দুর্ঘটনা: শনিবার লালগড়ের ঝিটকায়। —নিজস্ব চিত্র
আদিবাসী সম্মেলন ছিল ঝাড়গ্রামের বেলপাহাড়িতে। বাস ভাড়া করে সেখানেই যাচ্ছিলেন পশ্চিম মেদিনীপুরের শালবনির জনা ষাটেক বাসিন্দা। পথে লালগড়ের ঝিটকায় নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে উল্টে গেল সেই বাস। তিন তিন বার পাল্টি খেয়ে পড়ল পাশের শুকনো নয়ানজুলিতে।
শনিবার দুপুর দেড়টা নাগাদ এই দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয়েছে ৬ জনের। কমবেশি জখম ৫২ জন। পুলিশ সূত্রে খবর, মৃতেরা হলেন বাসু কিস্কু (৩২), নেপাল হাঁসদা (৪২), শম্ভু সরেন (১৯), লক্ষ্মণ কিস্কু (৩৩), ভগীরথ বেসরা (৩৮) এবং নির্মল টুডু (৪০)। এর মধ্যে তিন জনের মৃত্যু হয়েছে বাসের নীচে চাপা পড়ে। গোড়ায় স্থানীয়রাই উদ্ধারকাজ শুরু করেন। পরে পৌঁছয় পুলিশ এবং সিআরপি। জখমদের মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে এনে ভর্তি করা হয়। কয়েকজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। মেডিক্যালে এসে জখমদের সঙ্গে দেখা করেন পশ্চিম মেদিনীপুরের পুলিশ সুপার অলোক রাজোরিয়া। আজ, রবিবার আহতদের দেখতে আসবেন বলে জানিয়েছেন তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়। পুলিশ জানিয়েছে, বাসের চালক পলাতক। তার খোঁজ চলছে।
দুর্ঘটনায় মৃত ও জখমদের সকলেই শালবনির বিষ্ণুপুরের বয়লা ও তার আশেপাশের এলাকার বাসিন্দা। বয়লা থেকে দুপুর সওয়া একটা নাগাদ বাসটি ছেড়েছিল। শালবনির ভীমপুর পেরিয়ে লালগড়ের ঝিটকা ঢোকার মুখে রাস্তায় একটি বাঁক রয়েছে। ওই বাঁক পেরনোর সময়ই বাসের চালক নিয়ন্ত্রণ হারান। পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে খবর, বাড়তি গতি আর বাসের মাথায় বহু যাত্রী থাকায় হতাহতের সংখ্যা বেড়েছে। বাসের যাত্রী বছর ছত্রিশের গোপীনাথ মুর্মু বলেন, “৬০-৬২ জন যাত্রীর মধ্যে জনা চল্লিশেক বাসের মধ্যে ছিলেন। বাকি জনা কুড়ি ছিলেন বাসের ছাদে।’’ জেলা পুলিশের এক কর্তা মানছেন, “বাসের ছাদে বেশ কয়েকজন ছিলেন। না হলে ঘটনা এত ভয়াবহ হত না। মৃতের সংখ্যা কমত।” স্থানীয় সূত্রে খবর, যে ৬ জনের মৃত্যু হয়েছে, তাঁদের বেশির ভাগই বাসের ছাদে ছিলেন।
জখম সুরেন সরেনের কথায়, “শুরু থেকেই বাসটি খুব জোরে যাচ্ছিল। কয়েকজন এত জোরে বাস চালাতে না করেছিলেন। চালক কথা শোনেননি।” আরেক জখম তারকনাথ মুর্মুর কথায়, “উল্টো দিক থেকে কোনও গাড়ি আসেনি। পিছন থেকে কোনও গাড়ি ধাক্কাও মারেনি। নিয়ন্ত্রণ হারিয়েই বাসটি উল্টে যায়।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy