উদ্যাপন: অনুষ্ঠানের সূচনায় রামকৃষ্ণ মঠ ও রামকৃষ্ণ মিশনের প্রেসিডেন্ট স্বামী স্মরণানন্দ এবং অন্য সন্ন্যাসীরা । শনিবার। ছবি: সজল চট্টোপাধ্যায়
দুর্ভিক্ষের ছোবল তখন বাংলার প্রতিটি জনপদে। খাবার জোটাতে না পারা বাবা-মা তখন সন্তানদের রাস্তায় ফেলে রেখে যেতেন। এমনই এক সময়ে কলকাতা থেকে ২০ কিলোমিটার দূরের গ্রাম রহড়ায় এক অনাথকে রাস্তায় পেলেন রামকৃষ্ণ মঠ ও মিশনের সন্ন্যাসী স্বামী পুণ্যানন্দ। সালটা ছিল ১৯৪৪।
রহড়ায় তখন বসুমতী পত্রিকার ছাপাখানা ও গুদাম ছিল। রহড়া এবং তার আশপাশে এমন বেশ কয়েক জন অনাথকে খুঁজে পেলেন তিনি। পত্রিকার প্রকাশক সতীশচন্দ্র মুখোপাধ্যায় গুদামের পাশের একটি ছোট একতলা বাড়ি এবং সংলগ্ন জমি দান করলেন তাঁকে। ৩৭ জন অনাথ বালককে নিয়ে সেই বাড়িতেই পথ চলা শুরু করল রহড়ার রামকৃষ্ণ মিশন বালকাশ্রম। সাড়ে সাত দশক কাটিয়ে শনিবার ৭৫ বছর পূর্ণ করল এই মিশন।
এ দিন ৭৫ বর্ষ পূর্তি অনুষ্ঠানের সূচনা করলেন রামকৃষ্ণ মঠ ও রামকৃষ্ণ মিশনের প্রেসিডেন্ট স্বামী স্মরণানন্দ। মঠ ও মিশনের বর্তমান সম্পাদক স্বামী সুবীরানন্দ ছিলেন রহড়া রামকৃষ্ণ মিশন কলেজের ছাত্র। কলেজের পাঠ শেষ করেই তিনি সন্ন্যাস নেন। এ দিন তিনি বলেন, ‘‘স্বামী পুণ্যানন্দের স্বপ্ন ছিল একটি প্রতিষ্ঠানেই কেজি
(কিন্ডারগার্টেন) থেকে পিজি-র (স্নাতকোত্তর) শিক্ষা দান হবে। তাঁর সেই স্বপ্ন সার্থক হয়েছে।’’
অনাথ শিশুদের নিয়ে আশ্রম চালু করার পরেই পূণ্যানন্দ বুঝতে পারেন, তাঁদের শিক্ষাদান জরুরি। শুরু হয় প্রাথমিক স্কুল। সেই ৩৭ জন অনাথ শিশুর মধ্যে ছিলেন বিষ্ণুপদ হালদার। পরবর্তীকালে যিনি লন্ডনের রয়্যাল কলেজ থেকে ডাক্তারি পাশ করেন। এই মিশনেই পরে উচ্চ বিদ্যালয় চালু হয়। তারও পরে বিবেকানন্দ সেন্টিনারি কলেজ।
বর্তমানে এই মিশনে শিক্ষক শিক্ষণ কলেজ থেকে শুরু করে রয়েছে বেশ কয়েকটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। রয়ে গিয়েছে অনাথ শিশুদের আশ্রমটিও। মিশন কর্তৃপক্ষ জানান, সেখানে শিক্ষা পাচ্ছে ৬০০ অনাথ শিশু। এই প্রতিষ্ঠানের ছাত্রেরা বর্তমানে বিশ্বের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে কর্মরত। মিশন কর্তৃপক্ষ জানান, আগামী এক বছর ধরে চলবে এই অনুষ্ঠান।a
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy