Advertisement
১৬ এপ্রিল ২০২৪

সিউড়িতে প্রাপ্য এত দিনে পেলেন জবকার্ডধারীরা

কোমা পঞ্চায়েতের চাতরা গ্রামে মাসআটেক আগে ১০০ দিনের কাজে নালা সংস্কার হয়েছিল। প্রকল্পে ১৪১ জন কাজ করলেও এপ্রিল মাসে কাজের টাকা ঢুকেছিল ৩৬ জন জবকার্ডধারীর ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে। কেন?

সিউড়ির ২ নং ব্লকের চাতরা গ্রামে খাতায় সই করে টাকা নিচ্ছেন এক মহিলা। —নিজস্ব চিত্র।

সিউড়ির ২ নং ব্লকের চাতরা গ্রামে খাতায় সই করে টাকা নিচ্ছেন এক মহিলা। —নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
সিউড়ি শেষ আপডেট: ২৬ জুন ২০১৯ ০১:৪৪
Share: Save:

‘চালাকি’ করে গড় কর্মদিবস বাড়াতে গিয়ে বিপাকে সিউড়ি ২ ব্লকের কোমা পঞ্চায়েত। মঙ্গলবার সকালে রটে যায় পঞ্চায়েতের ‘বকলমে’ একশো দিনের কাজের টাকা ফেরত দিচ্ছেন এলাকার তৃণমূল বুথ সভাপতি ত্রিলোচন মুখোপাধ্যায়। মুহূর্তে ভিড় জমে। এ ভাবে হাতে-হাতে টাকা ফেরত দেওয়ায় জল্পনা ছড়ায় ওই নেতা ‘কাটমানি’ ফিরিয়ে দিচ্ছেন। পরে ‘প্রকৃত’ বিষয়টি সামনে এলেও তৈরি হয়েছে অন্য প্রশ্ন।

কোমা পঞ্চায়েতের চাতরা গ্রামে মাস আটেক আগে ১০০ দিনের কাজে নালা সংস্কার হয়েছিল। প্রকল্পে ১৪১ জন কাজ করলেও এপ্রিল মাসে কাজের টাকা ঢুকেছিল ৩৬ জন জবকার্ডধারীর ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে। কেন? পঞ্চায়েতের বক্তব্য: ‘৪-ক’ ফর্ম পূরণ করে ১০০ দিনের প্রকল্পে কাজ মেলে। কিন্তু, সেই আবেদন কম হয়। এ দিকে, জেলা প্রশাসনের উঁচু মহল থেকে কর্মদিবসের গড় বাড়ানোর চাপ থাকে। তৃণমূলের এক নেতার কথায়, ‘‘কর্মদিবস বাড়াতে গিয়েই ৩৬টি এমন অ্যাকাউন্ট বাছা হয়েছিল যাঁরা আগে কাজ পেয়েছেন। পরে বরাদ্দ টাকা ১৪১ জনের মধ্যে ভাগাভাগি করে দেওয়া হবে ঠিক হয়েছিল।’’

অভিযোগ, সেই টাকা এত দিন নিজের কাছে রেখে দিয়েছিলেন তৃণমূলের স্থানীয় বুথ সভাপতি ত্রিলোচন মুখোপাধ্যায়। জবকার্ডধারীদের কারও অভিযোগ, প্রাপ্য টাকা চাইতে গেলে মিথ্যে মামলায় ফাঁসিয়ে দেওয়ার হুমকি দেওয়া হয়েছিল। এ দিকে, লোকসভা ভোটের নিরিখে ওই এলাকায় পিছিয়ে পড়া এবং কাটমানি-কাণ্ডের জেরে টাকা ফেরতের দাবি জোরালো হতে সেই টাকা এ দিন ফেরানো হচ্ছিল। ১৪১ জন জবকার্ডধারীকে ১ হাজার ৬০০ টাকা করে ফেরত দেন ত্রিলোচনবাবু। তাঁর দাবি, ‘‘নির্বাচনের আগে-পরের রাজনৈতিক অস্থিরতায় টাকা দিতে দেরি হয়েছে। এটা কাটমানি নয়। কাউকে হুমকিও দেওয়া হয়নি।’’ বিজেপির জেলা সভাপতি রামকৃষ্ণ রায়ের কটাক্ষ, ‘‘দুর্নীতি করার পাশাপাশি শাসকদলের নেতারাই আসলে যে পঞ্চায়েত চালান, এই ঘটনায় সেটাও সামনে এসে গেল।’’

বিডিও (সিউড়ি ২) শেখ আবদুল্লা বিষয়টির সত্যতা মেনেছেন। তিনি বলেন, ‘‘যেটুকু জেনেছি, কম জবকার্ড ব্যবহার করে কর্মদিবসের গড় বাড়াতে চেয়েছিল পঞ্চায়েত। তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’ এমজিএনআরইজিএ সেলের নোডাল অফিসার শুভঙ্কর ভট্টাচার্যের মতে, ‘‘কেউ ভাল করে পড়ে ভাল নম্বর পায়, কেউ চুরির আশ্রয় নেয়। এ ক্ষেত্রে দ্বিতীয়টাই হয়েছে মনে হচ্ছে।’’

তাঁর সংযোজন, ‘‘পরিষ্কার নির্দেশ থাকে, বেশি সংখ্যক পরিবারকে কাজ দিয়েই গড় বাড়াতে হবে। তেমনই পরিকল্পনা করুক পঞ্চায়েত।’’ তবে গড় বাড়াতে গিয়ে বহু পঞ্চায়েত এ পথের আশ্রয় নেয়, আড়ালে মেনেছেন বহু আধিকারিকই।

এবার শুধু খবর পড়া নয়, খবর দেখাও।সাবস্ক্রাইব করুনআমাদেরYouTube Channel - এ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

TMC BJP সিউড়ি Suri
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE