মসূচি ছিল। ভিড় হতে পারে আঁচ করে শনিবারই বিশ্ববিদ্যালয়ের তরফে চিঠি দিয়ে পুলিশ চাওয়া হয়েছিল। ব্যবস্থা করা হয়েছিল নতুন ক্যামেরা ও সাউন্ডবক্সের।
আপাতত রাজবাটি চত্বরের উত্তর ফটক থেকে শুরু করে কলেজ পরিদর্শকের ভবন, বিক্রয়কেন্দ্র, পরীক্ষা নিয়ামকের দফতর, চত্বরের ভিতরের বাগান— সর্বত্রই ‘সিসিটিভি’ লাগানো হয়েছে। ‘সাউন্ড বক্স’ বসেছে চত্বরের ডাকঘরের ছাদে ও রাজবাটির মূল ভবনের নীচে।
কয়েকদিন ধরে স্নাতক তৃতীয় বর্ষের পরীক্ষা পিছনো ও দ্বিতীয় বর্ষের মার্কশিট দেওয়ার দাবিতে বিক্ষোভ দেখাচ্ছিলেন পড়ুয়ারা। গত সোমবার ওই দাবিতে ভারপ্রাপ্ত পরীক্ষা নিয়ামককে ঘেরাও করা হয়। মাঝের দিনগুলিতে দু’টি ‘হামলা’র অভিযোগ ওঠার প্রতিবাদে ছিল এ দিনের স্মারকলিপি-কর্মসূচি।
বস্তুত, বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়াশোনা, পরীক্ষা ব্যবস্থা ও ফলপ্রকাশ নিয়ে সমস্যা যে রয়েছে, সে কথা মেনে নিয়েছেন রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ও। এ দিন নবান্নে তিনি জানান, বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের সাম্প্রতিক ঘটনাবলীর রিপোর্ট শিক্ষা দফতর পেয়েছে। পার্থবাবুর কথায়, ‘‘কিছু পড়ুয়া অভিযোগ করছেন যে পঠনপাঠন ঠিকমতো হচ্ছে না। ঠিক সময়ে ফলপ্রকাশ বা পরীক্ষা নেওয়া হচ্ছে না। এ নিয়ে ছাত্রছাত্রীরা যে আন্দোলন করছেন, তা একেবারে ঠিক।’’ তবে তিনি জুড়ছেন, ‘‘কিছু ছাত্র বর্ধমানে ভাঙচুর করেছে, অরাজক অবস্থা তৈরি করেছে। ভাঙচুরে অভিযুক্তদের রাজনৈতিক রং না দেখে গ্রেফতার করতে হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy