Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

জাল সইয়ে গায়েব ৭ লক্ষ, ভুলের মাসুল গুনবে ব্যাঙ্ক

বছর দেড়েক আগে উত্তর ২৪ পরগনার কামারহাটির ঘটনা। স্বর্ণশিল্পী সন্দীপকুমার শ-এর অ্যাকাউন্ট রয়েছে ডানলপে একটি ব্যাঙ্কের শাখায়। সেখান থেকেই জাল সই করে তাঁর টাকা তোলা হয়েছিল। ক্রেতা সুরক্ষা আদালতের বিচারপতি জানান, ওই ঘটনায় প্রচণ্ড হয়রানি হয়েছে সন্দীপবাবুর।

অনুপ চট্টোপাধ্যায়
শেষ আপডেট: ০৩ অক্টোবর ২০১৭ ০১:৫৪
Share: Save:

ব্যাঙ্কের চেক এক জনের নামে। তাতে ‘জাল’ সই করে অন্য এক জন প্রায় ৭ লক্ষ টাকা তুলে নিয়েছে। ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ সই যাচাই না করে কেন অন্যের হাতে টাকা তুলে দিয়েছে— এই প্রশ্ন তুলে ক্রেতাসুরক্ষা আদালতে অভিযোগ করেছিলেন এক ব্যক্তি। অভিযোগের সত্যতা খতিয়ে দেখে সম্প্রতি ক্রেতা সুরক্ষা আদালত গ্রাহকের পক্ষে রায় দিয়েছে। সংশ্লিষ্ট ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষকে আসল গ্রাহককে পুরো টাকা ফেরত দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে আদালত।

বছর দেড়েক আগে উত্তর ২৪ পরগনার কামারহাটির ঘটনা। স্বর্ণশিল্পী সন্দীপকুমার শ-এর অ্যাকাউন্ট রয়েছে ডানলপে একটি ব্যাঙ্কের শাখায়। সেখান থেকেই জাল সই করে তাঁর টাকা তোলা হয়েছিল। ক্রেতা সুরক্ষা আদালতের বিচারপতি জানান, ওই ঘটনায় প্রচণ্ড হয়রানি হয়েছে সন্দীপবাবুর। ব্যাঙ্ক কতৃর্পক্ষকে তার জন্য অতিরিক্ত ১০ হাজার এবং মামলার খরচের জন্য আরও ৩ হাজার টাকা দিতে হবে। ব্যাঙ্ক কতৃর্পক্ষ এ বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখছেন।

সন্দীপবাবু জানান, কয়েক বছর ধরে কামারহাটিতে এক আত্মীয়ের সোনার দোকানে কাজ করতেন তিনি। থাকতেন ওই আত্মীয়ের বাড়িতেই। আর তা থেকে যা পারিশ্রমিক পেয়েছেন তার বেশির ভাগটাই ডানলপের ওই ব্যাঙ্কে রেখেছিলেন। ব্যাঙ্কের সব নথিপত্র আত্মীয়ের বাড়িতেই থাকত। এক সময়ে টাকা তুলতে গিয়ে জানতে পারেন ৭ লক্ষ টাকা নেই। পরে ব্যাঙ্কে খোঁজ করতে গেলে জানানো হয়, ওই টাকা তুলে নেওয়া হয়েছে। কিন্তু তিনি তো সই করেননি, তা হলে ওই টাকা তোলা হল কী ভাবে? প্রথমে পুলিশে ও পরে সিআইডি-র কাছেও অভিযোগ জানান সন্দীপবাবু। তাঁর সন্দেহ ছিল, যে বাড়িতে তিনি থাকতেন, সেই বাড়িরই কেউ এই কাজ করেছে। সন্দীপবাবু বলেন, ‘‘সিআইডি তদন্ত করে রিপোর্ট দেয় জাল সই করে টাকা তোলা হয়েছে। চেকের সইয়ের সঙ্গে আমার স্বাক্ষরের কোনও মিল নেই।’’ ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে গাফিলতির অভিযোগ তুলে সিআইডির রিপোর্ট-সহ বারাসতে ক্রেতাসুরক্ষা আদালতে ২০১৬ সালের মার্চে অভিযোগ জানান তিনি। গত ২১ সেপ্টেম্বর তার রায়ে আদালত জানিয়ে দিয়েছে, ওই ঘটনায় ব্যাঙ্কের পরিষেবায় গাফিলতির প্রমাণ মিলেছে। তাই আসল গ্রাহককে তাঁর টাকা ফেরতের দায় নিতে হবে ব্যাঙ্ক কতৃর্পক্ষকেই। ৪৫ দিনের মধ্যে ওই টাকা ফেরত দিতে হবে। সময়ে না দিলে ওই টাকার উপরে ৮ শতাংশ হারে সুদ-সহ আসল মেটাতে হবে। ক্রেতা সুরক্ষা আদালতের রায়ে খুশি হলেও টাকা হাতে না পাওয়া পর্যন্ত স্বস্তি পাচ্ছেন না সন্দীপবাবু।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Money Fake Signature Bank Cheque Signature
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE